প্রতিবন্ধী বিদ্যালয় এমপিওভুক্তির দাবি শিক্ষক-কর্মচারীদের | স্কুল নিউজ

প্রতিবন্ধী বিদ্যালয় এমপিওভুক্তির দাবি শিক্ষক-কর্মচারীদের

‘১৫ বছর ধরে বিনা বেতনে প্রতিবন্ধী শিশুদের পাঠদান করে যাচ্ছি। কোনো বেতন–ভাতা সরকার থেকে পাই না। স্ত্রী-সন্তান নিয়ে অত্যন্ত মানবেতর জীবন কাটছে। অন্য চাকরিতে যাওয়ার মতো বয়স ও শারীরিক সক্ষমতা নেই। প্রতিবন্ধীদের কল্যাণে কাজ করার লক্ষ্যে শিক্ষকতা শুরু করেছিলাম। সরকার স্বীকৃতি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েও দিচ্ছে না। এটা আমাদের জন্য অনেক কষ্টের।’

#এমপিও #প্রতিবন্ধী বিদ্যালয় #শিক্ষক #কর্মচারী

১৫ বছর ধরে প্রতিবন্ধী শিশুদের পাঠদান করছেন নিখিল চক্রবর্তী। তবে সরকারিভাবে তিনি কোনো বেতন–ভাতা পান না। এর ফলে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে মানবেতর জীবন কাটছে তার। যশোর, মাগুরা, নড়াইল ও ঝিনাইদহের বিভিন্ন প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মচারীদেরও একই অবস্থা। প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়ের স্বীকৃতি ও এমপিওভুক্তির দাবিতে আজ তারা মানববন্ধন করেছেন। এ ছাড়া একই দাবিতে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধান উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছেন।

বুধবার (২ জুলাই) সকাল সাড়ে ১০টায় প্রেসক্লাব যশোরের সামনে যশোর, মাগুরা, নড়াইল ও ঝিনাইদহের বিভিন্ন প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়ে অন্তত ৬০০ শিক্ষক-কর্মচারী ও অভিভাবকেরা মানববন্ধন করেন। পরে তারা জেলা প্রশাসক আজহারুল ইসলামের কাছে স্মারকলিপি দেন। এ সময় জেলা প্রশাসক তাদের আশ্বাস দেন, এটি যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠাবেন।

নিখিল চক্রবর্তী মনিরামপুর অটিস্টিক ও প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক। স্মারকলিপি দেওয়ার সময় তিনি বলেন, ‘১৫ বছর ধরে বিনা বেতনে প্রতিবন্ধী শিশুদের পাঠদান করে যাচ্ছি। কোনো বেতন–ভাতা সরকার থেকে পাই না। স্ত্রী-সন্তান নিয়ে অত্যন্ত মানবেতর জীবন কাটছে। অন্য চাকরিতে যাওয়ার মতো বয়স ও শারীরিক সক্ষমতা নেই। প্রতিবন্ধীদের কল্যাণে কাজ করার লক্ষ্যে শিক্ষকতা শুরু করেছিলাম। সরকার স্বীকৃতি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েও দিচ্ছে না। এটা আমাদের জন্য অনেক কষ্টের।’

বাংলাদেশ প্রতিবন্ধী বিদ্যালয় সমন্বয় পরিষদ যশোর কমিটির উদ্যোগে এ কর্মসূচির আয়োজন করা হয়। এ সময় শিক্ষক, কর্মচারী ও অভিভাবকেরা বিভিন্ন দাবি–সংবলিত প্ল্যাকার্ড হাতে স্লোগান দেন। তারা বলেন, ‘দাবি মোদের একটাই, প্রতিবন্ধী বিদ্যালয় এমপিও চাই’, ‘প্রতিবন্ধী অবহেলা নয়’, ‘ন্যায্য অধিকার চাই, প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের অধিকার চাই’।

মানববন্ধনে সংগঠনটির যশোর শাখার সাধারণ সম্পাদক আবদুল হামিদ বলেন, ‘আমরা সারা দেশে প্রতিবন্ধী বিদ্যালয় ও পুনর্বাসন কেন্দ্রগুলোর মাধ্যমে অন্তত ১০ বছর ধরে প্রতিবন্ধী শিক্ষা, থেরাপি ও জীবন দক্ষতা কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছি। কিন্তু প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়গুলো স্বীকৃতি ও অনুমোদনে সরকার উদ্যোগ নিচ্ছে না।’ শিক্ষকদের যৌক্তিক দাবি মানা না হলে বৃহত্তর আন্দোলন কর্মসূচি গড়ে তোলা হবে বলে জানান তিনি।

মানববন্ধনে জানানো হয়, যশোরে প্রায় ১২ হাজার প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীর জীবনমান পরিবর্তন ও শিক্ষাদানে ১ হাজার ২০০ শিক্ষক-কর্মচারী রয়েছেন। আর সারা দেশে প্রতিবন্ধীদের ১ হাজার ৭৭২টি অস্বীকৃত বিদ্যালয় রয়েছে। এসব বিদ্যালয়ে প্রায় দুই লাখ নানা ধরনের প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী অধ্যয়ন করছে। এখানে শিক্ষক-কর্মচারীর সংখ্যা প্রায় ৬০ হাজার। এমপিওভুক্ত না হওয়ায় এসব শিক্ষক–কর্মচারী আর্থিকভাবে দুরবস্থার মধ্য দিয়ে দিনযাপন করছেন। অনেকে দীর্ঘদিন বিনা বেতনে কাজ করছেন। তারা বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন।

মানববন্ধনে বক্তব্য দেন সংগঠনের যশোর জেলা শাখার সভাপতি রাজু আহমেদ, সহসভাপতি আবদুল সালাম, সহসম্পাদক মুক্তারুজ্জামান, প্রচার সম্পাদক মমতাজ খাতুন প্রমুখ। পরে তারা একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করে জেলা প্রশাসনের কার্যালয় চত্বরে যান।

শিক্ষাসহ সব খবর সবার আগে জানতে দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গেই থাকুন। ভিডিয়োগুলো মিস করতে না চাইলে এখনই দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন এবং বেল বাটন ক্লিক করুন। বেল বাটন ক্লিক করার ফলে আপনার স্মার্ট ফোন বা কম্পিউটারে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভিডিওগুলোর নোটিফিকেশন পৌঁছে যাবে।

দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেল SUBSCRIBE করতে ক্লিক করুন।

#এমপিও #প্রতিবন্ধী বিদ্যালয় #শিক্ষক #কর্মচারী