ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) হঠাৎ করেই বেড়েছে বিষধর সাপের উপদ্রব। এতে আতঙ্ক বিরাজ করছে শিক্ষার্থীদের মাঝে।
তবে নিয়মিত ক্যাম্পাসের ঝোপঝাড় পরিষ্কার না করায় সাপের এমন উপদ্রব বাড়ছে বলে জানা যায়।
এ দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিক্যাল এন্টভেনম থাকলেও ব্যবহারের অনুমতি না থাকায় সেগুলো নষ্ট হয়ে যাচ্ছে বলে জানান বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান মেডিক্যাল অফিসার।
ক্যাম্পাস সূত্রে জানা যায়, কিছুদিন থেকেই বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বিষধর সাপের উপদ্রব বেড়ে গেছে। ক্যাম্পাসের আবাসিক হলসমূহ, শিক্ষার্থীদের কক্ষে, একাডেমিক ভবনের আশেপাশে ও চলাচলের রাস্তায় প্রায় প্রতিদিন সাপের দেখা মিলছে।
আবাসিক হল থেকে বিষধর পাতি কাল কেউটে, কালাচ বা দেশি কালাচ সাপসহ বিভিন্ন বিষধর সাপ উদ্ধার করেছেন শিক্ষার্থীরা। যা শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন করে তুলেছে।
তবে শিক্ষার্থীদের অভিযোগ আবাসিক হলের আশেপাশের ও রাস্তার দুই পাশের জঙ্গল নিয়মিত পরিষ্কার না করায় এসব সাপ সেখানে আস্তানা তৈরি করছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আরিফ হোসেন বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন জায়গায় বিষধর সাপ দেখা যাচ্ছে। হলের রুমের সামনে থেকেও আমরা সাপ মেরেছি। প্রায় সময়েই সাপ দেখা যায়। আবাসিক হল এলাকায় এমন ঘটনায় আমরা শঙ্কিত।
এ ছাড়া ক্যাম্পাসের ঝোপঝাড়গুলোও নিয়মিত পরিষ্কার করা হয় না। এগুলো নিয়মিত পরিষ্কার করলে সাপ ও মশার উপদ্রব থেকে কিছুটা রক্ষা পাওয়া যায়। তাই শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রশাসনের দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।
এ দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিক্যাল সূত্রে জানা যায়, মেডিক্যাল সেন্টারে সাপে কাটার প্রতিরোধক এন্টিভেনম থাকলেও তা ব্যবহারের নেই অনুমতি।
প্রায় ১০ বছর আগে মেডিক্যাল সেন্টারে ১২টির মতো এন্টিভেনম ক্রয় করা হয়েছিলো। তবে সেগুলো ব্যবহারের অনুমতি না থাকায় ১টি ছাড়া বাকি এন্টিভেনম নষ্ট হয়ে গেছে। এতে বিশ্ববিদ্যালয় মেডিক্যালের প্রায় সতেরো হাজার টাকা নষ্ট হয়েছে বলে জানা যায়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান মেডিক্যাল অফিসার ডা. সিরাজুল ইসলাম বলেন, ইবি মেডিক্যাল এন্টিভেনম প্রয়োগের সুযোগ নেই। মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল ছাড়া এটি ব্যবহার সরকারিভাবে নিষেধ।
তাছাড়া একজনকে সাপে কামড় দিয়ে দিলেই এন্টিভেনম দেওয়া যাবে না, বিষাক্ত সাপের দংশন ছাড়া এটি দেওয়া হলে রোগী মারাও যেতে পারে। কার্ডিয়াক সাপোর্টসহ বিভিন্ন টেস্ট শেষে এন্টিভেনম ব্যবহার করতে হয়।
কোনো শিক্ষার্থী সর্পদংশিত হয়ে মেডিক্যালে আসলে আমরা তাকে স্যালাইন, ক্যানেলসহ সাপোর্টিভ ট্রিটমেন্ট দিয়ে কুষ্টিয়া মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়ে দিব।
তিনি আরও জানান, প্রায় ১০ বছর আগে থেকেই আমাদের কিছু এন্টিভেনম আছে। যেগুলোর একটি বাদে বাকি ১০-১২টার মেয়াদ শেষ হয়ে গিয়েছে। যার মূল্য প্রায় ১৭ হাজার টাকা।
এখানে এন্টিভেনম দেওয়ার স্কোপ নেই তাই আমরাও নতুন করে আর নিয়ে আসিনি। বিগত সময়ে আমরা প্রশাসনকে এন্টিভেনমের কথা বলেছিলাম।
প্রশাসন যখন দেখেছে যে এখানে এন্টিভেনম দেওয়ার সুযোগ নেই তখন আর কন্টিনিউ করেনি।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের এস্টেট অফিস প্রধান মোহা. আলাউদ্দিন বলেন, ক্যাম্পাস পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে আমরা সর্বদা কাজ করে যাচ্ছি। গুচ্ছ পরীক্ষা উপলক্ষে একাডেমিক ভবনসহ সবগুলো ভবনের আশেপাশে আগাছা-জঙ্গল পরিষ্কার করা হয়েছে।
পরিষ্কারের কাজ দ্রুত করার জন্য নতুন আরও কিছু মেশিন বৃদ্ধি করা হয়েছে। প্রশাসন সহায়তা করলে আমরা আগাছা নির্মুল করে ক্যাম্পাসকে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে পারবো।
এছাড়া আমাদের কিছু লোকবল সংকট রয়েছে তাই নিয়মিত পরিষ্কার করা সম্ভব হয় না।