এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বাঁচান | মতামত নিউজ

এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বাঁচান

মার্চ মাস চলমান থাকলেও শিক্ষকরা এখন পর্যন্ত জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি মাসের বেতন পাননি। তাহলে কীভাবে তাদের সংসার চলে? রমজান মাস চলছে। শিক্ষকরা রমজান মাসের বাজার করতে পারেননি। আমরা জানি যে রমজান মাসে খরচ একটু বেশি। অথচ এখন পর্যন্ত শিক্ষকদের বেতন দেয়া হয়নি। অজুহাত ইএফটি। দৈনিক শিক্ষাডটকমে অনেকদিন আগেই দেখেছি জানুয়ারি মাসের বেতনের অনুমোদন দেয়া হয়েছে। তাহলে ইএফটিতে বেতন দিতে এতো দেরি কেনো করা হচ্ছে। এ সবই কি অজুহাত নয়? দীর্ঘ দুই মাস যাবৎ আপনারা শিক্ষকদের বেতন দিতে পারছেন না।

বর্তমানে বাংলাদেশে প্রায় সাড়ে চার লক্ষ এমপিওভুক্ত শিক্ষক বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কর্মরত আছেন। মানুষ গড়ার কারিগর এই শিক্ষকগুলো আর্থিকভাবে সচ্ছল নয়। বেশিরভাগ শিক্ষকদেরই ‘নূন আনতে পান্তা ফুরায়’ এ রকম অবস্থা। আমাদের বেতন ভাতাও খুব সামান্য। নামে মাত্র ঈদ উৎসব ভাতা দেয়া হয়। মূল স্কেলের সিকি ভাগ উৎসব ভাতা এখনো প্রচলিত আছে। এই বর্তমান দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির যুগে এ দিয়ে কী করা যায়, তা কি নীতি নির্ধারকরা কখনো ভেবে দেখেছেন?

ধরা যাক, একজন মাধ্যমিক স্কুল শিক্ষকের মূল বেতন ১২ হাজার টাকা। উৎসব ভাতা পাবেন তিন হাজার টাকা। এই তিন হাজার টাকা দিয়ে একজন শিক্ষক কী করবেন? না করতে পারবেন ঈদের বাজার, না কিনতে পারবেন ছেলেমেয়েদের জন্য কাপড়চোপড়, না কিনে দিতে পারবেন বউকে একটা শাড়ি। এমন হীন অবস্থায় থেকে একজন শিক্ষক কীভাবে তার মেধা দিয়ে শিক্ষার্থীদের উপযুক্ত করে গড়ে তুলবেন? জাতি গঠনের এই হাতিয়াররা যদি অভুক্ত-ক্ষুধার্ত থাকেন তবে কীভাবে ভালো একটি শিক্ষিত জাতি আশা করেন? অধিকন্তু এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা দীর্ঘদিন ধরে বেতন পাচ্ছেন না।

মার্চ মাস চলমান থাকলেও শিক্ষকরা এখন পর্যন্ত জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি মাসের বেতন পাননি। তাহলে কীভাবে তাদের সংসার চলে? রমজান মাস চলছে। শিক্ষকরা রমজান মাসের বাজার করতে পারেননি। আমরা জানি যে রমজান মাসে খরচ একটু বেশি। অথচ এখন পর্যন্ত শিক্ষকদের বেতন দেয়া হয়নি। অজুহাত ইএফটি। দৈনিক শিক্ষাডটকমে অনেকদিন আগেই দেখেছি জানুয়ারি মাসের বেতনের অনুমোদন দেয়া হয়েছে। তাহলে ইএফটিতে বেতন দিতে এতো দেরি কেনো করা হচ্ছে। এ সবই কি অজুহাত নয়? দীর্ঘ দুই মাস যাবৎ আপনারা শিক্ষকদের বেতন দিতে পারছেন না।

তাই এ কাজের সঙ্গে যারা জড়িত তাদের পদত্যাগ দাবি করছি। যারা যে কাজের জন্য উপযুক্ত নয়, যারা অযোগ্য তাদেরকে সে কাজের দায়িত্ব কেনো দেয়া হয়? শিক্ষকদের নিয়ে যারা এমন প্রহসন করে তাদের কেনো বিচার হয় না? আর ইএফটি নিয়েই যেনো কেমন গোঁজামিল শুরু হয়েছে। প্রথম ধাপ, দ্বিতীয় ধাপ এমন করে পঞ্চম ধাপ পর্যন্ত শুনেছি। আর কতো ধাপ ও কতোদিন হলে আপনারা শিক্ষকদের সব বকেয়া বেতন পরিশোধ করতে পারবেন? দয়া করে উপযুক্ত কর্তৃপক্ষ জানাবেন কি? জানি না এই অভিযোগটি আপনাদের চোখে পড়বে কি না।

কিন্তু যারা নীতিনির্ধারক আছেন তারা একটু ভেবে দেখবেন, আপনারাও একদিন কোনো না কোনো শিক্ষকের ছাত্র ছিলেন। তাই আপনারাই যদি শিক্ষকদের বেতন দিতে এতো বিলম্ব করেন তাহলে আপনাদের বিবেক বলতে কি কিছু আছে? অনেক সময় দেখা যায়, দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তার দায়িত্বহীনতা ও অলসতার কারণেও বেতন পেতে অনেক দেরি হয়ে যায়। সরকার তো আমাদের জন্য বেতনের বরাদ্দ রেখেছেন। তাহলে বেতন দিতে এতো দেরি হবে কেনো? এই অভিযোগটি পড়ার পর যদি কোনো হৃদয়বান ব্যক্তি থাকেন এবং তারা যদি তাদের নিজ নিজ ক্ষেত্র শিক্ষকদের জন্য অবদান রাখেন তবে আমরা তাদের জন্য প্রাণভরে দোয়া করবো।

লেখক: সহকারী অধ্যাপক

(মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নন)