রাজধানীর সরকারি তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের দাবিতে টানা ষষ্ঠ দিনের মতো সড়ক অবরোধ করা শিক্ষার্থীরা এবার মহাখালী রেলক্রসিংয়ে অবস্থান নিয়েছেন।। এতে ঢাকা রেলওয়ে স্টেশন থেকে ছেড়ে আসা একটি ট্রেন আটকে গেছে। লাল পতাকা দেখিয়ে ট্রেনটি থামানো হয়।
সোমবার (৩ ফ্রেব্রুয়ারি) বিকেল ৩টা ৪০ মিনিটে রেলপথ অবরোধ করেন শিক্ষার্থীরা।
অবরোধের পর শিক্ষার্থী আলী আহাম্মেদ মাইকে ঘোষণা দিয়ে বলেন, প্রধান উপদেষ্টা বা শিক্ষা উপদেষ্টাকে এখানে এসে তিতুমীরকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘোষণা দিতে হবে। না হলে আমরা রেললাইন ছাড়ব না। আমাদের এইটাই দাবি।
আলী আহাম্মেদ আরো বলেন, আমরা সাধারণ মানুষের কাছে ক্ষমা চাইছি। রাষ্ট্র আমাদের এখানে এনে দাঁড় করিয়েছে।
মিছিলটি রেলক্রসিং এলাকায় পৌঁছায় বিকেল পৌনে ৪টার দিকে। মিছিলকারীদের সঙ্গে থাকা অনশনকারী শিক্ষার্থীরা প্রথমে রেললাইনে শুয়ে পড়েন। পরে আন্দোলনকারীরা রেলপথ অবরোধ করেন। এ সময় কমলাপুরের দিক থেকে একটি ট্রেন আসতে দেখলে শিক্ষার্থীরা ট্রেনটি লাল নিশানা দেখিয়ে থামান।
আটকে যাওয়া ট্রেনটির লোকোমাস্টার লতিফ বলেন, উপকূল এক্সপ্রেস ট্রেনটি ৩টা ২৫ মিনিটে কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন থেকে ছেড়ে আসে। আমার ট্রেনের গতিসীমা ছিল ঘণ্টায় ৩০ কিলোমিটার। এর মধ্যে তিতুমীর রেলগেটে দূর থেকেই লাল পতাকা ও মানুষের জটলা দেখতে পাই। পরে ট্রেনটি দ্রুত সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে গতি কমিয়ে থামাতে সক্ষম হই। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে জানিয়েছি। হঠাৎ ট্রেন থামাতে বেগ পেতে হয়েছে। তবে কোনো সমস্যা হয়নি।
এর আগে সরকারি তিতুমীর কলেজকে স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের দাবিতে আবারও সড়ক অবরোধ করেন শিক্ষার্থীরা। পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী গুলশান লিংক রোড অবরোধ করেন তারা। ফলে লিংক রোডের উভয় পাশের সড়কের যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
শিক্ষার্থীরা বলেন, যতক্ষণ পর্যন্ত দাবি আদায় না হবে ততক্ষণ পর্যন্ত আন্দোলন চলবে। অবরোধ চলাকালীন জরুরি প্রয়োজনে বের হওয়া অ্যাম্বুলেন্স ও রোগী পরিবহনের গাড়ি ছাড়া অন্য কোনো গাড়ি চলতে দেয়া হবে না।
গতকাল রবিবার শিক্ষা উপদেষ্টার বক্তব্য প্রত্যাখ্যান করে তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতির দাবিতে মহাখালীর আমতলী মোড় অবরোধ করেন শিক্ষার্থীরা। এতে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পৌনে দুই ঘণ্টা পর রাত ৮টার দিকে তারা সেখান থেকে সরে কলেজের সামনে গিয়ে অবস্থান নেন।
এদিকে দাবি আদায়ে প্রায় ১০ জন শিক্ষার্থী গত পাঁচ দিন ধরে তিতুমীর কলেজ গেটের সামনে অনশন করছেন। অর্থনীতি বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী মাইনুদ্দিন জানান, অনশনরতদের মধ্যে তিন জন হাসপাতালে ভর্তি এবং অন্যদের এখানে স্যালাইন দেওয়া হচ্ছে।