সরকারি সহকারী প্রাথমিক শিক্ষকদের বেতনস্কেল ১০ম গ্রেড, প্রধান শিক্ষকদের বেতনস্কেল ৯ম গ্রেডে উন্নীতকরণ, প্রাথমিক শিক্ষাক্যাডার প্রতিষ্ঠাসহ ১০ দফা দাবি যথাসময়ে বাস্তবায়ন না হলে নতুন কর্মসূচি দেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন শিক্ষক নেতারা।
বাংলাদেশ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির আয়োজনে শনিবার (৩১ মে) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর রুনি মিলনায়তনে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এই আলোচনা সভায় এই হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়।
সভায় কেন্দ্রীয় কমিটির নির্বাহী সভাপতি জাহিদুল রহমান বিশ্বাসের সভাপতিত্বে ও ঢাকা মহানগরের সাধারণ সম্পাদক এটিএম মনিরুজ্জামানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সভায় দিক নিদের্শনা মূলক গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য রাখেন সিনিয়র সহ-সভাপতি মজুলাল দে ও মো. কামরুল হাছান। সভায় মূল প্রবন্ধ পাঠ এবং দশ দফা দাবি আদায়ে কর্মসূচিসহ বিভিন্ন বিষয়ে বক্তব্য রাখেন সমিতির মহাসম্পাদক মো. আনোয়ার হোসেন ভূঁইয়া।
সভায় অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, সহ সভাপতি গোলাম মোস্তফা, আব্দুর রহিম, সাইফুন নাহার সাহিদা, সিনিয়র যুগ্ম মহা সম্পাদক জসীম উদ্দিন, সাংগঠনিক সম্পাদক এনামুল হক, সহ মহিলা সম্পাদিকা শারমিন সুলতানা, ঢাকা মহনগরীর সভাপতি মো. আনোয়ার উল্লাহ, রাজশাহী জেলার সভাপতি শাহাদত কবীর, নির্বাহী সদস্য মোহাম্মদ নাছির উদ্দিনসহ প্রমুখ।
শিক্ষকদের ১০ দফা দাবি হলো-
>> সহকারি শিক্ষকদের বেতনস্কেল ১০ম গ্রেড, প্রধান শিক্ষক পদে বেতন স্কেল ৯ম গ্রেডে উন্নীতকরণ, ১০ বছর ও ১৬ বছর পূর্তিতে উচ্চতর গ্রেড প্রদানে জটিলতা নিরসন, প্রাথমিক শিক্ষা ক্যাডার চালু করণ।
>> সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পদোন্নতিপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকদের টাইমস্কেল প্রদানসহ অন্যান্য প্রধান শিক্ষকদের ০৯/০৩/১৪ হতে ১৪/১২/১৫ পর্যন্ত সময়ের প্রাপ্য টাইমস্কেল প্রদানের ব্যবস্থা করা।
>> চলতি দায়িত্ব প্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকদেরকে দ্রুত স্থায়ী পদোন্নতির ব্যবস্থা করা।
>> সমন্বিত নিয়োগ বিধিতে শতভাগ সহকারি শিক্ষক এন্ট্রি পদ ধরে নিয়োগ প্রদান করা এবং উক্ত পদ থেকে প্রাথমিক শিক্ষা প্রশাসনের সর্বোচ্চ পদ পর্যন্ত শর্তহীনভাবে পদোন্নতির মাধ্যমে পূরণ করা।
>> প্রাথমিক শিক্ষা সম্পর্কীয় বিভাগীয় নীতি নির্ধারণী সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে সাংগঠনিক প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করা।
>> সরকারি প্রাথমিক শিক্ষকদের অবিলম্বে নন-ভেকেশনাল কর্মচারী হিসাবে ঘোষণা করে অন্যান্য সরকারি কর্মচারীদের ন্যায় সুযোগ সুবিধা প্রদান করা।
>> অবিলম্বে দেশের সকল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৮ম শ্রেণি পর্যন্ত প্রাথমিক শিক্ষা কার্যকর করা।
>> অন্যান্য সরকারি কর্মচারীদের ন্যায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় শুক্রবার ও শনিবার সাপ্তাহিক ২ দিন সরকারি ছুটি বহাল রেখে ১ জন শিক্ষকের দৈনিক সর্বোচ্চ ৪টি পিরিয়ড পাঠদানের ব্যবস্থা নিশ্চিত করা।
>> সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির প্রতিনিধিদের নিয়ে অবিলম্বে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক কল্যাট্রাস্টি বোর্ড কার্যক্রম গতিশীল করা।
>> (ক) শিক্ষকদের বিভিন্ন বিভাগীয় প্রশিক্ষণে শুধু মাত্র শিক্ষকদের মধ্য থেকে প্রশিক্ষক নির্বাচন করা।
(খ) শিক্ষকদের শ্রান্তি বিনোদন ভাতার জটিলতা নিরসন করা।
(গ) 'বটিপিটি প্রশিক্ষণের পর নূন্যতম ২টি ইনক্রিমেন্টসহ উচ্চ ধাপে বেতন নির্ধারণ করা ও সকল ক্ষেত্রে বিটিপিটি ও বিএড এর সমতা প্রদান করা।
এই দাবিসমূহ যথাসময়ে বাস্তবায়ন না হলে আগামী ডিসেম্বর মাসে ঢাকায় শিক্ষক সমাবেশের মাধ্যমে দাবি পূরণের জন্য নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে বলে জানান শিক্ষক নেতারা।