২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে আয়কর রিটার্ন দাখিল সংক্রান্ত নিয়মে বড় ধরনের পরিবর্তন আনতে যাচ্ছে সরকার। এখন থেকে ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত সঞ্চয়পত্র কিনতে, ক্রেডিট কার্ড নিতে কিংবা ট্রেড লাইসেন্স গ্রহণে আয়কর রিটার্ন জমার বাধ্যবাধকতা শিথিল করা হয়েছে।
এতদিন ৪৬টি সেবা গ্রহণে রিটার্ন জমার প্রমাণপত্র বাধ্যতামূলক ছিল। নতুন প্রস্তাব অনুযায়ী, ১১ ধরনের সেবার ক্ষেত্রে এখন শুধু টিআইএনধারীদের জন্য সিস্টেম জেনারেটেড প্রত্যয়নপত্রই যথেষ্ট হবে। এর ফলে আয়কর প্রদানে অনুপ্রেরণা বাড়ার পাশাপাশি সেবাগ্রহীতারা প্রশাসনিক জটিলতা থেকেও মুক্তি পাবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
যেসব সেবায় রিটার্ন জমার প্রমাণপত্র লাগবে না
>> নতুন ট্রেড লাইসেন্স গ্রহণ (সিটি করপোরেশন বা পৌরসভা এলাকায়)
>> সমবায় সমিতি নিবন্ধন
>> সাধারণ বিমার সার্ভেয়ারদের নতুন লাইসেন্স
>> ক্রেডিট কার্ড গ্রহণ ও নবায়ন
>> চিকিৎসক, আইনজীবী, প্রকৌশলীসহ স্বীকৃত পেশাজীবীদের সদস্যপদ গ্রহণ
>> ৫ লাখ টাকার বেশি পোস্ট অফিস সঞ্চয়ী হিসাব খোলা
>> দশম গ্রেড বা তদূর্ধ্ব পদমর্যাদার সরকারি কর্মচারীর অর্থ গ্রহণ (এমপিওভুক্তির মাধ্যমে)
>> মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসের মাধ্যমে টাকা স্থানান্তর ও কমিশন গ্রহণ (সাধারণ করদাতাদের জন্য)
>> স্ট্যাম্প ও কোর্ট পেপারের ভেন্ডর বা দলিল লেখক লাইসেন্স
>> ত্রিচক্র মোটরযান নিবন্ধন ও ফিটনেস নবায়ন
>> ই-কমার্স লাইসেন্স (ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে)
যেসব সেবায় এখনও রিটার্ন জমার প্রমাণপত্র বাধ্যতামূলক
>> ২০ লাখ টাকার বেশি ঋণ গ্রহণ
>> কোম্পানির পরিচালক বা শেয়ারহোল্ডার থেকে
>> আমদানি-রফতানির লাইসেন্স গ্রহণ ও নবায়ন
>> ট্রেড লাইসেন্স নবায়ন
>> পেশাজীবী সদস্যপদ নবায়ন
>> সম্পত্তি বিক্রয়, লিজ, হস্তান্তর বা নিবন্ধন
>> আবাসিক গ্যাস ও বিদ্যুৎ সংযোগ
>> বড় অঙ্কের সঞ্চয়পত্র বা মেয়াদি আমানত
>> সরকারি বা বেসরকারি উচ্চ পদমর্যাদায় বেতন-ভাতা গ্রহণ
>> বিমা, পরিবেশ ছাড়পত্র, অস্ত্র বা ড্রাগ লাইসেন্স
>> বিল অব এন্ট্রি, টেন্ডার ডকুমেন্টস, পণ্য সরবরাহে অর্থ প্রাপ্তি
>> হোটেল, ক্লিনিক, কনভেনশন হল, রেস্টুরেন্ট পরিচালনায় লাইসেন্স
>> নির্বাচনে অংশগ্রহণ
>> বাড়িভাড়া প্রদান বা গ্রহণ
>> ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে ভর্তি
>> এনজিও ও ক্ষুদ্রঋণ সংস্থার বিদেশি অনুদান ছাড়
বাজেট বিশ্লেষকদের মতে, এই সংস্কারের ফলে করনীতিতে নমনীয়তা আসবে এবং নতুন করদাতাদের অন্তর্ভুক্তিতে সহায়ক হবে। তবে যেসব খাতে উচ্চ লেনদেন বা সম্পদ স্থানান্তর জড়িত, সেখানে রিটার্ন দাখিলের বাধ্যবাধকতা রেখে রাজস্ব সুরক্ষা নিশ্চিত করার চেষ্টা করা হয়েছে।