সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার কৃষ্ণাদিঘী তালিমুন নিসা মহিলা হাফিজিয়া মাদরাসার এক ছাত্রীর (১১) ন্যাড়া করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে শিক্ষক হাফেজ মাওলানা মো. আব্দুল মারুফের বিরুদ্ধে। গত ২২ মে দুপুরে এ ঘটনা ঘটে। এরপর থেকে শিশুটি মাদরাসায় যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছে। ওই ছাত্রী উপজেলার বোয়ালিয়া গ্রামের এক ভ্যানচালকের মেয়ে।
গ্রামবাসীরা জানান, শিশুটির বাবা-মা তার চুলের যত্ন নিয়ে কোমর পর্যন্ত লম্বা করে রেখেছিলেন। খোঁপা বাঁধলে তার চুল মাথার চেয়ে বড় দেখাত। শিক্ষকের এই কাণ্ডে তারা হতবাক ও ক্ষুব্ধ।
শিশুটির সহপাঠীরা জানায়, ন্যাড়া করার সময় শিশুটির মাথা কেটে রক্তক্ষরণ হয়। সে আতঙ্কে জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। তারাই মাথায় পানি ঢালে। পরে বড়রা তাকে উদ্ধার করে তাড়াশ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন।
শিশুটি জানায়, মঙ্গলবার দুপুরে মাদরাসার বড় হুজুরের নির্দেশে একজন মহিলা শিক্ষিকা উকুনের অজুহাতে তার চুল জোরপূর্বক কাটেন। এরপর হাফেজ মাওলানা মো. আব্দুল মারুফ শ্যাম্পু এনে তাকে ধরে মাথা ন্যাড়া করেন। এ সময় মাথা কেটে রক্ত ঝরলে সে জ্ঞান হারায়।
শিশুটির মা বলেন, খাবার পৌঁছে দিতে গিয়ে দেখি মেয়ের মাথা ন্যাড়া, রক্ত ঝরছে। চিৎকার করে আমিও জ্ঞান হারাই।
ভ্যানচালক বাবা বলেন, ভ্যান চালিয়ে সংসার চালাই। মেয়ের চুলের যত্নে দুই ধরনের তেল কিনে দিতাম। আমাদের না জানিয়ে মাথা ন্যাড়া করা হয়েছে। মাদরাসা থেকে খোঁজ নেয়নি, উল্টো মেয়েকে বের করে দেওয়ার হুমকি দিয়েছে। আমি এর বিচার চাই।
স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. সোলেমান আলী জানান, এ ঘটনায় শনিবার গ্রামে সালিশ বৈঠক হবে।
মাদরাসার শিক্ষক মাওলানা আব্দুল মারুফ দাবি করেন, তাছলিমার মাথা সহপাঠীরা ন্যাড়া করেছে।
তাড়াশ উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মো. আব্দুস সালাম বলেন, ঘটনার সত্যতা পেলে শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তাড়াশ থানার ওসি মো. জিয়াউর রহমান জানান, খোঁজ নিয়ে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. নুরুল ইসলাম বলেন, লিখিত অভিযোগ পেলে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।