ছবি : সংগৃহীত
সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোর শিক্ষক, কর্মকর্তা ও শিক্ষার্থীদের একটি সুনির্দিষ্ট ডেটাবেজ তৈরির লক্ষ্যে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি) একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিয়েছে।
আজ (১৭ মে) অধিদপ্তর এই উদ্যোগের একটি বিস্তারিত কর্মপরিকল্পনা (Roadmap) প্রকাশ করেছে।
একইসাথে দেশের সকল পুরাতন সরকারি এবং সদ্য সরকারিকৃত মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের কাছে এ সংক্রান্ত চিঠি, বিদ্যালয়গুলোর তালিকা এবং প্রয়োজনীয় সংযুক্তি পাঠিয়েছে।
এই উদ্যোগের মূল লক্ষ্য সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোর একটি পূর্ণাঙ্গ চিত্র তৈরি করা। যা ভবিষ্যতে নীতি নির্ধারণ ও সম্পদ ব্যবস্থাপনায় সহায়ক ভূমিকা পালন করবে বলে প্রত্যাশা সংশ্লিষ্টদের।
মাউশির এই কর্মপরিকল্পনায় ডেটা সংগ্রহের সুনির্দিষ্ট ধাপ এবং সময়সীমা উল্লেখ করা হয়েছে।
প্রাথমিকভাবে, বিদ্যালয়গুলোকে তাদের শিক্ষক, কর্মকর্তা এবং শিক্ষার্থীদের বিস্তারিত তথ্য একটি নির্দিষ্ট ছকে (যা চিঠির সাথে সংযুক্তি আকারে পাঠানো হয়েছে) পূরণ করতে বলা হয়েছে।
এই তথ্যের মধ্যে শিক্ষকদের ব্যক্তিগত পরিচিতি, শিক্ষাগত যোগ্যতা, অভিজ্ঞতা, প্রশিক্ষণ এবং বর্তমান কর্মস্থল সম্পর্কিত তথ্য অন্তর্ভুক্ত থাকবে। কর্মকর্তাদের ক্ষেত্রে তাদের পদবী, কর্মকাল এবং দায়িত্ব সম্পর্কিত তথ্য চাওয়া হয়েছে।
অন্যদিকে, শিক্ষার্থীদের ডেটাবেজে তাদের নাম, শ্রেণি, রোল নম্বর এবং অন্যান্য প্রাসঙ্গিক তথ্য অন্তর্ভুক্ত করা হবে।
কর্মপরিকল্পনার একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো তথ্য প্রদানের সময়সীমা নির্ধারণ। অধিদপ্তর থেকে পাঠানো চিঠিতে প্রতিটি বিদ্যালয়কে একটি নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে এই তথ্য পূরণ করে অনলাইনে অথবা অন্য কোনো নির্দিষ্ট মাধ্যমে জমা দেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
এই সময়সীমা সম্ভবত বিদ্যালয়ের ধরণ (পুরাতন বা সদ্য সরকারিকৃত) এবং ভৌগোলিক অবস্থানের উপর ভিত্তি করে ভিন্ন হতে পারে। তবে, সকল বিদ্যালয়কে দ্রুততম সময়ের মধ্যে এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার জন্য উৎসাহিত করা হয়েছে।
এই উদ্যোগে একটি পূর্ণাঙ্গ ডেটাবেজ তৈরি হলে সরকার এবং মাউশি উভয়পক্ষই বিদ্যালয়গুলোর প্রকৃত অবস্থা সম্পর্কে অবগত হতে পারবে।
এর ফলে শিক্ষক ও কর্মকর্তাদের পদায়ন, প্রশিক্ষণ এবং অন্যান্য পেশাগত উন্নয়নের পরিকল্পনা করা সহজ হবে। একইসাথে, শিক্ষার্থীদের সংখ্যা, তাদের সামাজিক ও অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপট এবং অন্যান্য প্রাসঙ্গিক তথ্য জানার মাধ্যমে তাদের জন্য উপযুক্ত শিক্ষাব্যবস্থা এবং সুযোগ তৈরি করা সম্ভব হবে।
সদ্য সরকারিকৃত বিদ্যালয়গুলোর ক্ষেত্রে এই ডেটা সংগ্রহ আরও বেশি গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এসব বিদ্যালয় পূর্বে একটি ভিন্ন কাঠামোর অধীনে পরিচালিত হতো।
সরকারি কাঠামোর সাথে একীভূত হওয়ার প্রক্রিয়ায় শিক্ষক, কর্মকর্তা ও শিক্ষার্থীদের একটি সমন্বিত ডেটাবেজ তৈরি করা প্রশাসনিক কাজকে আরও সহজ করবে। পাশাপাশি, এসব বিদ্যালয়ের প্রয়োজন অনুযায়ী সম্পদ বরাদ্দ এবং নীতি নির্ধারণেও এই তথ্য সহায়ক হবে।
মাউশির এই কর্মপরিকল্পনায় তথ্য সংগ্রহের পদ্ধতি সম্পর্কেও বিস্তারিত নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। একটি অনলাইন পোর্টাল তৈরি করা হয়েছে যেখানে বিদ্যালয়গুলো তাদের তথ্য সরাসরি আপলোড করতে পারবে।
এছাড়াও, কোনো বিদ্যালয় যদি অনলাইন পদ্ধতিতে তথ্য প্রদানে সমস্যায় পড়ে, তাদের জন্য বিকল্প পদ্ধতিরও রয়েছে। তথ্য যাতে নির্ভুল হয়, সেজন্য বিদ্যালয় প্রধানদের বিশেষভাবে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। প্রয়োজনে অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে প্রশিক্ষণ ও কারিগরি সহায়তা প্রদানের আশ্বাসও দেওয়া হয়েছে।
এই উদ্যোগ বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে কিছু চ্যালেঞ্জও থাকতে পারে। দেশের বিভিন্ন প্রান্তে অবস্থিত বিদ্যালয়গুলোতে ইন্টারনেট সংযোগের অভাব অথবা প্রযুক্তিগত জ্ঞানের ঘাটতি তথ্য প্রদানে বিলম্ব ঘটাতে পারে।
তবে, মাউশি যদি এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয় এবং বিদ্যালয়গুলোকে পর্যাপ্ত সহায়তা প্রদান করে, তাহলে এই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করা সম্ভব।
মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের এই উদ্যোগ সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোর ব্যবস্থাপনাকে আরও আধুনিক ও কার্যকর করে তুলবে। শিক্ষক, কর্মকর্তা ও শিক্ষার্থীদের সুনির্দিষ্ট তথ্য ভান্ডারের মাধ্যমে একটি শক্তিশালী শিক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তোলা সম্ভব হবে। এর ফলস্বরূপ শিক্ষার্থীরাই সবচেয়ে বেশি উপকৃত হবে।
এখন দেখার বিষয়, বিদ্যালয়গুলো কত দ্রুত এবং নির্ভুলভাবে এই তথ্য প্রদান করতে পারে। পাশাপাশি অধিদপ্তর কিভাবে এই ডেটাবেজের কার্যকর ব্যবহার নিশ্চিত করে।
আদেশটি দেখতে ক্লিক করুন এখানে
শিক্ষাসহ সব খবর সবার আগে জানতে দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গেই থাকুন। ভিডিয়োগুলো মিস করতে না চাইলে এখনই দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন এবং বেল বাটন ক্লিক করুন। বেল বাটন ক্লিক করার ফলে আপনার স্মার্ট ফোন বা কম্পিউটারে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভিডিওগুলোর নোটিফিকেশন পৌঁছে যাবে।
দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেল SUBSCRIBE করতে ক্লিক করুন।