৮ উইকেটে জয় রংপুর রাইডার্সের | খেলাধুলা নিউজ

৮ উইকেটে জয় রংপুর রাইডার্সের

রংপুর রাইডার্স শুরুতেই দুই উইকেট হারালেও এরপর সাইফ হাসান আর অ্যালেক্স হেলস যেন তামিমদের দেখালেন, এই উইকেটে টি-টোয়েন্টির ব্যাটিংটা কীভাবে করতে হয়! দুজনের ৮১ বলে ১১৩ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটিতে শেষ পর্যন্ত ৫ ওভার হাতে রেখেই ৮ উইকেটে জিতে গেছে রংপুর রাইডার্স! তিন ম্যাচের তিনটিতেই জিতে পয়েন্ট তালিকার শীর্ষেও জাঁকিয়ে বসে গেছে তারা শুরুতেই।

তামিম ইকবাল ম্যাচ শেষে সোজাসুজিই বলে দিলেন, উইকেটটা ভালোই ছিল, তবে তাঁরা মাঝের দিকে ভালো ব্যাটিং করতে পারেননি। ১৬০-১৭০ রান করতে পারলে সেটি চ্যালেঞ্জ জানানোর মতো হতে পারত বলেও জানালেন ফরচুন বরিশাল অধিনায়ক।

১২৫ রান তো টি-টোয়েন্টিতে বলার মতো কোনো লক্ষ্য নয়, উইকেট একেবারে ধীরগতির আর বল উঁচু-নিচু হয়ে আসার মতো হলেই হয়তো শুধু এমন স্কোর নিয়েও লড়াই করার আশা করা যায়। উইকেট যে তেমন ছিল না, সে তো তামিমই জানালেন। এমন উইকেটে তাই ১২৫ রানের লক্ষ্য দিয়ে যা পাওয়ার কথা, তা-ই পেল তামিমের বরিশাল।

রংপুর রাইডার্স শুরুতেই দুই উইকেট হারালেও এরপর সাইফ হাসান আর অ্যালেক্স হেলস যেন তামিমদের দেখালেন, এই উইকেটে টি-টোয়েন্টির ব্যাটিংটা কীভাবে করতে হয়! দুজনের ৮১ বলে ১১৩ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটিতে শেষ পর্যন্ত ৫ ওভার হাতে রেখেই ৮ উইকেটে জিতে গেছে রংপুর রাইডার্স! তিন ম্যাচের তিনটিতেই জিতে পয়েন্ট তালিকার শীর্ষেও জাঁকিয়ে বসে গেছে তারা শুরুতেই।

বিশাল ছক্কা মেরে দলের জয় নিশ্চিত করা হেলস ১ রানের জন্য ফিফটি পেলেন না, ৪১ বলে ৪ চার ৩ ছক্কায় ৪৯ রানে অপরাজিত থাকলেন। তবে অন্য প্রান্তে সাইফ হাসান আরও বিধ্বংসী ব্যাটিং করেছেন। ৪৬ বলে ৬ চার ৩ ছক্কায় ৬২ রানে অপরাজিত থেকেছেন তিনি।

তামিমরা ইনিংসের শুরুতে মোটামুটি ভালো শুরু পেলেও মাঝের দিকে টপাটপ উইকেট হারিয়ে শেষে পথ হারিয়েছেন। উল্টো দিকে রংপুর ইনিংসে শুরুটা ভালো হয়নি, কিন্তু এরপর একেবারে মসৃণ গতিতেই এগিয়েছে তাদের ইনিংস।

রংপুর ইনিংসে যা নাটকীয়তা ইনিংসের প্রথম ৯ বলেই হয়ে গেছে। প্রথম ওভারে হেলস ১০ রান এনে দিলেও ইকবাল হোসেন ইমনের করা দ্বিতীয় ওভারের প্রথম বলেই ক্যাচ প্র্যাকটিস করিয়ে গোল্ডেন ডাক নিয়ে ফিরেছেন আজিজুল হাকিম। এর একটা বৈধ বল পর আবার একটা ধাক্কা খেল ফরচুন বরিশাল, ওয়াইডে চার ঠেকাতে গিয়ে উল্টো হাতে আঘাত পেয়ে মাঠ ছেড়েছেন মুশফিকুর রহিম।

এর পরের বলে আবার বরিশালই করল উইকেটের উদ্‌যাপন। ইমনের বলে আবার আকাশে বল তুলে দিয়ে ০ রানেই আউট রংপুরের হয়ে তিনে নামা তাওফিক খান। ১৫ রানের মধ্যে ২ উইকেট নেই রংপুরের। তামিম আর বরিশাল তখন বুঝি অল্প রানেও ম্যাচ জমিয়ে তোলার আশা দেখছে!

কোথায় কী! এরপর থেকে যে শুরু হলো হেলস আর সাইফের মার, আর থামাথামির নামই নেই। মাঝে হেলস একটা ক্যাচ দিলেও সেটা ধরতে পারেননি ফিল্ডার, উইকেটের এতটুকু কাছে যা যেতে পেরেছে বরিশাল।

হেলস-সাইফের আগ্রাসনে পাওয়ার প্লে-র ৬ ওভার শেষ হতেই রংপুর তুলে ফেলে ৪৮ রান। সাইফ শুরু থেকেই আগ্রাসী ছিলেন বেশি। ৯ ওভার শেষে স্ট্র্যাটেজিক টাইম-আউটের সময়ে দেখা গেল, রংপুরের রান ৮১, সে পথে হেলসকে ২৪ রানে রেখে সাইফ তুলে ফেলেছেন ৪১ রান। তা হয়েছে নবম ওভারে ইকবাল হোসেন ইমনের ওপরই সাইফ আর হেলস স্টিমরোলার চালানোয়। ওভারের দ্বিতীয় থেকে চতুর্থ – এই তিন বলে টানা দুই চারের পর একটা ছক্কা মেরেছেন ইমন। পঞ্চম বলে তিনি সিঙ্গেল নেওয়ার পর শেষ বলে হেলস আবার মেরেছেন চার।

১৩তম ওভারের প্রথম বলে রংপুর ১০০ পেরিয়ে যেতেই হিসেব শুরু হয়ে যায়, কত বল বাকি রেখে জিতবে তারা। দল ১০০ পেরোনোর পরের বলে সিঙ্গেল নিয়ে ফিফটি হয়ে গেল (৩৮ বলে, ৬ চার ২ ছক্কায়) সাইফের। বাকি আর অপেক্ষা বলতে রংপুরের জয় দেখার। সে অপেক্ষায় বেশিক্ষণ আর রাখেননি সাইফ-হেলস।

তা-ও যে বরিশাল খেলাটাকে ১৫তম ওভার পর্যন্ত নিতে পেরেছে, সে কৃতিত্ব বাঁহাতি স্পিনার তানভীর ইসলামের। ৪ ওভারে মাত্র ৯ রান দিয়েছেন তিনি! যেখানে শাহিন শাহ্‌ আফ্রিদি (৩ ওভারে ৩১), ইমন (৩ ওভারে ৪১) আর কাইল মায়ার্স (১ ওভারে ১২) রান দিয়েছেন ওভারপ্রতি ১০-এর ওপরে। বাকি দুই বোলার ফাহিম আশরাফ আর মোহাম্মদ নবিরও ইকোনমি যথাক্রমে ছিল ৭ আর ৮।