বিশ্ব বিপর্যয় থেকে কয়েক মিলিমিটার দূরে | বিবিধ নিউজ

ইরান-ইসরায়েল সংঘাত বিশ্ব বিপর্যয় থেকে কয়েক মিলিমিটার দূরে

ইসরায়েল-ইরান সংঘাত নিয়ে ওয়াশিংটনের সঙ্গে মস্কোর যোগাযোগ চলছে বলে জানিয়েছেন রাশিয়ার উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই রিয়াবকভ। রুশ বার্তা সংস্থা ইন্টারফ্যাক্সের বরাত দিয়ে আল-জাজিরা এই তথ্য জানিয়েছে।

#রাশিয়া

চলমান ইরান-ইসরায়েল সংঘাত নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে রাশিয়া। মস্কো সতর্ক করে বলেছে, এই সংঘাত বিশ্বকে বিপর্যয়ের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে এসেছে। শুধু মধ্যপ্রাচ্য নয় পুরো বিশ্ব বিপর্যয় থেকে আমরা মাত্র কয়েক মিলিমিটার দূরে আছি বলেও মনে করছে রাশিয়া।

রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা বুধবার এক সাপ্তাহিক ব্রিফিংয়ে বলেছেন, ইরানের পারমাণবিক অবকাঠামোতে ইসরায়েলের অব্যাহত হামলা বিশ্বকে এমন এক অবস্থানে এনেছে, যেখানে বিপর্যয় থেকে আমরা মাত্র কয়েক মিলিমিটার দূরে আছি। তার এই মন্তব্য আন্তর্জাতিক মহলে চলমান উত্তেজনার পারদ আরও বাড়িয়ে তুলেছে।

এদিকে, ইসরায়েল-ইরান সংঘাত নিয়ে ওয়াশিংটনের সঙ্গে মস্কোর যোগাযোগ চলছে বলে জানিয়েছেন রাশিয়ার উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই রিয়াবকভ রুশ বার্তা সংস্থা ইন্টারফ্যাক্সের বরাত দিয়ে আল-জাজিরা এই তথ্য জানিয়েছে। রাশিয়া পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালাচ্ছে এমন বার্তাই স্পষ্ট করলো তার বক্তব্য।

এর আগে রিয়াবকভ আরও সতর্ক করে বলেছিলেন, যুক্তরাষ্ট্র যদি ইসরায়েলকে সরাসরি সামরিক সহায়তা দেয়, তাহলে মধ্যপ্রাচ্যে পরিস্থিতি ভয়াবহভাবে অস্থিতিশীল হয়ে উঠবে

তার এই সতর্কবাণী থেকে স্পষ্ট যে, রাশিয়া চায় না এই সংঘাত কোনোভাবেই আরও বিস্তৃত হোক। দুই দেশের সংঘাতে বাইরের কোনো বড় শক্তির সরাসরি সামরিক হস্তক্ষেপ চায় না রাশিয়া। যুক্তরাষ্ট্র এবং ইসরায়েলের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সামরিক সম্পর্ক দীর্ঘদিনের। যা এই পরিস্থিতিতে রাশিয়ার উদ্বেগের একটি প্রধান কারণ।

ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচী নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলে সবসময়ই উদ্বেগ ছিল। ইসরায়েল দীর্ঘদিন ধরে অভিযোগ করে আসছে যে ইরান গোপনে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির চেষ্টা করছে। যদিও ইরান সবসময়ই তা অস্বীকার করে এসেছে এবং বলেছে তাদের পারমাণবিক কর্মসূচী শান্তিপূর্ণ উদ্দেশ্যে পরিচালিত হচ্ছে।

এই প্রেক্ষাপাপটে ইসরায়েলের ইরানের পারমাণবিক অবকাঠামোতে হামলা, পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে। রাশিয়ার আশঙ্কা, এই ধরনের হামলা যদি অব্যাহত থাকে, তাহলে তা পারমাণবিক ঝুঁকির দিকে ঠেলে দিতে পারে। এর ফলশ্রুতিতে আঞ্চলিক সংঘাত আরও তীব্র হতে পারে। যা বৈশ্বিক স্থিতিশীলতার জন্য হুমকি।

রাশিয়া মনে করেছে সংঘাত আরো বাড়লে এবং তৃতীয় কোন পক্ষ সরাসরি সামরিক সহয়তা নিয়ে কোন পক্ষের পাশে দাড়ালে মধ্যপ্রাচ্যের এই অস্থিরতা কেবল ইরান ইসরায়েলের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে না। এর প্রভাব বিশ্ব অর্থনীতি, জ্বালানি নিরাপত্তা এবং আন্তর্জাতিক রাজনীতিতেও পড়বে। রাশিয়া চায় এই সংঘাত দ্রুত শান্তিপূর্ণ সমাধানের দিকে এগোতে।

মারিয়া জাখারোভার "বিশ্ব এখন বিপর্যয়ের কিনারায়" মন্তব্যটি বর্তমান পরিস্থিতির ভয়াবহতা তুলে ধরেছে। এটি কেবল একটি আঞ্চলিক সংঘাত নয়, বরং এর বৈশ্বিক পরিণতি সম্পর্কে একটি স্পষ্ট সতর্কবাণী।

বর্তমানে, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এই পরিস্থিতিকে নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। জাতিসংঘের মতো আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোও উত্তেজনা কমানোর আহ্বান জানিয়েছে।

তবে, সংঘাতের তীব্রতা এর পেছনে থাকা দীর্ঘদিনের বৈরিতা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে। রাশিয়ার এই সতর্কবার্তা এমন এক সময়ে এলো, যখন বিশ্বের নজর মধ্যপ্রাচ্যের দিকে  এবং যুদ্ধরত দুই পক্ষ ছাড়াও বিশ্বের প্রভাবশালী রাষ্ট্রগুলোর প্রতিটি পদক্ষেপের ওপর নির্ভর করছে আঞ্চলিক বৈশ্বিক শান্তি।

#রাশিয়া