প্রতীকী ছবি
হিজরি বর্ষের অত্যন্ত গুরুত্ব মাস জিলহজ। এই মাসে পবিত্র হজ অনুষ্ঠিত হয়। এ মাসের সবচেয় বড় আমল পবিত্র হজ। দ্বিতীয় বড় আমল কোরবানি। কিন্তু দুটি আমলই অর্থ সংশ্লিষ্ট। যাদের অর্থ ও সামর্থ্য নেই তাদের পক্ষে এই দুটি আমল করা সম্ভব নয়। তাই বলে তারা সাওয়াব থেকে বঞ্চিত হবে? না। জিলহজ মাসের আরো কিছু আমল আছে যা যেকোনো মুসলমান পালন করতে পারে। তন্মধ্যে কিছু আমলের কথা এখানে আলোচনা করা হলো:
রোজা রাখা: জিলহজ মাসের ১ তারিখ থেকে ৯ তারিখ পর্যন্ত রোজা রাখা। রাসুলুল্লাহ (সা.) জিলহজের প্রথম নয়দিন রোজা রাখতেন। জনৈক উম্মুল মুমিনিন থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) জিলহজ মাসের নয় তারিখ পর্যন্ত, আশুরার দিন, প্রত্যেক মাসে তিনদিন, মাসের প্রথম সোমবার ও বৃহস্পতিবার রোজা রাখতেন। (সুনানে আবু দাউদ: ২৪৩৭)
কারো পক্ষে নয়দিন রোজা রাখা সম্ভব না হলে অন্তত আরাফার দিন অর্থাৎ নয় জিলহজ রোজা রাখবে। হজরত কাতাদাহ (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, আরাফার দিনের (নয় জিলহজের) রোজার বিষয়ে আমি আল্লাহর কাছে প্রত্যাশা করি যে, (এর দ্বারা) আগের এক বছরের এবং পরের এক বছরের গুনাহসমূহ ক্ষমা করে দেবেন। (সহিহ মুসলিম: ১১৬২)
নখ, চুল ও পশম না কাটা: জিলহজ মাসের আরেকটি আমল হলো চুল, নখ, গোফ, দাড়ি ও শরীরের অবাঞ্ছিত পশম না কাটা। হজরত উম্মে সালামা (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী কারীম (সা.) বলেছেন, যখন জিলহজের দশক শুরু হবে তখন তোমাদের মধ্যে যে কোরবানি করবে সে যেন তার চুল নখ না কাটে। (সহিহ মুসলিম: ১৯৭৭)
এই হাদিস দ্বারা বুঝা যায় যারা কোরবানি করবে কেবল তারা চুল ও নখ কাটবে না। অন্য হাদিস থেকে বুঝা যায় যারা কোরবানি করবে না, তারাও নখ ও চুল কাটবে না এবং এর দ্বারা তারা কোরবানির সাওয়াব পাবে।
হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে আমর ইবনে আস (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী কারীম (সা.) বলেছেন, আমাকে কোরবানির দিনে দিবসে ঈদ (পালনের) আদেশ করা হয়েছে, যা আল্লাহ এ উম্মতের জন্য নির্ধারণ করেছেন। এক সাহাবি আরজ করলেন, ইয়া রাসুলাল্লাহ! যদি আমার কাছে শুধু একটি দুগ্ধবতী বা মালবাহী পশু ছাড়া আর কিছু না থাকে তাহলে আমি কি তা কোরবানি করব? নবী কারীম (সা.) বললেন, না, তবে তুমি চুল, নখ ও গোঁফ ছোট করবে এবং নাভীর নিচের পশম পরিষ্কার করবে। এটাই আল্লাহর দরবারে তোমার পূর্ণ কোরবানি বলে গণ্য হবে।(সুনানে আবু দাউদ: ২৭৮৯)
এই হাদিসে যেহেতু কোরবানির দিন চুল-নখ কাটার কথা আছে তাহলে এর আগে না কাটার দিকে ইঙ্গিত বুঝা যায়। সুতরাং জিলহজের চাঁদ উদয়ের পর থেকে চুল ও নখ না কাটার চেষ্টা করব।
লেখক: আলেমা উম্মে হাবিবা