জুলাই থেকেই সরকারি চাকরিজীবীদের মহার্ঘভাতা দেওয়ার সম্ভাবনা | অন্তর্বর্তীকালীন সরকার নিউজ

জুলাই থেকেই সরকারি চাকরিজীবীদের মহার্ঘভাতা দেওয়ার সম্ভাবনা

আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছর থেকে সরকারি চাকরিজীবীদের সর্বোচ্চ ২০ শতাংশ পর্যন্ত মহার্ঘভাতা দেওয়ার পরিকল্পনা নিয়ে সরকারি পর্যায়ে কাজ হচ্ছে।

#সরকারি কর্মচারী #সরকারি চাকরি #সরকারি কর্মচারী #অন্তর্বর্তীকালীন সরকার

সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দীর্ঘদিনের দাবি মহার্ঘভাতা খুব শিগগির বাস্তবায়িত হবে। জানা গেছে, আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছর থেকে সরকারি চাকরিজীবীদের সর্বোচ্চ ২০ শতাংশ পর্যন্ত মহার্ঘভাতা দেওয়ার পরিকল্পনা নিয়ে সরকারি পর্যায়ে কাজ হচ্ছে।

এই ভাতা দেওয়ার ফলে আগামী অর্থবছরে বাড়তি কত খরচ হবে, তার হিসাব-নিকাশ হচ্ছে বলে অর্থ মন্ত্রণালয় এবং জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। এই ভাতার চূড়ান্ত হার নির্ধারণে ২০ মে অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে একটি বৈঠক হবে, বলে জানা গেছে।

গত ডিসেম্বরে ‘মহার্ঘ ভাতা’ সংস্থানের বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টার মুখ্য সচিবকে আহ্বায়ক করে সাত সদস্যের একটি পর্যালোচনা কমিটি গঠন করে সরকার। পর্যালোচনা শেষে কমিটি গ্রেডভিত্তিক ১০ থেকে ২০ শতাংশ ভাতা দেওয়ার সুপারিশ করে। গত জানুয়ারি থেকেই এ ভাতা কার্যকরের পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু সংকটকালীন অর্থনৈতিক পরিস্থিতিতে এ উদ্যোগের সমালোচনা করেন অর্থনীতিবিদরা। এমন প্রেক্ষাপটে মহার্ঘ ভাতা দেওয়া থেকে তখন পিছিয়ে যায় সরকার। এখন নতুন করে আবার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

এ বিষয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মোখলেস উর রহমান বলেন, মহার্ঘভাতার প্রস্তাব আগামী সপ্তাহে জনপ্রশাসনবিষয়ক কমিটির বৈঠকে অনুমোদনের জন্য তোলা হবে। অর্থ মন্ত্রণালয়ে আগামী মঙ্গলবার জনপ্রশাসনবিষয়ক কমিটির বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানান, প্রধান উপদেষ্টার সম্মতি পেলে এই মহার্ঘভাতার সিদ্ধান্ত বাজেট বক্তৃতায় অন্তর্ভুক্ত করা হবে।

মহার্ঘ ভাতার প্রস্তাব প্রণয়নের সঙ্গে যুক্ত এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, প্রতি পাঁচ বছর পরপর সরকারি চাকরিজীবীদের নতুন বেতন কাঠামো হওয়ার নিয়ম রয়েছে। ২০১৫ খ্রিষ্টাব্দে সর্বশেষ কাঠামো কার্যকর হয়। কিন্তু নতুন বেতন কাঠামো এখনও হয়নি। এ কারণে মহার্ঘ ভাতা দেওয়ার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণে ১১ থেকে ২০তম গ্রেডের কর্মচারীদের জীবনযাপন কঠিন হয়েছে। সার্বিক প্রেক্ষাপট বিবেচনায় নিয়ে নতুন বাজেটে মহার্ঘ ভাতা ঘোষণার প্রস্তুতি নিয়েছে অর্থ বিভাগ। অর্থ উপদেষ্টার নেতৃত্বে গঠিত জনপ্রশাসনবিষয়ক কমিটিতে নীতিগত অনুমোদনের জন্য এ বিষয়ে প্রস্তাব উপস্থাপন করা হবে। কমিটি অনুমোদন দিলে চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য প্রধান উপদেষ্টার কাছে উপস্থাপন করা হবে।

সূত্র জানায়, বৈঠকে উপস্থাপনের জন্য একটি খসড়া প্রস্তাব তৈরি করেছে অর্থ বিভাগ। প্রস্তাব অনুযায়ী মহার্ঘ ভাতা ঘোষণা হলে ইতোমাধ্যে পাওয়া সরকারি চাকরিজীবীদের বাড়তি ৫ শতাংশ ইনক্রিমেন্ট থাকবে না। সে হিসাবে বিদ্যমান সাড়ে ১৪ লাখ সরকারি চাকরিজীবীকে মূল বেতনের ২০ শতাংশ হারে মহার্ঘ ভাতা দেওয়া হলে আগামী বাজেটে বাড়তি ব্যয় হবে প্রায় ৭ হাজার কোটি টাকা।

অর্থ বিভাগের খসড়ায় ১১তম থেকে ২০তম গ্রেডের কর্মচারীদের সর্বোচ্চ ২০ শতাংশ এবং প্রথম থেকে দশম গ্রেডের কর্মচারীদের ১০ বা ১৫ শতাংশ হারে ভাতা দেওয়ার বিকল্প প্রস্তাবও রয়েছে। প্রথম থেকে দশম গ্রেডে ১০ শতাংশ দেওয়া হলে ৬ হাজার কোটি টাকা বাড়তি অর্থের প্রয়োজন হবে। অন্যদিকে ১৫ শতাংশ দেওয়া হলে ব্যয় দাঁড়াবে প্রায় সাড়ে ৬ হাজার কোটি টাকা।

চলতি অর্থবছরের মূল বাজেটে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীর বেতন-ভাতা বাবদ বরাদ্দ ছিল ৮২ হাজার ৯৯০ কোটি টাকা, যা মোট বাজেটের ১০ দশমিক ৪১ শতাংশ। গত সরকারের আমলে বৈষম্যের শিকার চাকরিজীবীদের কয়েক দফায় পদোন্নতি দেওয়ায় সংশোধিত বাজেটে এ খাতে বরাদ্দ বেড়ে ৮৪ হাজার কোটি টাকা হয়েছে।

২০১৫ খ্রিষ্টাব্দের জুলাই মাসে অষ্টম ‘পে স্কেল’ কার্যকর হয়। মূল্যস্ফীতি বিবেচনায় নিয়ে বার্ষিক ইনক্রিমেন্ট দেওয়ার প্রস্তাব ছিল বেতন কমিশনের। ২০২৩ খ্রিষ্টাব্দের জুলাইয়ের আগ পর্যন্ত প্রতি বছর সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ৫ শতাংশ হারে ইনক্রিমেন্ট পান। ওই বছর নতুন পে স্কেল ঘোষণাসহ দাবি আদায়ে সোচ্চার হন সরকারি চাকরিজীবীরা। ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেটে ২০ শতাংশ মহার্ঘ ভাতা দেওয়ার পরিকল্পনা করে অর্থ মন্ত্রণালয়।

#সরকারি কর্মচারী #সরকারি চাকরি #সরকারি কর্মচারী #অন্তর্বর্তীকালীন সরকার