রাজধানীর ব্যস্ততম সড়ক শাহবাগ মোড় ঘেরাওয়ের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন অষ্টাদশ শিক্ষক নিবন্ধনের চূড়ান্ত পরীক্ষায় ফেল করা প্রার্থীরা। তারা বলেছেন, আজকের মধ্যে তাদের ই-সনদ দেওয়া না হলে শাহবাগ ঘেরাও করবেন।
সোমবার (৭ জুলাই) বেলা ১২টার দিকে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন মো. ফরহাদ হোসেন নামের এক ফেল করা প্রার্থী। তিনি বলেন, সনদ দেওয়ার জন্য হাইকোর্ট আদেশ দিলেও বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষের (এনটিআরসিএ) চেয়ারম্যান মো. মফিজুল রহমান রিটের বিরুদ্ধে আপিল করবেন বলে জানিয়েছেন। আমরা এই আপিলের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাতে আজকের অবস্থান কর্মসূচি পালন করছি। আজকের মধ্যে ই-সনদ দেওয়া না হলে আন্দোলনের আতুরঘর শাহবাগ ঘেরাও করা হবে।
এদিকে হাইকোর্টের এই নির্দেশনার বিরুদ্ধে মিছিল করেছেন অষ্টাদশ শিক্ষক নিবন্ধনে উত্তীর্ণ প্রার্থীরা। রাজধানীর ইস্কাটন গার্ডেন রোডে অবস্থিত বোরাক টাওয়ারে এনটিআরসিএ কার্যালয়ের সামনে মানববন্ধন করেন তারা।
উত্তীর্ণ প্রার্থীরা বলেন, শিক্ষকতার মতো মহান পেশায় যদি অকৃতকার্যরা স্থান পায় তবে দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা প্রশ্নবিদ্ধ হবে। তাই যারা যোগ্যতার ভিত্তিতে ১৮তম শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হযেছেন। তাদের সবার নিয়োগ কার্যক্রম দ্রুত সম্পন্ন করে দেশের শিক্ষক সংকট দূর করা হোক।
গত ৪ জুন ১৮তম শিক্ষক নিবন্ধনের চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশ করা হয়। এতে ৬০ হাজার ৫২১ জন প্রার্থীকে উত্তীর্ণ ঘোষণা করা হয়। পরে ২৩ জুন সংশোধিত ফলাফলে আরও ১১৩ জনকে উত্তীর্ণ দেখানো হয়।
এনটিআরসিএ জানিয়েছে, ২০২৫ খ্রিষ্টাব্দের ২৩ মার্চ অনুষ্ঠিত পরীক্ষার ফল কারিগরি ত্রুটির কারণে প্রথমে অন্তর্ভুক্ত হয়নি। ফল পুনঃপরীক্ষা ও যাচাইয়ের পর সংশোধিত ফল প্রকাশ করা হয়। এরপরই ফলাফলে অসঙ্গতি ও বৈষম্যের অভিযোগে আন্দোলন শুরু করেন অকৃতকার্য হওয়া অনেক প্রার্থী।
তারা দাবি করেন, ভাইভা পরীক্ষায় অংশ নিয়ে ভালো ফল করার পরও অনেকে অনুত্তীর্ণ হয়েছেন। বিশেষ করে বোর্ড ভিত্তিক ফলাফলে ব্যাপক তারতম্যের অভিযোগ ওঠে। একাধিক বোর্ডে ৩০ জনের মধ্যে ১ থেকে ৩ জন পাস করেছেন। অন্যদিকে কিছু বোর্ডে ২৯ জনও পাস করেছেন- যা নিয়ে চাকরি প্রত্যাশীরা ফলের স্বচ্ছতা ও ন্যায্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।
ফলাফল প্রকাশের পর আন্দোলনরত প্রার্থীদের একটি প্রতিনিধি দল শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা কার্যালয়ে বৈঠকে অংশ নেন। সেখানে এনটিআরসিএর প্রধান উপদেষ্টার সহকারী সচিব তাদের দাবি শোনেন এবং বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সমন্বয়ের আশ্বাস দেন। তবে আন্দোলনকারীরা আশ্বস্ত না হয়ে ফলাফল পুনর্বিবেচনা না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।