শিক্ষকের মৃত্যুসনদ নিতে ঘুষ, গণশুনানিতে কাঁদলেন ভুক্তভোগী | বিবিধ নিউজ

শিক্ষকের মৃত্যুসনদ নিতে ঘুষ, গণশুনানিতে কাঁদলেন ভুক্তভোগী

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) মঙ্গলবার স্কুল-কলেজের শিক্ষক, মসজিদের ইমাম, বাজার কমিটির নেতাদের সঙ্গে গণশুনানির আয়োজন করে।

#শিক্ষক #ঢাকা

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) মঙ্গলবার স্কুল-কলেজের শিক্ষক, মসজিদের ইমাম, বাজার কমিটির নেতাদের সঙ্গে গণশুনানির আয়োজন করে। এসময় সাত্তার চৌধুরী নামের একজন শিক্ষকের মৃত্যু সনদের জন্য সাত হাজার টাকা ঘুষ দিতে হয়েছে বলে কাঁন্নায় ভেঙে পড়েন।

তিনি বলেন, সিটি করপোরেশনকে নিয়মিত রাজস্ব দেন তবুও পান না কাঙ্ক্ষিত সেবা।

নাগরিক সেবা সংক্রান্ত বিষয়ে ১৮টি ওয়ার্ডের বাসিন্দাদের নিয়ে এই গণশুনানির আয়োজন করে ডিএনসিসি।

আবদুর সাত্তার চৌধুরী বলেন, ফি নিয়ে একটি জটিলতার কারণে তিন বছর ধরে ট্রেড লাইসেন্স করাতে পারছেন না তিনি। এ বিষয়ে আঞ্চলিক অফিস থেকে কোনো সহযোগিতাও পাচ্ছেন না। তিনি অভিযোগ করেন, জন্ম নিবন্ধন ও মৃত্যু সনদ নিতে চরম হয়রানির শিকার হতে হয় মানুষকে।

‘সম্প্রতি আমার স্কুলের শিক্ষক মারা গেছেন। সেখানে মৃত্যু সনদ আনতে গিয়ে আমাকে সাত হাজার টাকা ঘুষ দিতে হয়েছে। জন্মনিবন্ধন করাতে গেলে ফি লেখা আছে ৫০ টাকা বা ১০০ টাকা। কিন্তু আপনি যান, দেখবেন আপনার কাছে ২০০, ৩০০ টাকা চেয়ে বসে থাকে।’ এসব কথা বলতে গিয়ে এক পর্যায়ে কেঁদে ফেলেন তিনি।

৫৩ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা আশরাফুল হক অভিযোগ করেন, সিটি করপোরেশনের কর্মচারীদের কারণে হোল্ডিং ট্যাক্স আদায় হচ্ছে কম। ‘হোল্ডিং ট্যাক্স ঠিকমতো আসছে না, এর মূল কারণ ঘুষ বাণিজ্য। এটা বাংলাদেশের একটা মহা সমস্যা। ঘুষ বাণিজ্যের কারণে আমরা ট্যাক্স দিচ্ছি না। দেখা গেছে ৩ লাখ টাকার ট্যাক্স ৫০ হাজার টাকা ঘুষ দিলে ১ লাখ ২০ হাজার করে দিচ্ছে।’

৪৩ নম্বর ওয়ার্ডের তলনা এলাকার বাসিন্দা আবু সাঈদ মিয়া গণশুনানিতে বলেন, ওয়ার্ডের বাসিন্দা হিসেবে তারা ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দ থেকে সিটি করপোরেশনকে কর দিচ্ছেন। কিন্তু সেবা পাচ্ছেন না।

‘২০১৮ খ্রিষ্টাব্দ থেকে আমরা সিটি করপোরেশনে, এখন ২০২৫ খ্রিষ্টাব্দ চলে। সিটি করপোরেশন ১৮টি ওয়ার্ডে দৃশ্যমান কোনো উন্নয়ন দেখাতে পেরেছে? ট্যাক্স নিচ্ছেন কিন্তু আমাদের কী সেবা দিচ্ছেন?’

সাদেক আহমেদ রিপন নামের একজন বলেন, আশকোনার মদিনা টাওয়ার থেকে দক্ষিণখান পর্যন্ত আব্বাসিয়া সড়কের একটি অংশ এখনও পানিতে ডুবে থাকে। পানি এত নোংরা যে লোকজন নামাজ পড়তে যেতে পারছে না, বাচ্চারা স্কুলে যেতে পারে, প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটে।

‘দক্ষিণখানের কোথাও কোনো পানি নাই। কিন্তু আমাদের ওই রাস্তা এখনও পানির নিচে। বর্ষার আগেই আমাদের ওই সড়কে বর্ষা চলছে। আমরা চাই ওই রাস্তাটি চলাচলযোগ্য করা হোক।’

গুলশানে ডিএনসিসি নগর ভবনের হলরুমে আয়োজিত গণশুনানিতে উপস্থিত ছিলেন প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ। তিনি বলেন, ১৮টি ওয়ার্ড যুক্ত হওয়ায় ডিএনসিসির আকার বেড়েছে, কিন্তু লোকবল না বেড়ে আগের চেয়ে বরং কমেছে। এতে কাঙ্ক্ষিত সেবা দিতে পারছেন না তারা।

#শিক্ষক #ঢাকা