আল কোরআনে বৃষ্টি প্রসঙ্গ | মতামত নিউজ

আল কোরআনে বৃষ্টি প্রসঙ্গ

সাগর মহাসাগর থেকে আল্লাহর হুকুমে জলীয় বাষ্প আকারে আকাশে মেঘমালা জমা হয় এবং তার থেকে বৃষ্টিপাত হয়। কোরআন মাজিদে এ প্রসঙ্গে বলা হয়েছে : তোমরা কি দেখনি আল্লাহ তায়ালা মেঘমালা হাঁকিয়ে নেন, তারপর তাকে পরস্পরে জুড়ে দেন। তার তাকে পুঞ্জিভূত ঘনঘটায় পরিণত করেন।

#বৃষ্টি #কোরআন #ইসলাম

এখন বর্ষাকাল। ক্ষণে ক্ষণে মুষলধারে নামছে বৃষ্টি। নদীনালা খালবিলে এখন অথৈ পানি। পানির অপর নাম জীবন। পানি ছাড়া একটি দিন অতিবাহিত করা অসম্ভব। প্রাত্যহিক জীবনে মানুষ জীবজন্তু পানির ওপর নির্ভরশীল। পানি ছাড়া জীবনের কল্পনা করা যায় না, ফলফসলের আশা করা যায় না। পানি আল্লাহর অমূল্য নেয়ামত। বৃষ্টির অভাবে মাটি যখন শুষ্ক হয়ে যায় এবং তার উর্বরতা লোপ পায়, ফসলি জমিন ফেটে চৌচির হয়ে যায় তখন আল্লাহর কুদরতে আসমান থেকে নেমে আসে বৃষ্টি নামক নেয়ামত।

সাগর মহাসাগর থেকে আল্লাহর হুকুমে জলীয় বাষ্প আকারে আকাশে মেঘমালা জমা হয় এবং তার থেকে বৃষ্টিপাত হয়। কোরআন মাজিদে এ প্রসঙ্গে বলা হয়েছে : তোমরা কি দেখনি আল্লাহ তায়ালা মেঘমালা হাঁকিয়ে নেন, তারপর তাকে পরস্পরে জুড়ে দেন। তার তাকে পুঞ্জিভূত ঘনঘটায় পরিণত করেন। তারপর তোমরা তার ভেতর থেকে বৃষ্টি নির্গত হতে দেখ। তিনি আকাশে (মেঘরূপে) যে পর্বতমালা আছে তা থেকে শিলা বর্ষণ করেন। (সুরা নুর: ৪৩)

বৃষ্টির পানিতে মাটির শুষ্কতা দূর হয়। মৃত মাটিতে উর্বরতা ফিরে আসে। নানা রকম উদ্ভিদ গজিয়ে ওঠে। ফলে ফুলে ভরে ওঠে বসুন্ধরা। সেই চিত্রকল্প পবিত্র কোরআন মাজিদে আল্লাহ তায়ালা এভাবে এঁকেছেন : আর আল্লাহ তিনি, যিনি তোমাদের জন্য আকাশ থেকে পানি বর্ষণ করেছেন, তারপর আমি তা দ্বারা সর্বপ্রকার উদ্ভিদের চারা উদ্গত করেছি, তারপর তা থেকে সবুজ গাছগাছালি জন্মিয়েছি, যা থেকে আমি থরে থরে বিন্যস্ত শস্যদানা উৎপন্ন করি এবং খেজুর গাছের চুমরি থেকে ফলভারে ঝুলন্ত কাঁদি নির্গত করি এবং আমি আঙুর বাগান উদ্গত করেছি এবং যায়তুন ও আনারও। তার একটি অন্যটির সদৃশ্য ও বিসদৃশ্যও। যখন সে বৃক্ষ ফল দেয় তখন তার ফলের প্রতি ও তার পাকার অবস্থার প্রতি গভীরভাবে লক্ষ্য কর। এসবের মধ্যে সেই সকল লোকের জন্য নিদর্শন রয়েছে যারা ঈমান আনে। (সুরা আনআম: ৯৯)

বৃষ্টি রহমত, কিন্তু অতিবৃষ্টি যন্ত্রণা। একবার মদীনা শরিফে অনাবৃষ্টি দেখা দিল। এক বেদুইন সাহাবি নবীজির কাছে জুমার নামাজের সময় বৃষ্টির জন্য দোয়া চাইলেন। নবীজি (সা.) বৃষ্টির জন্য দোয়া করলেন। সঙ্গে সঙ্গে বৃষ্টি নামল। কিন্তু বৃষ্টি নামল যে নামল-ই, বন্ধ হওয়ার আর নাম নেই। লাগাতার এক সপ্তাহ বৃষ্টিপাত হলো। কাঁচা বাড়িঘর ভেঙে পড়ার উপক্রম হলো। পরের শুক্রবারে সাহাবায়ে কেরাম নবীজির কাছে বৃষ্টি বন্ধের দোয়া চাইল। নবীজি দোয়া করলেন। তারপর বৃষ্টি বন্ধ হলো। (সহিহ বুখারি শরিফ: ৯৩৩)

বৃষ্টির পানিতে মানুষের রিজিক যেমন উৎপন্ন হয় তদ্রুপ গবাদি পশুর খাদ্যও উৎপন্ন হয়। ব্যবস্থা হয় সুপেয় পানীয়র। পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে : তিনিই সেই সত্তা, যিনি আকাশ থেকে পানি বর্ষণ করেন যা থেকে তোমাদের পানীয় লাভ হয় এবং তা থেকেই জন্মায় উদ্ভিদ যাতে তোমরা পশু চরাও। (সুরা নাহল: ১০)

বৃষ্টির কিছু পানি জমিনকে উর্বর করে তুলে, কিছু পানি নদীনালায় প্লাবিত হয়। সেখান থেকে প্রয়োজনের সময় ব্যবহার করা যায়। কোরআন মাজিদে আল্লাহ তায়ালা বলেন : তিনিই আকাশ থেকে পানি বর্ষণ করেন, ফলে নদীনালা আপন আপন সামর্থ্য অনুযায়ী প্লাবিত হয়েছে. তারপর পানির ধারা স্ফীত ফেনাসমূহ উপরিভাগে তুলে এনেছে। (সুরা রা‘দ : ১৭)

নদীনালার পানিও একসময় শুকিয়ে যায়। পানির অভাবে জমিন ফেটে যায়, ফসল বিবর্ণ হয়ে যায়। কোরআন মাজিদে বলা হয়েছে : তুমি কি দেখনি আল্লাহ আকাশ থেকে বারিপাত করেছেন, তারপর তা ভূমির নির্ঝরে প্রবাহিত করেছেন। তারপর তা দ্বারা বিভিন্ন রংয়ের ফসল উৎপন্ন করেন। তারপর তা শুকিয়ে যায়। ফলে তুমি দেখতে পাও তা হলুদ বর্ণ ধারণ করেছে। তারপর তিনি তা চূর্ণ বিচূর্ণ করে ফেলেন। (সুরা জুমার: ২১)

আল্লাহ তায়ালা যদি বৃষ্টি বন্ধ করে দেন অথবা ভূগর্ভস্থ পানির স্তর নামিয়ে দেন তাহলে কার সাধ্য আছে বৃষ্টি বর্ষণ করবে অথবা ভূগর্ভস্থ পানি তুলে আনবে। কোরআন মাজিদে আল্লাহ তায়ালা বলেন : বলে দাও, একটু বলতো! কোনো ভোরে তোমাদের পানি যদি ভূগর্ভে অন্তর্হিত হয়ে যায় তবে কে তোমাদেরকে প্রস্রবণ হতে প্রবাহিত পানি এনে দেবে? (সুরা মুলক : ৩০)

শিক্ষাসহ সব খবর সবার আগে জানতে দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গেই থাকুন। ভিডিয়োগুলো মিস করতে না চাইলে এখনই দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন এবং বেল বাটন ক্লিক করুন। বেল বাটন ক্লিক করার ফলে আপনার স্মার্ট ফোন বা কম্পিউটারে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভিডিওগুলোর নোটিফিকেশন পৌঁছে যাবে।

দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেল SUBSCRIBE করতে ক্লিক করুন।

#বৃষ্টি #কোরআন #ইসলাম