প্রাথমিকের শিক্ষকরা ক্লাসে ফিরছেন রোববার | স্কুল নিউজ

প্রাথমিকের শিক্ষকরা ক্লাসে ফিরছেন রোববার

কর্তৃপক্ষ তাদের অবস্থান তুলে ধরে চলমান কর্মসূচির বিষয়ে নেতাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে কর্মবিরতির মত কর্মসূচিকে নিরুৎসাহিত করেন এবং শিক্ষকদের শ্রেণিকক্ষে ফিরে যেতে অনুরোধ জানান।

#শিক্ষক #প্রাথমিক বিদ্যালয় #কর্মবিরতি

তিন দাবিতে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকদের পূর্ণ দিবস কর্মবিরতি ২৫ জুন পর্যন্ত স্থগিত করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দারের সঙ্গে এক বৈঠক শেষে এই সিদ্ধান্ত দেয়া হয়। শিক্ষক রোববার ক্লাসে ফিরবেন বলে জানানো হয়েছে।

শিক্ষক নেতারা বলেন, কর্তৃপক্ষ তাদের অবস্থান তুলে ধরে চলমান কর্মসূচির বিষয়ে নেতাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে কর্মবিরতির মত কর্মসূচিকে নিরুৎসাহিত করেন এবং শিক্ষকদের শ্রেণিকক্ষে ফিরে যেতে অনুরোধ জানান।

এর প্রেক্ষিতে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকদের এক্য পরিষদ জানায়, আগামী ২৫ জুন পর্যন্ত এই কর্মসূচি স্থগিত করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। এর আগে সচিবালয়ে বিকেল ৩টা থেকে এই বৈঠক শুরু হয়। বৈঠক শেষে সন্ধ্যায় সাড়ে ৬টার দিকে এ তথ্য জানানো হয়।

পরিষদ জানায় আরো জানায়, বৈঠকে শতভাগ পদোন্নতির দাবিতে ইতিবাচক পরিবর্তন প্রায় চূড়ান্ত বলে জানানো হয়। ১০ বছর এবং ১৬ বছর পূর্তিতে উচ্চতর গ্রেড প্রাপ্তির জটিলতা নিরসন কার্যক্রম চলমান এবং দ্রুততম সময়ে নিষ্পত্তি হতে যাচ্ছে জানানো হয়। একই সঙ্গে সহকারী শিক্ষক এন্টিপদে ১১তম গ্রেডের প্রস্তাবনা মন্ত্রণালয়ে এবং খুব শিগগিরই শিক্ষিক নেতাদের সমন্বয় করে অর্থ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আত্মমন্ত্রণালয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।

গত সোমবার থেকে পূর্ণদিবস কর্মবিরত পালন করে আসছিলেন প্রাথমিক শিক্ষকরা। গত মঙ্গলবার পর্যন্ত সরকার বা প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে সমস্যা সমাধানে কোনো উদ্যোগ নেয়া হচ্ছিলো না। শিক্ষকরা উল্টো অভিযোগ করেন, কোথাও কোথাও সচিব ও ডিজির নির্দেশের কথা বলে আন্দোলনরত শিক্ষকদের তালিকা চাওয়া হচ্ছিলো।

এদিকে সহকারী শিক্ষক সংগঠন ঐক্য পরিষদের নেতা শাহীনুর আল আমিন গত মঙ্গলবার বলেন, দেশের ৮০ থেকে ৯০ শতাংশ বিদ্যালয়ে কর্মবিরতি পালন হয়েছে। বরিশালসহ কয়েকজায়গার হচ্ছে না। তিন দফা আদায় না হওয়া পর্যন্ত এই কর্মসূচি চলবে বলে জানিয়েছিলেন তিনি।

জানা গেছে, গত মঙ্গলবার নারায়ণগঞ্জ বন্দরের ৭৫টি বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকদের কর্মবিরতি পালনের জন্য উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা শোকজ করেন। এর পরও শিক্ষকরা কর্মবিরতি পালন করে যাচ্ছেন। কর্মবিরতিতে যাওয়ায় রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে একটি বিদ্যালয়ের সব শিক্ষককে শোকজ করা হয়েছে।

এদিকে বরিশালে এ কর্মসূচি নিয়ে শিক্ষক নেতাদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। শিক্ষক নেতাদের একাংশ এই কর্মসূচি পালন করছেন আবার আরেকটি বড় অংশ পালন করছেন না। মঙ্গলবার সরেজমিনে দেখা গেছে বেশিরভাগ স্কুলে ক্লাস স্বাভাবিকভাবে চলছে। শিক্ষার্থীরা উপস্থিত হয়েছেন, শিক্ষকরা ক্লাস নিচ্ছেন।

কেন্দ্রীয় রেজিস্ট্রেশনধারী ছয় সংগঠনের মোর্চা প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক সংগঠন ঐক্য জোটের ডাকে বরিশালেও এ কর্মসূচি চলার কথা ছিলো।

যারা কর্মবিরতি পালন করেছেন না তারা বলছেন, সরকারি আচরণবিধির কারণে কর্মবিরতি পালন করছেন না বলে জানিয়েছেন শিক্ষকরা। তবে শিক্ষক নেতাদের একাংশ বলছেন কর্মবিরতি চলছে।

গতকাল মঙ্গলবার সকালে সাড়ে ১০টায় বরিশাল নগরীর কাউনিয়া এলাকায় বানিমন্দির সরকারি প্রার্থমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, যথা নিয়মেই শিক্ষার্থীদের ক্লাস চলছে। কয়েকজন শিক্ষক বসে আড্ডা দিচ্ছেন শিক্ষক মিলনায়তনে। একই চিত্র দেখা যায় কাউনিয়া এলাকার আদর্শ পৌর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে।

সরেজমিনে পিরোজপুরেও দেখা গেছে একই চিত্র। কর্মবিরতির কারণে বিদ্যালয়গুলোতে ক্লাসে পাঠদান করছেন না সহকারী শিক্ষকরা। ফলে শিক্ষার্থীরা শ্রেণি কক্ষে অলস সময় কাটাচ্ছে। অভিভাবকরা বলছে এভাবে চলতে থাকলে শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ার অনেক ক্ষতি হবে। তবে জেলার অনেক স্কুলের শিক্ষকরা কোনো কর্মসূচি পালন করেছেন না। তারা নিয়মিত ক্লাস নিচ্ছেন।

সহকারী শিক্ষকদের তিন দফা দাবির মধ্যে রয়েছে- পরামর্শক কমিটির সুপারিশের যৌক্তিক সংস্কার করে সহকারী শিক্ষক পদকে ১১তম গ্রেডে বেতন নির্ধারণ, ১০ বছর ও ১৬ বছর পূর্তিতে উচ্চতর গ্রেড পাওয়ার জটিলতা নিরসন এবং প্রধান শিক্ষক পদে শতভাগ পদোন্নতি।

সহকারী শিক্ষকদের তিন দফা দাবির মধ্যে রয়েছে- পরামর্শক কমিটির সুপারিশের যৌক্তিক সংস্কার করে সহকারী শিক্ষক পদকে ১১তম গ্রেডে বেতন নির্ধারণ, ১০ বছর ও ১৬ বছর পূর্তিতে উচ্চতর গ্রেড পাওয়ার জটিলতা নিরসন এবং প্রধান শিক্ষক পদে শতভাগ পদোন্নতি।

এর আগে, ৫ থেকে ১৫ মে পর্যন্ত প্রতি কর্মদিবসে এক ঘণ্টা, ১৭ মে থেকে দুই ঘণ্টা এবং ২১ মে থেকে রোববার পর্যন্ত আধাবেলা কর্মবিরতি পালন করেন শিক্ষকরা। এখন সহকারী শিক্ষকরা ১৩তম গ্রেডে, আর প্রধান শিক্ষক ১১তম গ্রেডে বেতন পান।

শিক্ষাসহ সব খবর সবার আগে জানতে দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গেই থাকুন। ভিডিয়োগুলো মিস করতে না চাইলে এখনই দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন এবং বেল বাটন ক্লিক করুন। বেল বাটন ক্লিক করার ফলে আপনার স্মার্ট ফোন বা কম্পিউটারে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভিডিওগুলোর নোটিফিকেশন পৌঁছে যাবে।

দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেল SUBSCRIBE করতে ক্লিক করুন।

#শিক্ষক #প্রাথমিক বিদ্যালয় #কর্মবিরতি