যেসব আমলে রয়েছে হজের সাওয়াব | মতামত নিউজ

যেসব আমলে রয়েছে হজের সাওয়াব

ফরজ নামাজের জন্য মসজিদের উদ্দেশে বের হওয়া। হজরত আবু উমামা (রা.) বর্ণনা করেন, নবী কারীম (সা.) বলেছে, যে ব্যক্তি পবিত্র অবস্থায় ফরজ নামাজের উদ্দেশ্যে নিজের ঘর থেকে বের হয় সে হজ আদায়কারীর মত সওয়াব লাভ করে। আর যে ব্যক্তি শুধু পূর্বাহ্নের নামাজ (চাশতের নামাজ) আদায়ের উদ্দেশ্যে কষ্ট করে মসজিদে যায়, সে ওমরা আদায়কারীর মত সওয়াব লাভ করে।

#হজ #ইসলাম #সাওয়াব

হজের মৌসুম শেষ হয়েছে। মহান আল্লাহ যাদেরকে হজ করার তাওফিক দিয়েছেন, সন্দেহাতীতভাবে তারা সৌভাগ্যবান। অন্যদিকে এই দুনিয়াতে আল্লাহর বহু বান্দা বান্দি রয়েছেন যারা হজ ও ওমরা করার জন্য অন্তরে প্রচণ্ড আগ্রহ ধারন করেন, অথচ হজ অথবা ওমরা করার তাওফিক তাদের হয়নি।

আজ আমরা সেসব ভাই-বোনদের জন্য এমন কিছু আমলের কথা বলবো, যে আমলগুলোর মাধ্যমে মহান আল্লাহ হজ এবং ওমরার সমান সাওয়াব দান করেন। রাসুল (সা.)-এর হাদীস থেকে সেরকম কিছু আমলের কথা উল্লেখ করছি:

১. ফরজ নামাজের জন্য মসজিদের উদ্দেশে বের হওয়া। হজরত আবু উমামা (রা.) বর্ণনা করেন, নবী কারীম (সা.) বলেছে, যে ব্যক্তি পবিত্র অবস্থায় ফরজ নামাজের উদ্দেশ্যে নিজের ঘর থেকে বের হয় সে হজ আদায়কারীর মত সওয়াব লাভ করে। আর যে ব্যক্তি শুধু পূর্বাহ্নের নামাজ (চাশতের নামাজ) আদায়ের উদ্দেশ্যে কষ্ট করে মসজিদে যায়, সে ওমরা আদায়কারীর মত সওয়াব লাভ করে। (সুনানে আবু দাউদ : ৫৫৮)

২. পিতা-মাতার খেদমত করার মাধ্যমে। আনাস (রা.) বলেন, এক ব্যক্তি নবী কারীম (সা.)-এর খেদমতে এসে বলল, আমার জিহাদ করতে খুব আগ্রহ, কিন্তু সামর্থ্য নেই। নবী কারীম (সা.) বললেন, তোমার মা-বাবা দুইজনের কেউ জীবিত আছেন কি? বলল, আমার মা জীবিত আছেন। নবীজী (সা.) বললেন, তাহলে মায়ের সেবা করে আল্লাহর সাথে সুন্দর সম্পর্ক স্থাপন কর। এটা যদি করতে পার এবং তোমার মা সন্তুষ্ট থাকেন তবে তুমি হজ, ওমরা ও জিহাদের সওয়াব পেয়ে যাবে। সুতরাং আল্লাহকে ভয় কর এবং মায়ের সেবা কর। (মুসনাদে আবু ইয়ালা: ২৭৬০)

৩. পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের পর তাসবীহ আদায় করা। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) বর্ণনা করেন, দরিদ্র সাহাবিরা নবীজির নিকট এসে আবেদন করল, ধনী সাহাবিরা উচ্চ মর্যাদা এবং চিরস্থায়ী নেয়ামত নিয়ে যাচ্ছেন! আমরা নামাজ পড়ি, তারাও পড়েন! আমরা রোজা রাখি, তারাও রাখেন! উপরন্তু তাদের রয়েছে অতিরিক্ত সম্পদ। ফলে তারা হজ করেন, ওমরাহ করেন, জিহাদ করেন এবং দান-সদকা করেন! (আমরা এসব করতে পারি না।) নবীজী তাদেরকে বললেন, আমি কি তোমাদের এমন একটি আমল শিখিয়ে দেব না, যা করতে পারলে তোমরা অগ্রগামীদের স্তরে পৌঁছে যাবে এবং যারা তোমাদের পেছনে তারা তোমাদের স্তরে পৌঁছতে পারবে না এবং তোমরা হবে বর্তমান পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ মানব। তবে কেউ এই আমল করলে সেটা ভিন্ন বিষয়। তোমরা প্রত্যেক নামাজের পর তেত্রিশ বার সুবহানাল্লাহ, তেত্রিশ বার আলহামদু লিল্লাহ, তেত্রিশ বার আল্লাহু আকবার পাঠ করবে তাহলেই এ ফজিলত লাভ করবে। (সহিহ বুখারি: ৮৪৩)

৪. ফজর নামাজের পর সূযোর্দয় পর্যন্ত মসজিদে বসে জিকির করতে থাকা, এবং সূর্যোদয়ের পর দুই রাকাত নামাজ পড়া। হজরত আবু উমামা আল বাহেলি (রা.) থেকে বর্ণিত, নবীজী (সা.) ইরশাদ করেন, যে ব্যক্তি জামাতের সঙ্গে ফজরের নামাজ আদায় করল, তারপর সূর্যোদয় পর্যন্ত মসজিদে বসে আল্লাহর জিকির করল, এরপর দুই রাকাত নামাজ আদায় করল, সে ব্যক্তি হজ ও ওমরার সওয়াব নিয়ে ফিরল। (মুজামে কাবীর, তবারানী, হাদীস ৭৭৪১)

পাঁচ. দ্বীন শেখা বা শেখানোর লক্ষ্যে মসজিদে গমন করা। হজরত আবু উমামা রা. থেকে বর্ণিত, নবী কারীম (সা.) ইরশাদ করেন, যে ব্যক্তি মসজিদে গেল কোনো ভালো কথা শেখা বা শেখানোর উদ্দেশ্যে, সে পরিপূর্ণরূপে হজ আদায়কারীর ন্যায় সওয়াব লাভ করবে। (মুজামে কাবীর, তবারানী, হাদীস ৭৪৭৩)

মহান আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে উপরোক্ত বিষয়গুলো আমলে বাস্তবায়ন করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

লেখক : শিক্ষক, ইসলামি আলোচক

#হজ #ইসলাম #সাওয়াব