পদ পেতে শিক্ষকরা শিক্ষকতার চেয়ে রাজনীতি বেশি করে: অধ্যাপক মামুন | বিশ্ববিদ্যালয় নিউজ

পদ পেতে শিক্ষকরা শিক্ষকতার চেয়ে রাজনীতি বেশি করে: অধ্যাপক মামুন

পদ পাওয়ার জন্য শিক্ষকরা শিক্ষকতার চেয়ে রাজনীতি বেশি করে বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক কামরুল হাসান মামুন।

#শিক্ষক #শিক্ষার্থী

পদ পাওয়ার জন্য শিক্ষকরা শিক্ষকতার চেয়ে রাজনীতি বেশি করে বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক কামরুল হাসান মামুন।

রোববার (১ জুন) নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডিতে দেওয়া এক পোস্টে অধ্যাপক মামুন এ মন্তব্য করেন।

অধ্যাপক মামুন বলেন, অভ্যুথানের পর এই সরকার এসে ৪৭ জন উপাচার্য নিয়োগ দিয়েছেন। ডেইলি স্টার সম্পাদক মাহফুজ আনামের গতকালকের লেখা থেকে জানলাম এই ৪৭ জন উপাচার্যের মধ্যে অন্তত ৩০ জনেরই বিএনপি-পন্থী বা জামায়াতপন্থী শিক্ষকদের সংগঠনের সঙ্গে সম্পর্ক রয়েছে। সুতরাং, আমরা আসলে শুধু দল বদলের একটি দৃশ্য দেখেছি। মান বদলের নয়। ফলে শিক্ষক নিয়োগ থেকে শুরু করে শিক্ষকদের প্রমোশন নীতিমালা ইত্যাদি কোন কিছুতে কোন পরিবর্তন দেখেছেন? গত ১৪ বছর বা তারও আগের উপাচার্যদের কাজ বর্তমান ভিসিদের কাজের গুণগত কোন পরিবর্তন দেখেছেন? এ সপ্তাহ যদি ভিসির অফিসে গিয়ে তার অফিসে কারা দেখা করতে আসে, কি কাজে আসে ইত্যাদির একটা ডাটা নেন তাহলেই দেখবেন কেবল মুখ পরিবর্তন আর দল পরিবর্তন হয়েছে। আপনি আরও লক্ষ করবেন একদল তোষামোদকারী প্রায় প্রতিদিন ওখানে যাবে যা আগেও ছিল।

তিনি বলেন, ভিসিদের স্বৈরতান্ত্রিক ক্ষমতার কোন পরিবর্তন হয়েছে? বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষমতা এমনভাবে কেন্দ্রীভূত যেকোন ছোট কাজের জন্যও তার কাছে যেতে হয়। ফলে ভিসিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সবাই চিনে। এত ক্ষমতা পৃথিবীর কোন বিশ্ববিদ্যালয়ের কোন ভিসির আছে? আমাদের দেশের ভিসিদের মোট কাজের ৮০ শতাংশ কাজই আসলে অকাজ আর কুকাজ। নিয়োগ প্রমোশনের তদবির। প্রভোস্ট, হাউস টিউটর, প্রক্টর সহকারী প্রক্টর ইত্যাদি নানা পদের জন্য তদবির। বিশ্ববিদ্যালয়ের যেকোন অনুষ্ঠান হলে সেটার উদ্বোধনের জন্য অনুরোধ ইত্যাদি নানা কাজের জন্য তদবিরের লাইন ভিসি অফিসে লেগেই থাকে।

এ ছাড়া ছাত্রদের বিভিন্ন সংগঠনের মধ্যে মারামারি বা ঝগড়া মিটিয়ে দেওয়ার তদবিরসহ হাজারো রকমের তদবির যা পৃথিবীর অধিকাংশ বিশ্ববিদ্যালয় নাই। এরপরেও এই পদটি পাওয়ার জন্য শিক্ষকরা শিক্ষকতার চেয়ে রাজনীতি বেশি করে। এরা কিভাবে এইসব unproductive কাজকে এত এনজয় করে? যদি এমন হতো এই পদে গিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নতিতে সৃষ্টিশীল কাজ করে বিশাল অবদান রাখার চেষ্টা করছে, যদি দেখতাম ভিসি হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক মান উন্নয়নের মিশন নিয়ে তাহলে মানা যেত, বলেন অধ্যাপক মামুন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এই অধ্যাপক বলেন, অভ্যুথানের পরপরই একটা সুযোগ এসেছিল। অনেক কিছুর পরিবর্তন করে বিশ্বের সেরা বিশ্ববিদ্যালয় যেভাবে চলে সেইভাবে পরিবর্তনের একটা অপূর্ব সুযোগ এসেছিল। আমরা সেই সুযোগকে কাজে লাগাইনি বা লাগাতে পারিনি। কারণ আমরা দলের সংকীর্ণ স্বার্থের ঊর্ধ্বে উঠতে পারিনি। খোঁজ নিয়ে দেখেন অভ্যুথানের পরেও যত প্রশাসনিক পদে নিয়োগ হয়েছে সবগুলো দলীয় ভিত্তিতে। আমরা আসলে বদলাবো না। আমরা গোবর পোকার মত যেই ভাগাড়ে ছিলাম সেখানে থেকেই আনন্দ পাই।

#শিক্ষক #শিক্ষার্থী