স্কুল- কলেজ- মাদরাসায় একই সফটওয়্যারের মাধ্যমে সমপদে ও সমস্কেলে শূন্য পদের বিপরীতে বদলিসহ কয়েকটি দাবি জানিয়েছেন ইনডেক্সধারী শিক্ষকরা। তারা বলছেন, পারস্পরিক বদলি নীতিমালায় শিক্ষকরা ১ শতাংশও উপকৃত হবেনা। তাই পারস্পরিক বদলি নীতিমালা সংশোধন করে একই সফটওয়্যারের মাধ্যমে দ্রুত বদলির ব্যবস্থা চালু করলে শিক্ষক সংকট দূর হবে।
গতকাল বুধবার রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে অবস্থান কর্মসূচিতে এমন সব দাবি জানান শিক্ষকরা। এনটিআরসিএ কর্তৃক সুপারিশপ্রাপ্ত ইনডেক্সধারী শিক্ষকদের বদলি গণবিজ্ঞপ্তি প্রত্যাশী ঐক্য পরিষদের ব্যানারে এ কর্মসূচি পালন করা হয়।
এ সময় বক্তারা বলেন, পরিবার-পরিজন ছেড়ে স্বল্প বেতনে দূর-দূরান্তে চাকরি করতে গিয়ে আমাদের বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। দূর-দূরান্তে চাকরি করার কারণে ইতোমধ্যে আমাদের অনেক শিক্ষকের বিবাহ বিচ্ছেদ হয়েছে। নারী শিক্ষকরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। হাজার-হাজার শিক্ষক আছেন যাদের পক্ষে চাকরি ছেড়ে দেয়াও সম্ভব নয়। আবার মানসিক যন্ত্রণা নিয়ে চাকরি করাও কঠিন হয়ে যাচ্ছে। অধিকাংশ শিক্ষকই নিজ বাড়ির কাছাকাছি প্রতিষ্ঠান পরিবর্তন করতে চাচ্ছেন। কারণ স্বল্প বেতনে শহরে থেকে জীবন-যাপন করা তাদের পক্ষে খুবই কষ্টকর হচ্ছে।
তারা বলেন, এমপিও নীতিমালা-২০২১ এর ১২.২ অনুচ্ছেদ এবং এমপিও নীতিমালা-২০১৮ এর ১২(খ) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী এনটিআরসিএর সুপারিশপ্রাপ্ত শিক্ষকদের জন্য পদ শূন্য থাকা সাপেক্ষে বদলি চালুর কথা উল্লেখ রয়েছে। কিন্তু ইতোমধ্যে এই নীতিমালা অনুসরণ না করে বিগত সরকার পারস্পরিক বদলির নীতিমালা জারি করেছে। এই পারস্পরিক বদলির মাধ্যমে ১ শতাংশ শিক্ষকও উপকৃত হবে বলে মনে হয় না।
এমন পরিস্থিতিতে এনটিআরসিএর মাধ্যমে সুপারিশপ্রাপ্ত ইনডেক্সধারী শিক্ষকদের পারস্পরিক বদলি নীতিমালা-২০২৪ সংশোধন করে সব বৈষম্য দূর করে মাদরাসা ও কারিগরি থেকে স্কুল-কলেজে এবং স্কুল-কলেজ থেকে মাদরাসা ও কারিগরিতে যাওয়ার জন্য একই সফটওয়্যারের মাধ্যমে দ্রুত বদলির ব্যবস্থা চালু করলে শিক্ষক সংকট দূর হবে এবং আমাদের পরিবারের কাছাকাছি যাওয়ার ব্যবস্থা করলে চির কৃতজ্ঞ থাকবো।
দাবিগুলো হলো: এনটিআরসিএর সুপারিশপ্রাপ্ত শিক্ষকদের পারস্পরিক বদলি নীতিমালা-২০২৪ সংশোধন করে একই সফটওয়্যারের মাধ্যমে শূন্য পদে বদলি চাই। সমপদ ও সমস্কেলে স্কুল, কলেজ থেকে মাদরাসা ও কারিগরি এবং মাদরাসা ও কারিগরি থেকে স্কুল, কলেজ একই সফটওয়্যারের মাধ্যমে এনটিআরসিএর বদলি চালু করা যেতে পারে। ৬ষ্ঠ গণবিজ্ঞপ্তির আগে শূন্য পদে বদলির কার্যক্রম শুরু করা। নারী শিক্ষকদের ক্ষেত্রে স্বামীর কর্মস্থলে বদলির সুযোগ রাখা। এই বদলি বাস্তবায়নে রাষ্ট্রের কোনো অর্থের প্রয়োজন হবে না। বরং রাষ্ট্রীয় কোষাগারে ২ হাজার টাকা আবেদন বাবদ ফি জমা নেয়া যেতে পারে। বর্তমানে শূন্য পদের সংখ্যা প্রায় ৮৫ হাজার। এই শূন্য পদে এনটিআরসিএর সুপারিশপ্রাপ্ত প্রায় ২০ হাজার শিক্ষক বদলি হতে ইচ্ছুক। বদলির ক্ষেত্রে এনটিআরসিএর সনদের মেধা ও দূরত্বকে অগ্রাধিকার দেয়া যেতে পারে।