ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে প্রাথমিকের পাঠদান | স্কুল নিউজ

ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে প্রাথমিকের পাঠদান

নেত্রকোনার সীমান্তবর্তী দুর্গাপুরের ৬নং দক্ষিণ জাগিরপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে চলছে শিক্ষার্থীদের নিয়মিত পাঠদান।

#স্কুল #শিক্ষক #শিক্ষার্থী

নেত্রকোনার সীমান্তবর্তী দুর্গাপুরের ৬নং দক্ষিণ জাগিরপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে চলছে শিক্ষার্থীদের নিয়মিত পাঠদান। ফলে চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীসহ অভিভাবকদের মাঝে।

জানা যায়, দীর্ঘ আঠারো বছর ধরে চলছে এভাবেই পাঠদান। বছর কয়েক আগে বিকল্প হিসেবে একটি টিনসেট ঘর নির্মাণ করা হলেও সেখানে পাঠদান করানো যায়নি। যে কারণে বাধ্য হয়ে এখন ক্লাস নেওয়া হচ্ছে জরাজীর্ণ ভবনেই। এমন পরিস্থিতিতে বিশ্ববিদ্যালয়ে উপস্থিতি ও ভর্তির সংখ্যা হ্রাস পাচ্ছে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বিদ্যালয়টিতে রয়েছে ঝুঁকিপূর্ণ একটি পাকা ভবন। ভবনের চারটি কক্ষই জরাজীর্ণ। ঝুঁকি নিয়েই চলছে পাঠদান। শিক্ষকদের অফিস কক্ষেরও করুণদশা। প্রথম শিফটের প্রথম শ্রেণিতে তালিকাভুক্ত শিক্ষার্থী মোট ১০ জন। কিন্তু উপস্থিতি দেখা মেলে তিনজনের। এই তিনজনের পাঠদান দিচ্ছেন শিক্ষিকা হাফসা সিদ্দিকা।

মাথার ওপরে একটু পর পর পলেস্তারা খসে পড়ছে যার কারণে ভবনটি অনেকটাই ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে বলছেন এই শিক্ষিকা। অপরদিকে দ্বিতীয় শ্রেণিতে পাঁচ শিক্ষার্থী বসে রয়েছে কিন্তু শ্রেণি শিক্ষক আছেন ছুটিতে।

বিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, ১৯৬৮ খ্রিষ্টাব্দে ৬নং দক্ষিণ জাগির পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা করা হয়। বর্তমানে বিদ্যালয়টিতে প্রধান শিক্ষকসহ ৬ পদের মধ্যে প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য থাকায় সহকারী শিক্ষক প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করছেন। একজন শিক্ষককে ডিপোটেশনে উপজেলা শিক্ষা অফিসে নেওয়া হয়েছে। আরেক শিক্ষক সাময়িক বরখাস্ত থাকায় তিনজন দিয়ে চলছে বিদ্যালয়টি।

অপরদিকে বিদ্যালয়টিতে প্রাক প্রাথমিক হতে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত ৫৯ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। তার মধ্যে অনেক শিক্ষার্থী বিদ্যালয়ে আসেন না।

প্রথম শ্রেণিতে পড়ুয়া মিম নামে এক শিশু শিক্ষার্থী বলে, ভাঙা বিল্ডিংয়ে ভয় করে সবসময়। আরামে আমরা পড়তে পারি না। আমরা নতুন ঘর আর ভালোমানের বেঞ্চ চাই।

অভিভাবক শরীফ উদ্দিন বলেন, বর্তমান এই স্কুলের চিত্র দেখলে নিজের কাছেই কষ্ট হয়। দিনদিন শিক্ষার্থীর সংখ্যাও কমছে। আমাদের দাবি একটি নতুন ভবন দ্রুত নির্মাণ করে শিক্ষার পরিবেশ ফিরিয়ে আনা হোক। মাসিক সভার আয়োজন ও আরও শিক্ষক নিয়োগ দিয়ে সুন্দর পরিবেশ গঠন করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট দাবি করছি।

বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা হাফসা সিদ্দিকী জানান, দীর্ঘদিন ধরে বিদ্যালয়ের ভবনের অবস্থা জরাজীর্ণ। শ্রেণিকক্ষ পাঠদানের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। শিক্ষকদের বসার রুম ও ভবনের বাইরের প্রায় সব স্থানের পলেস্তারা খসে পড়েছে। ফলে শিক্ষার্থীসহ শিক্ষকরা সবসময় আতঙ্কে থাকেন।

ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক এনামুল হক বলেন, আমি যোগদান করার সময় থেকেই দেখে আসছি স্কুলের ভবনের এমন ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থা। স্কুলের ভবনের এই পরিস্থিতির জন্য অভিভাবকরা তাদের অনেক সন্তানদের স্কুলে পাঠাচ্ছেন না। আমি শিক্ষা অফিসে জানিয়েছি দ্রুত একটি নতুন ভবন প্রয়োজন।

জানতে চাইলে দুর্গাপুর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. ফজলুর রহমান জানান, বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তবে আশার কথা হচ্ছে, নতুন একটি ভবনের জন্য ইতোমধ্যে একটি প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে যা অগ্রাধিকার তালিকায় আছে। খুব অচিরেই সেখানে একটি নতুন ভবন নির্মাণ হবে।

#স্কুল #শিক্ষক #শিক্ষার্থী