সেই ১৯৯০ এর পর আর নির্বাচন হয়নি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ, চাকসুতে। এখন কোন কার্যক্রম নেই বললে চলে ছাত্র সংসদটির। শুধু তিনতলা একটি ভবন দাঁড়িয়ে আছে ক্যাম্পাসে। নিচ তলায় খাবারের ব্যবস্থা আর কোন কোন সময় ভবনটি কমিউনিটি সেন্টার হিসবে ভাড়া দেয়া হয়। চাকসুর এই নীরবতা ভাঙতে অভিনব এক প্রতিবাদের আশ্রয় নিয়েছেন কয়েকজন শিক্ষার্থী। প্রতিবাদ হিসেবে ভবনটির নাম পাল্টে ভাতের হোটেল রেখেছেন তারা। দীর্ঘদিন ধরে কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদটির নির্বাচন না দেয়া এবং সংসদটিকে সম্পূর্ণ অকার্যকর করায় এই প্রতিবাদের আশ্রয় নিয়েছেন বলে জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। পরে ব্যানারটি প্রশাসন সরিয়ে নিলেও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এর ছবি ছড়িয়ে পড়ায় ব্যাপক আলোচনার জন্ম দেয়।
জানা যায়, কয়েকজন শিক্ষার্থী গতকাল সোমবার দুপুর ১২টার দিকে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (চাকসু) ভবনের নামফলকের ওপর ‘জোবরা ভাতের হোটেল ও কমিউনিটি সেন্টার’ লেখা ব্যানার টাঙায়। পাঁচ ফুট দৈর্ঘ্য আর এক ফুট প্রস্থের এই ব্যানারের উপরে ‘জোবরা ভাতের হোটেল ও কমিউনিটি সেন্টার’ আর নিচে ছোট করে লেখা, ‘মুলার তরকারি দিয়ে ভাত খাওয়া যায়।’ তবে অল্প কিছুক্ষণ পরই সেটি খুলে নিয়ে যায় কে বা কারা। শিক্ষার্থীদের দাবি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ব্যানারটি সরিয়ে ফেলেছে। কিন্তু ততক্ষণে এই ব্যানারের ছবি ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে।
শিক্ষার্থীরা বলছেন, চট্টগ্রামের হাটহাজারীর জোবরা গ্রামে বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থান। সে কারণে বিদ্রুপ করে সে গ্রামের নামটিই লেখা হয় ব্যানারে। দীর্ঘদিন নির্বাচন না হওয়ায়, চাকসুর মতো একটি প্রতিষ্ঠান যে ভাতের হোটেলে পরিণত হয়েছে, সেদিকেই ইঙ্গিত করা হয়েছে এই অভিনব প্রতিবাদে। শিক্ষার্থীরা জানান, ১৯৯০ সালের পর আর চাকসু নির্বাচন হয়নি। কার্যালয়টি এখন কেন্টিন আর কমিউনিটি সেন্টার হিসেবেই ব্যবহার হচ্ছে। গণ-অভ্যুত্থানের পরবর্তী সময়ে শিক্ষার্থীরা বারবার চাকসু নির্বাচনের দাবি জানালেও প্রশাসন গড়িমসি করেছে। এ কারণেই এই অভিনব প্রতিবাদ বলে জানান নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষার্থী। অভিনব এই প্রতিবাদের অন্যতম কারিগর আবীর বিন জাবেদ গণমাধ্যমকে জানান এটা যে ছাত্র সংসদের কার্যালয়, তা বোঝার কোনো উপায় নেই। বারবার চাকসু নির্বাচন চাওয়ার পরও প্রশাসন গড়িমসি করছে। প্রশাসন যদি লজ্জিত হয় তাহলে তারা দ্রুত চাকসু নির্বাচনের আয়োজন করবে।