এবার অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষা ক্যাডারকে অধ্যক্ষ পদে! | বিসিএস নিউজ

এবার অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষা ক্যাডারকে অধ্যক্ষ পদে!

৩২ নম্বরে থাকা ফেনীর সোনাগাজী সরকারি কলেজ থেকে অধ্যাপক মো. আশরাফুল আলমকে অধ্যক্ষ পদে ফেনীর মহিপাল সরকারি কলেজে পদায়ন করা হয়।

#কলেজ #বিসিএস #শিক্ষক

বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডার কর্মকর্তাদের ৬৭ কলেজে অধ্যক্ষ পদে বদলিভিত্তিক পদায়ন দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ। এ তালিকায় অবসরে যাওয়া একজন শিক্ষকও রয়েছেন।

সোমবার (৫ মে) সন্ধ্যায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ থেকে এ সংক্রান্ত আদেশ জারি করা হয়। দুই বছর আগে অবসরে যাওয়া অধ্যাপককে কলেজের অধ্যক্ষ পদে পদায়ন দিয়ে সমালোচনার মুখে পড়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ থেকে প্রকাশিত তালিকায় দেখা গেছে, ৩২ নম্বরে থাকা ফেনীর সোনাগাজী সরকারি কলেজ থেকে অধ্যাপক মো. আশরাফুল আলমকে অধ্যক্ষ পদে ফেনীর মহিপাল সরকারি কলেজে পদায়ন করা হয়।

তিনি অবসরে যাওয়ার আগে সোনাগাজী সরকারি কলেজের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের অধ্যাপক ছিলেন।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মো. আশরাফুল আলম স্বেচ্ছায় অবসরে গিয়েছেন ২০২৩ খ্রিষ্টাব্দের ১ জুন। তিনি ২৫ বছর পূর্তির সুযোগ নিয়ে এখন আমেরিকা প্রবাসী।

আর তাকেই ফেনীর মহিপাল সরকারি কলেজে অধ্যক্ষ করে বদলি করা হয়েছে।

এর আগে, গত ৮ এপ্রিল শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডার কর্মকর্তাদের ১৩৫ কলেজে অধ্যক্ষ পদে বদলিভিত্তিক পদায়ন করে।

ওই তালিকাতে দুজন মৃত শিক্ষক ছিলেন। দুজনের মধ্যে একজন হলেন ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে আত্মহত্যা করা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ফাইরুজ সাদাফ অবন্তিকার মৃত বাবা অধ্যাপক মোহাম্মদ জামাল উদ্দীন।

এ নিয়ে সেসময় অধ্যাপক জামাল উদ্দীনের স্ত্রী ও সাবেক স্কুলশিক্ষিকা তাহমিনা শবনম আক্ষেপ করে বলেন, মেয়ের চলে যাওয়া, তার বিচার না পাওয়া এবং মেয়ের আগে তার বাবার মৃত্যু সব মিলিয়ে আমি আর নিতে পারছি না। আমার স্বামী তার প্রাপ্য সুসংবাদ দেখে যেতে পারলেন না।

তিনি বলেন, একই ঘটনা ঘটেছে আমার মেয়ের বেলায়ও। আত্মহননের দুমাস পর গত বছরের ১৯ মে অবন্তিকার স্নাতকের (এলএলবি অনার্স) চূড়ান্ত পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হয়।

এতে সিজিপিএ ৩ দশমিক ৬৫ পেয়ে আইন বিভাগে তৃতীয় স্থান অধিকার করে অবন্তিকা।

তিনি আরও বলেন, তালিকা প্রকাশের পরই আমি পদায়নের বিষয়টি জানতে পারি। অবনন্তিকার বাবা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবী ছাত্র ছিলেন।

শিক্ষকতা ছাড়াও অন্য সাতটি সংস্থায় চাকরির সুযোগ পেয়েও তিনি শিক্ষকতাকে বেছে নেন। জীবনে তোষামোদি-তদবির করতেন না বলেই অধ্যক্ষ পদে তাকে পদায়ন করা হয়নি।

তিনি মারা যাওয়ার দুমাস পর একটি গোয়েন্দা সংস্থা থেকে পদোন্নতির বিষয়ে কিছু তথ্য জানতে চায়। আমি বলেছিলাম- তিনি মারা গেছেন। এরপরও হয়তো ভুল করে আমার মৃত স্বামীকে অধ্যক্ষ হিসেবে পদায়ন করা হয়েছে।

তাহমিনা শবনম বলেন, আমার মেয়ে অবন্তিকাও বাবার মতো মেধাবী ছিল। সে পাইলটে সুযোগ পেয়েছিল। কিন্তু ওর ইচ্ছে ছিল বিচারক হওয়ার। তাই আইন পড়েছিল।

মৃত্যুর কিছুদিন আগে অবন্তিকা ফেসবুক পোস্টে বিশ্ববিদ্যালয়ের তার সহপাঠী ছাত্রলীগ ক্যাডার আম্মান সিদ্দিকী ও অন্যতম সহযোগী সহকারী প্রক্টর (সাময়িক বরখাস্ত) দ্বীন ইসলামের বিরুদ্ধে হয়রানি ও নিপীড়নের নানা অভিযোগ করেন। মামলা পরবর্তীতে আত্মহত্যার প্ররোচনার সংশ্লিষ্টতা পেয়ে তাদের গ্রেপ্তারও করা হয়।

বর্তমানে উভয় জামিনে মুক্ত। আমার করা মামলা এখন নিশ্চুপ পড়ে আছে। এক বছরের অধিক সময় পেরিয়ে গেলেও চার্জশিট দেয়নি পুলিশ।

অধিকন্তু মামলার আলামত নষ্ট করেছে পুলিশের সাবেক তদন্ত কর্মকর্তা কোতোয়ালি থানা পুলিশের পরিদর্শক (তদন্ত) শিবেন বিশ্বাস।

কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ মির্জা মো. নাসির উদ্দিন বলেন, মন্ত্রণালয়ের তিনটি তালিকার একটির ৩৭ জনের তালিকায় ১৩ নম্বরে কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজ থেকে অধ্যক্ষ পদে মীর ইসমাইল হোসেন কলেজে মো. জামাল উদ্দীনকে পদায়ন করা হয়।

তিনি কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান হিসেবে কর্মরত অবস্থায় ২০২৩ খ্রিষ্টাব্দের ১২ এপ্রিল মারা যান।

#কলেজ #বিসিএস #শিক্ষক