হাবীবুল্লাহ বাহার কলেজের উপাধ্যক্ষকে হ*ত্যা: দু’জনের ওপর সন্দেহ পুলিশের | কলেজ নিউজ

হাবীবুল্লাহ বাহার কলেজের উপাধ্যক্ষকে হ*ত্যা: দু’জনের ওপর সন্দেহ পুলিশের

হাবীবুল্লাহ বাহার কলেজের গণিতের শিক্ষক সাইফুর রহমান রক্তাত অবস্থায় জীবন বাঁচাতে বারান্দায় এসে চিৎকার করে বাঁচার আকুতি জানিয়েছিলেন। পরে, প্রতিবেশীরা এসে পুলিশের সহযোগিতায় তাকে উত্তরখানের একটি স্থানীয় হাসপাতালে পাঠায়।

রাজধানীর হাবীবুল্লাহ বাহার কলেজের ভারপ্রাপ্ত উপাধক্ষ্য সাইফুর রহমানকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় এক নারী ও এক পুরুষকে খুঁজছে পুলিশ। আত্মীয় পরিচয়ে তাদের নিজের বাসায় রেখেছিলেন সাইফুর। মৃত্যুর আগে তিনি তাদের কথা বলেছেন বলেও জানিয়েছে প্রতিবেশীরা। আর এটিকে পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড বলছে পরিবার। কলেজ কেন্দ্রীক রাজনীতি ও অর্থ সম্পদকে ঘিরে এই হত্যাকাণ্ড ঘটতে পারে বলে তাদের সন্দেহ।

সরেজমিনে, উত্তরখানের বাসায় বেডরুম ও বাথরুমের মেঝে জুড়ে রক্তের ছাপ দেখা গেছে। হাবীবুল্লাহ বাহার কলেজের গণিতের শিক্ষক সাইফুর রহমান রক্তাত অবস্থায় জীবন বাঁচাতে বারান্দায় এসে চিৎকার করে বাঁচার আকুতি জানিয়েছিলেন। পরে, প্রতিবেশীরা এসে পুলিশের সহযোগিতায় তাকে উত্তরখানের একটি স্থানীয় হাসপাতালে পাঠায়। সোমবার ভোরে সেখানেই তার মৃত্যু হয়।

মঙ্গলবার সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের মর্গে সাইফুর রহমানের ময়নাতদন্ত হয়েছে। নিহতের ভাইয়েরা জানান, এটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। পারিবারিক কলহের কথা স্বীকার না করলেও শান্তিবাগে স্ত্রী সন্তানকে রেখে চার মাস ধরে উত্তরখানের ভাড়া বাসায় উঠেছিলেন এই শিক্ষক। পরিবারকে জানিয়েছিলেন; উত্তরখানে কেনা একটি প্লট দেখভালের জন্যাই তিনি সেখানে থাকছেন।

রক্তাত অবস্থায় শিক্ষক সাইফুর রহমানকে উদ্ধারকরা প্রতিবেশীরা বলছেন, মৃত্যুর আগে সাইফুর রহমান জানিয়েছেন আত্মীয় পরিচয় দিয়ে বাসায় রাখা এক নারী ও পুরুষই তাকে কুপিয়েছে। পুলিশ বলছে, বাসায় থাকা দুজনকে ঘিরেই তদন্ত চলছে। আমলে নেয়া হচ্ছে পরিবারের অন্যান্য অভিযোগও।

বাসায় আশ্রয় দেওয়া ওই দম্পতি সাইফুর রহমান ভূঁইয়াকে গুরুতর জখম করে যাওয়ার সময় মোবাইল ফোন ও বাসার সব চাবি সঙ্গে নিয়ে যায়। তারা তিনদিন ধরে ওই বাসায় থাকলেও তাদের সঙ্গে কোনো সম্পর্ক ছিল না ওই শিক্ষকের। রেলস্টেশনে পরিচয় হওয়ার পর তাদের সঙ্গে করে বাসায় এনে আশ্রয় দেন সাইফুর।

মোহাম্মাদ সাইফুর রহমান ভূঁইয়া হাবীবুল্লাহ বাহার কলেজের গণিত বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ছিলেন। তিনি কলেজটির ভারপ্রাপ্ত উপাধ্যক্ষও ছিলেন। রাজধানীর শান্তিনগর পিরসাহেবেরে গলিতে একটি বাসায় স্ত্রী সন্তান নিয়ে থাকতেন তিনি। উত্তরার ভাড়ার বাসাটিতেও মাঝে মধ্যে থাকতেন। তার গ্রামের বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সদর থানার বাসুদেব গ্রামে। তার বাবার নাম মৃত খলিলুর রহমান ভূঁইয়া।

জানা গেছে, সাইফুর রহমান ভূঁইয়া পরিবার নিয়ে শান্তিনগর এলাকায় থাতেন। তবে, কিছুদিন আগে সাইফুর রহমান উত্তরার উত্তরখান থানা এলাকায় একটি বাসা ভাড়া নেন। সেই বাসায় একাই থাকতেন। নিহতের স্ত্রী সাদিয়া রেহমান ৱবলেন, তিনি বেশ কয়েক মাস ধরে আলাদা থাকেন। কোনো কিছুর প্রয়োজন হলে বাসায় আসতেন। আবার চলে যেতেন। তবে তার সঙ্গে কথা বলতেন না।

এ ঘটনায় সাইফুর রহমানের ভাই মোহাম্মদ লুৎফুর রহমান ভূঁইয়া বাদী হয়ে অজ্ঞাত পরিচয়ের আসামিদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেছে। মামলা নম্বর ১২।