ছবি : রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট থেকে নেয়া
বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তরের প্রশাসক অধ্যাপক আখতার হোসেন মজুমদার এই ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, "এটা খুবই দুঃখজনক ঘটনা। গতকালও আমাদের ওয়েবসাইট হ্যাকড হয়েছিল। আমরা তাৎক্ষণিকভাবে সেটি উদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছিলাম। কিন্তু আজ আবারও একই ঘটনা ঘটলো।"
কে বা কারা এই ওয়েবসাইটটি হ্যাক করেছে, সে বিষয়ে তাৎক্ষণিকভাবে কোনো তথ্য জানা যায়নি। তবে ধারণা করা হচ্ছে, একই হ্যাকার গোষ্ঠী এই কাজ করেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্যপ্রযুক্তি (আইটি) বিভাগ দ্রুত ওয়েবসাইটটি পুনরুদ্ধারের কাজ শুরু করেছে।
ওয়েবসাইটটির হোম পেজে প্রবেশ করার সঙ্গে সঙ্গেই ব্যবহারকারীরা একটি বিদেশি বিকিনি বিক্রির ওয়েবসাইটের লিঙ্কে দেখতে পান। বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব কোনো তথ্য বা ঘোষণা সেখানে দেখা যায়নি। এই ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে।
অধ্যাপক আখতার হোসেন মজুমদার আরও জানান, আইটি টিম বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখছে এবং খুব দ্রুত ওয়েবসাইটটিকে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনা সম্ভব হবে বলে তারা আশাবাদী।
তিনি বলেন, "আমরা হ্যাকারদের শনাক্ত করার চেষ্টা করছি এবং ভবিষ্যতে যাতে এ ধরনের ঘটনা আর না ঘটে, সে জন্য প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হবে।"
উল্লেখ্য, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো একটি ঐতিহ্যবাহী এবং গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইট বারবার হ্যাক হওয়ার ঘটনা স্বাভাবিকভাবেই উদ্বেগজনক। এর ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ের অনলাইন কার্যক্রম, ভর্তি প্রক্রিয়া এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ তথ্য প্রদানে ব্যাঘাত ঘটতে পারে।
এছাড়াও, ওয়েবসাইটের নিয়ন্ত্রণ হ্যাকারদের হাতে চলে গেলে তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য চুরি বা ধ্বংস করার মতো ক্ষতিকর কাজও করতে পারে।
এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইটি বিভাগের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। কেন বারবার একই ধরনের হ্যাকিংয়ের শিকার হচ্ছে ওয়েবসাইটটি, এবং এর স্থায়ী সমাধান কী, তা নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে। অনেক শিক্ষক ও শিক্ষার্থী মনে করেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের সাইবার নিরাপত্তা আরও জোরদার করা উচিত এবং নিয়মিত নিরাপত্তা বিষয়ক অডিট করা প্রয়োজন।
ওয়েবসাইট হ্যাক হওয়ার পরপরই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে। অনেকেই বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা ব্যবস্থার দুর্বলতা নিয়ে সমালোচনা করছেন এবং দ্রুত এর সমাধানের দাবি জানাচ্ছেন।
শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়েছে, কারণ তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইট থেকে প্রয়োজনীয় তথ্য জানতে পারছেন না।
বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ওয়েবসাইটটি পুনরুদ্ধার হওয়ার পরে তারা একটি জরুরি সভা ডেকে নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও শক্তিশালী করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে। একইসঙ্গে, হ্যাকারদের চিহ্নিত করার জন্য আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সাহায্যও নেওয়া হতে পারে।
এই ঘটনাটি দেশের অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের জন্যও একটি সতর্কবার্তা। ডিজিটাল যুগে ওয়েবসাইট একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম, এবং এর নিরাপত্তা নিশ্চিত করা অপরিহার্য। নিয়মিত নিরাপত্তা আপডেট এবং শক্তিশালী ফায়ারওয়াল ব্যবহার করে এ ধরনের হ্যাকিংয়ের ঝুঁকি কমানো সম্ভব।
আপাতত, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটটি হ্যাকারদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের আইটি টিম এটিকে পুনরুদ্ধারের জন্য আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। আশা করা যাচ্ছে, খুব শীঘ্রই ওয়েবসাইটটি স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসবে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাভাবিক কার্যক্রম পুনরায় শুরু হবে। তবে, এই ঘটনাটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাইবার নিরাপত্তা নিয়ে একটি বড় প্রশ্ন তৈরি করে গেল।
শিক্ষাসহ সব খবর সবার আগে জানতে দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গেই থাকুন। ভিডিওগুলো মিস করতে না চাইলে এখনই দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন এবং বেল বাটন ক্লিক করুন। বেল বাটন ক্লিক করার ফলে আপনার স্মার্ট ফোন বা কম্পিউটারে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভিডিওগুলোর নোটিফিকেশন পৌঁছে যাবে।
দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেল SUBSCRIBE করতে ক্লিক করুন।