এনটিআরসিএর সামনে অষ্টাদশ শিক্ষক নিবন্ধনে উত্তীর্ণ কয়েকশত প্রার্থীর অবস্থান
হাইকোর্টের একটি আদেশ ও রুলের বিপক্ষে মাঠে নেমেছেন হবু শিক্ষকরা। গত সপ্তাহে হাইকোর্টের একটি আদেশে অষ্টাদশ শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষার ভাইভায় অনুত্তীর্ণ কয়েকজন রিটকারীকে ষষ্ঠ গণবিজ্ঞপ্তির ই-অ্যাপ্লিকেশনে আবেদন করার সুযোগ দিতে বলা হয়। একই সঙ্গে রিটকারীদের শুধু লিখিত পরীক্ষার নম্বরের ভিত্তিতে নিবন্ধন সনদ দিতে এনটিআরসিএকে বলা হয়। হাইকোর্টের এই আদেশ ও রুলের বিরুদ্ধে মিছিল ও মানবন্ধন করেছেন অষ্টাদশ শিক্ষক নিবন্ধনে উত্তীর্ণ কয়েকশত প্রার্থী।
সোমবার (৭ জুলাই) রাজধানীর ইস্কাটন গার্ডেন রোডস্থ বোরাক টাওয়ারে এনটিআরসিএ কার্যালয়ের সামনে মানববন্ধন করেন তারা। এসময় তারা ফেলকরাদের পক্ষে হাইকোর্টের আদেশের তীব্র সমালোচনা করেন এব ফেল না মেধা, মেধা মেধা স্লোগান দেন।
বিচারপতি মো. আকরাম হোসেন চৌধুরী ও বিচারপতি ফয়েজ আহমেদ এর বেঞ্চ ২ জুলাই ফেলকরাদের পক্ষে এমন আদেশ দেন। ৩ জুলাই আদেশের কপি পেয়েছে এনটিআরসিএ। এতে বলা হয়েছে রিটকারীদের অবৈধ ও বৈষম্যমূলকভাবে ভাইভায় বাদ দিয়ে গত ৪ জুন ফল প্রকাশ করা হয়েছে। তিনদিনের মধ্যে আদেশ কার্যকর করতে বলা হয়েছে।
উত্তীর্ণ প্রার্থীরা এনটিআরসিএ কার্যালয়ের সামনে সাংবাদিকদের বলেন, শিক্ষকতার মতো মহান পেশায় যদি অকৃতকার্যরা রিট করে স্থান পায় তবে দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা প্রশ্নবিদ্ধ হবে। তাই যারা যোগ্যতার ভিত্তিতে ১৮তম শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন। তাদের সবার নিয়োগ কার্যক্রম দ্রুত সম্পন্ন করে দেশের শিক্ষক সংকট দূর করা হোক।
এদিকে, ১৮তম শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষায় চূড়ান্ত ফলাফলে ফেল করা প্রার্থীরা সনদের দাবিতে আজ শাহবাগে অবনস্থান কর্মসূচি পালন করেন। এ সময় তারা পুলিশের সঙ্গে তর্কে লিপ্ত হন। পুলিশের কথা হলো, ‘আপনারা (আন্দোলনকারী) ভাইভায় ফেল করেছেন, নির্ধারিত নম্বর পাননি। কিন্তু ফেল করেও সনদের দাবিতে রাজপথ আটকে জনভোগান্তি সৃষ্টি করছেন।
গত ৪ জুন ১৮তম শিক্ষক নিবন্ধনের চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশ করা হয়। এতে ৬০ হাজার ৫২১ জন প্রার্থীকে উত্তীর্ণ ঘোষণা করা হয়। পরে ২৩ জুন সংশোধিত ফলাফলে আরও ১১৩ জনকে উত্তীর্ণ দেখানো হয়।
এনটিআরসিএ জানিয়েছে, ২০২৫ খ্রিষ্টাব্দের ২৩ মার্চ অনুষ্ঠিত পরীক্ষার ফল কারিগরি ত্রুটির কারণে প্রথমে অন্তর্ভুক্ত হয়নি। ফল পুনঃপরীক্ষা ও যাচাইয়ের পর সংশোধিত ফল প্রকাশ করা হয়। এরপরই ফলাফলে অসঙ্গতি ও বৈষম্যের অভিযোগে আন্দোলন শুরু করেন অকৃতকার্য হওয়া অনেক প্রার্থী।
ফেলকরাদের দাবি, ভাইভা পরীক্ষায় অংশ নিয়ে ভালো ফল করার পরও অনেকে অনুত্তীর্ণ হয়েছেন। বিশেষ করে বোর্ড ভিত্তিক ফলাফলে ব্যাপক তারতম্যের অভিযোগ ওঠে। একাধিক বোর্ডে ৩০ জনের মধ্যে ১ থেকে ৩ জন পাস করেছেন। অন্যদিকে কিছু বোর্ডে ২৯ জনও পাস করেছেন- যা নিয়ে চাকরি প্রত্যাশীরা ফলের স্বচ্ছতা ও ন্যায্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।
ফলাফল প্রকাশের পর আন্দোলনরত প্রার্থীদের একটি প্রতিনিধি দল শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা কার্যালয়ে বৈঠকে অংশ নেন। সেখানে এনটিআরসিএর প্রধান উপদেষ্টার সহকারী সচিব তাদের দাবি শোনেন এবং বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সমন্বয়ের আশ্বাস দেন। তবে আন্দোলনকারীরা আশ্বস্ত না হয়ে ফলাফল পুনর্বিবেচনা না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।