সনাতন ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম ধর্মীয় উৎসব সরস্বতী পূজা আজ। এ পূজা বিদ্যা ও সঙ্গীতের দেবী সরস্বতীর আরাধনাকে কেন্দ্র করে একটি অন্যতম ধর্মীয় উৎসব। তিথি অনুযায়ী সকাল থেকেই পূজার আনুষ্ঠানিকতা শুরু হবে। প্রথমে পুষ্পাঞ্জলি, এরপর প্রসাদ বিতরণ করে নানা অনুষ্ঠানের মাধ্যমে শেষ হবে।
শাস্ত্রীয় বিধান অনুসারে, মাঘ মাসের শুক্লাপঞ্চমী তিথিতে সরস্বতী পূজা অনুষ্ঠিত হয়। এ তিথি বসন্ত পঞ্চমী নামেও পরিচিত। বাংলাদেশে বর্ণাঢ্য আয়োজনের মধ্য দিয়ে বিদ্যা ও শিল্পকলার দেবী সরস্বতীর পূজা হয়ে থাকে। সারা দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এ পূজা অনুষ্ঠিত হয়।
সরস্বতী পূজা উপলক্ষে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন এবং প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।
রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন তার বাণীতে অসাম্প্রদায়িক, কল্যাণকর ও উন্নত সমাজ গঠনে দেশের মানুষকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।
প্রধান উপদেষ্টা, ৫ আগস্ট ছাত্র-শ্রমিক-জনতার অভূতপূর্ব অভ্যুত্থানের মাধ্যমে গঠিত অন্তর্বর্তীকালীন সরকার জাতি-ধর্ম-বর্ণ-গোষ্ঠী নির্বিশেষে সকলের ভাগ্য উন্নয়ন এবং সমান অধিকার সুনিশ্চিত করতে কাজ করে যাচ্ছে।
তিনি হিন্দু সম্প্রদায়ের সবাইকে জ্ঞানার্জনে ব্রতী হয়ে দেশের উন্নয়ন ও অগ্রযাত্রায় আত্মনিয়োগের আহ্বান জানান।
বিদ্যার দেবী সরস্বতীর আরাধনায় কমতি রাখেন না ভক্তরা। এবারও দেবীকে আরাধনায় পুরোদস্তুর প্রস্তুত হয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) জগন্নাথ হল।
সকাল থেকেই দেবীর আরাধনায় মাতবেন ভক্তরা। জগন্নাথ হল প্রশাসন জানায়, এবার ক্যাম্পাসজুড়ে ৭৩টি মণ্ডপে পূজা অনুষ্ঠিত হবে। পূজায় ধর্মবর্ণ নির্বিশেষে সবাইকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। এজন্য বেশ কয়েক স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থাও নিয়েছে কর্তৃপক্ষ। শিক্ষার্থীদের জন্য দেয়া হয়েছে ১০টি নির্দেশনা ও অতিথিদের জন্য ১৫টি নির্দেশনা।
গত শনিবার সন্ধ্যায় জগন্নাথ হলে প্রাধ্যক্ষের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান জগন্নাথ হলের প্রাধ্যক্ষ ও শ্রী শ্রী সরস্বতী পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি দেবাশীষ পাল।
তিনি জানান, গত ১ ফেব্রুয়ারি প্রতিমা স্থাপনের মাধ্যমে এ বছরের শ্রীশ্রী সরস্বতী পূজার আনুষ্ঠানিক পর্ব আরম্ভ হয়। এ বছর জগন্নাথ হল অভ্যন্তরে হল প্রশাসনের পূজাসহ ৭৩টি বিভাগ-ইনস্টিটিউটের ব্যবস্থাপনায় সরস্বতী পূজা অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। হল প্রশাসনের পূজা হলের উপাসনালয়ে এবং বিভাগ-ইনস্টিটিউটগুলোর পূজা হলের মাঠে স্থাপিত নিজস্ব মন্ডপে অনুষ্ঠিত হবে।
মণ্ডপের স্থান নির্ধারণ করা হয়েছে প্রত্যেক বিভাগ-ইনস্টিটিউটের পূজা কমিটির উপস্থিতিতে লটারির মাধ্যমে। পূজার সার্বিক কার্যক্রম তত্ত্বাবধানে হল প্রশাসনের মোট ১১টি উপ-কমিটি আন্তরিকভাবে কাজ করে যাচ্ছে।
ঐতিহ্যবাহী জগন্নাথ হলের উপাসনালয়ে দুইদিনব্যাপী এ আয়োজনের মধ্যে পুষ্পাঞ্জলি প্রদান, প্রসাদ বিতরণ, মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক সন্ধ্যা, রক্তদান কর্মসূচি, ইত্যাদি রয়েছে। এছাড়াও হলের অভ্যন্তরে দর্শনার্থী শিশু-কিশোরদের চিত্তবিনোদন উপযোগী বেশ কিছু রাইড, খেলনা ও বিশুদ্ধ খাবার দোকানের ব্যবস্থাও রাখা হচ্ছে।
জগন্নাথ হল ছাড়াও ঢাকার বেশ কয়েকটি জায়গায় সরস্বতী পূজা অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো, ঢাকেশ্বরী মন্দির, রমনা কালী মন্দির। এছাড়া এবার জাতীয় প্রেসক্লাবেও পূজা অনুষ্ঠিত হবে।