ছবি : সংগৃহীত
প্রাক-প্রাথমিকের পরিমার্জিত শিক্ষাক্রম প্রকাশ করা হয়েছে। এতে জাতীয় শিক্ষাক্রম সমন্বয় কমিটির সভায় (এনসিসিসি) অনুমোদিত সংশোধনী ও পরিমার্জন করা হয়েছে। এ শিক্ষাক্রমের ভিত্তিতে শিক্ষক সহায়িকাসহ অন্যান্য শিক্ষা উপকরণ উন্নয়ন এবং শিখন-শেখানো কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে। ৪ বছরের বেশি ও ৫ বছরের বেশি বয়সি কোমলমতি শিশুদের শারীরিক, ভাষাবৃত্তিক, বুদ্ধিবৃত্তিক, সামাজিক ও আবেগিক ক্ষেত্রে সুষম বিকাশ নিশ্চিত করাই প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষাক্রমের মূল লক্ষ্য বলে জানানো হয়েছে।
সম্প্রতি জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) এ শিক্ষাক্রম প্রকাশ করে।
এনসিটিবি জানিয়েছে, বিভিন্ন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক অঙ্গীকার বিবেচনা করে সারাদেশে সর্বজনস্বীকৃত জাতীয় মানের ওপর ভিত্তি করে প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষা কার্যকর ও সুসংগঠিতরূপে বাস্তবায়নের জন্য ব্যাপক আলাপ-আলোচনা ও মতবিনিময়ের মাধ্যমে ২০০৮ খ্রিষ্টাব্দে 'প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষার পরিচালন কাঠামো প্রণয়ন করা হয়। জাতীয় শিক্ষানীতি ২০১০ এ ৫ বছরের বেশি বয়সি শিশুদের জন্য এবং পর্যায়ক্রমে ৪ বছরের বেশি বয়সি শিশুদের জন্য অর্থাৎ ২ বছর মেয়াদি প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষা সম্প্রসারণের বিধান উল্লেখ করা হয়েছে।
অনুমোদিত কাঠামোর আলোকে ২০১০ খ্রিষ্টাব্দে অন্তর্বর্তীকালীন প্যাকেজের মাধ্যমে সারাদেশে প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে ৫+ বছর বয়সি শিশুদের জন্য প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষা চালু করা হয়। একই ধারাবাহিকতায় ২০১১ খ্রিষ্টাব্দে প্রণীত জাতীয় শিক্ষাক্রমের ভিত্তিতে ২০১৪ খ্রিষ্টাব্দে ৫+ বছর বয়সি শিশুদের জন্য প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষা কার্যক্রম চালু করা হয়।
সপ্তম ও অষ্টম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা এবং টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা ২০৩০ এ ২ বছর মেয়াদি প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষা চালুর বিষয়ে গুরুত্বারোপ করা হয়েছে।
পরবর্তী সময়ে একই ধারাবাহিকতায় সরকার ৪+ বয়সি শিশুদের জন্য প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষা কার্যক্রম চালু করার বিষয়টি অনুমোদন করে। সারাদেশে ৫+ বয়সি শিশুদের জন্য বাস্তবায়নাধীন প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষা চালু রাখার পাশাপাশি জরুরি ভিত্তিতে একটি অন্তর্বর্তীকালীন প্যাকেজ প্রণয়ন করে ২০২৩ খ্রিষ্টাব্দে নির্বাচিত ৩ হাজার ২১৪টি বিদ্যালয়ে ৪+ বয়সি শিশুদের জন্য প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষা পরীক্ষামূলকভাবে চালু করা হয়।
প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষাক্রম ও শিখন-শেখানো সামগ্রী প্রণয়ন কমিটির সম্মানিত সদস্যদের সক্রিয় অংশগ্রহণে কয়েকটি কর্মশালার মাধ্যমে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড ২০২১ খ্রিষ্টাব্দের জুন মাস থেকে প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষাক্রম পরিমার্জনের কাজ শুরু করে। এই শিক্ষাক্রম পরিমার্জনের ক্ষেত্রে উল্লিখিত দলিল বিবেচনায় নেয়া হয়েছে।
দলিলগুলো হলো: বাংলাদেশ গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের সংবিধান, জাতীয় শিক্ষানীতি-২০১০, বিভিন্ন দেশের শিক্ষাক্রম, সরকারি ও বেসরকারি বিভিন্ন সংস্থা কর্তৃক পরিচালিত প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষার শিখন-শেখানো সামগ্রী, বিভিন্ন সংস্থার শিখন-শেখানো সামগ্রী, প্রারম্ভিক শিখন ও বিকাশের আদর্শিক মান, শিশুর প্রারম্ভিক যত্ন ও বিকাশের সমন্বিত নীতি-২০১৩, জাতীয় শিক্ষাক্রম রূপরেখা-২০২১।
এনসিটিবি আরো জানায়, শিশুর পরিপূর্ণ বিকাশের জন্য ৪টি ডোমেইন বা বিকাশের ক্ষেত্রগুলোকে (ক. শারীরিক ও চলনক্ষমতার বিকাশ; খ. সামাজিক ও আবেগিক বিকাশ; গ. ভাষা ও যোগাযোগ দক্ষতার বিকাশ; ঘ. বুদ্ধিবৃত্তিক বিকাশ) ভিত্তি ধরে প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষার লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। শিশুর বিকাশের ক্ষেত্র এবং প্রারম্ভিক শিখন ও আদর্শমান বিবেচনা করে শিখনক্ষেত্র নির্ধারণ করা হয়েছে।
শিখনক্ষেত্র অনুযায়ী ৪+ ও ৫+ বয়সি শিশুদের জন্য অর্জন উপযোগী যোগ্যতা ও শিখনফল নির্ধারণ করা হয়েছে। প্রতিটি শিখনফলের বিপরীতে সক্রিয় শিখনভিত্তিক শিখন-শেখানো কৌশল ও ধারাবাহিক মূল্যায়ন পদ্ধতি বর্ণনা করা হয়েছে। যৌক্তিক মূল্যায়ন কর্মশালায় পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে ৪+ বয়সিদের জন্য প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষাক্রম-২০২২ প্রণয়ন এবং ৫+ বয়সিদের জন্য প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষাক্রম পরিমার্জন চূড়ান্ত করা হয়। চূড়ান্ত প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষক্রম জাতীয় শিক্ষাক্রম সমন্বয় কমিটির সভায় (এনসিসিসি) অনুমোদন করা হয়।
আধুনিক বিশ্বের সঙ্গে তাল মেলাতে বিষয় বিশেষজ্ঞ, শিক্ষাক্রম বিশেষজ্ঞ, শিক্ষণ বিশেষজ্ঞ, শ্রেণি শিক্ষকগণের সমন্বয়ে বিশেষজ্ঞ দল ২০২৫ খ্রিষ্টাব্দে প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষাক্রম ২০২২ পর্যালোচনা করে পরিমার্জন কার্যক্রম সম্পন্ন করে জাতীয় শিক্ষাক্রম সমন্বয় কমিটির (এনসিসিসি) সভায় অনুমোদন লাভ করে এবং এর নামকরণ করা হয় "প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষাক্রম ২০২২ (পরিমার্জিত ২০২৫)"।
প্রাক-প্রাথমিকের পরিমার্জিত শিক্ষাক্রম দেখতে ক্লিক করুন
শিক্ষাসহ সব খবর সবার আগে জানতে দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গেই থাকুন। ভিডিয়োগুলো মিস করতে না চাইলে এখনই দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন এবং বেল বাটন ক্লিক করুন। বেল বাটন ক্লিক করার ফলে আপনার স্মার্ট ফোন বা কম্পিউটারে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভিডিওগুলোর নোটিফিকেশন পৌঁছে যাবে।
দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেল SUBSCRIBE করতে ক্লিক করুন।