সাউথইস্ট ব্যাংকের ফেনীর একটি শাখা থেকে ‘কয়েক কোটি’ টাকা নিয়ে জিয়াউল হক নামের এক ব্যাংক কর্মকর্তা লাপাত্তা হয়ে গেছেন বলে অভিযোগ করেছেন গ্রাহকরা।
ব্যাংক সূত্র জানায়, জিয়াউল হক এ শাখায় জুনিয়র অফিসার হিসেবে রেমিট্যান্স শাখায় কাজ করেন। গত ৪ মে ঢাকা থেকে ব্যাংকের অডিট টিমের প্রধান অ্যাসিস্ট্যান্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট রেজাউল কবিরের নেতৃত্বে ৫ সদস্যের একটি টিম শাখায় এলে জিয়াউল হঠাৎ উধাও হয়ে যান।
জানা গেছে, ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দে শাখা উদ্বোধনের পর থেকেই কর্মরত রয়েছেন ফেনীর ছাগলনাইয়া উপজেলার পাঠান নগরের বাসিন্দা জিয়াউল হক। তার কর্মস্পৃহা ও যোগাযোগ দক্ষতায় ফেনী-নোয়াখালী আঞ্চলিক মহাসড়কের পাশে চালু হওয়া এ শাখাটি গ্রাহকবান্ধব হয়ে ওঠে।
কিন্তু কয়েক মাস ধরে তিনি গ্রাহকদের টাকা নিয়ে টালবাহানা শুরু করেন। সর্বশেষ রোববার ব্যাংকের অভ্যন্তরীণ অডিট টিম ওই শাখায় কাজ শুরু করলে তিনি পালিয়ে যান।
ব্যাংকের শাখা ব্যবস্থাপক কামরুজ্জামান বলেন, অডিট টিম আসার কথা জানতে পেরে জিয়াউল উধাও হয়ে গেছেন। বিষয়টি তদন্তাধীন রয়েছে।
তাই এ বিষয়ে এ মুহূর্তে কোনো মন্তব্য করা সঠিক হবে না। অডিটের পরই প্রকৃত সত্য জানা যাবে।
এ দিকে সোমবার বিষয়টি জানাজানি হলে ব্যাংকের গ্রাহক ও জিয়াউল হকের কাছে পাওনাদার ব্যক্তিরা শাখায় এসে ক্ষোভ জানান। অনেক গ্রাহক ব্যাংকে এসে তাদের হিসাবের স্থিতি চেক করতে ভিড় জমান।
গ্রাহকদের ধারণা, আরটিজিএসের মাধ্যমে তিনি রেমিট্যান্সের কোটি টাকা নিয়ে পালিয়ে গেছেন।
গ্রাহক প্রবাসী শফি উল্লার স্ত্রী জোসনা বেগম জানান, ব্যাংকের এ শাখার মাধ্যমে ১৬ লাখ টাকা বিদেশ থেকে তার স্বামী রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন।
ব্যাংকের কর্মকর্তা জিয়াউল হক পালিয়ে গেছেন শুনে টাকা উঠিয়ে নিতে ব্যাংকে এসে টাকা উঠাতে পারেননি। এ অবস্থায় তিনি দুশ্চিন্তায় পড়েছেন।
আজাদ নামের এক গ্রাহক জানায়, আমি দীর্ঘদিন ধরে কর্মকর্তা জিয়াউল হককে দিয়ে আরটিজিএসের মাধ্যমে টাকা লেনদেন করতাম। তার কাছে আমার ৪০ লাখ টাকা রয়েছে।
সোমবার ব্যাংকে এসে দেখি জিয়াউল নেই। সে নাকি পালিয়ে গেছে। ম্যানেজারকে বিষয়টি জানালে তিনি আমাকে ধৈর্য ধরতে অনুরোধ করেন।
এ বিষয়ে জানতে জিয়াউল হকের মোবাইলে একাধিকবার কল করা হলেও তা বন্ধ পাওয়া যায়। তার অবস্থানের বিষয়ে ব্যাংকের কোনো কর্মকর্তাও তথ্য জানাতে পারেননি।
বিষয়টি সম্পর্কে সাউথইস্ট ব্যাংক লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) আব্দুর রহমান চৌধুরী বলেন, বিষয়টি নিয়ে এরই মধ্যে অডিট কার্যক্রম শুরু হয়েছে। চূড়ান্ত প্রতিবেদন পেলেই বিস্তারিত তথ্য জানানো যাবে।
তবে তিনি গ্রাহকদের আশ্বস্ত করে বলেন, গ্রাহকদের অর্থের দায়ভার ব্যাংকের নিজস্ব বিষয়। এ ঘটনায় গ্রাহকদের বিচলিত হওয়ার কোনো কারণ নেই। দ্রুত বিষয়টির সমাধান করা হবে।