আট বিভাগে কারিগরি বোর্ডের শাখা শিগগিরই | কারিগরি নিউজ

আট বিভাগে কারিগরি বোর্ডের শাখা শিগগিরই

অনেক জটিলতা কারিগরি শিক্ষা নিয়ে। সংশ্লিষ্টদের হয়রানিও কম নয়। তবে কারিগরি শিক্ষার শিক্ষার্থী-শিক্ষকসহ সংশ্লিষ্টদের ভোগান্তি কমাতে আটটি বিভাগীয় বা অঞ্চলিক অফিসে বোর্ডের কিছু সেবা চালু হচ্ছে শিগগিরই।

দেশের দশটি শিক্ষা বোর্ডের একটি হলো কারিগরি শিক্ষা বোর্ড। সব সময় কারিগরি শিক্ষার প্রসারের কথা বক্তৃতা বিবৃতে স্থান পেলেও এর সত্যিকারে প্রসার হচ্ছে না।

দক্ষ জনশক্তি তৈরি করে বিদেশের শ্রমবাজারে ভাগ বসানোর পরিকল্পনা তাই অনেকটাই কাগজে কলমে আটকে আছে। সারাদেশের শত শত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের জন্য একটি বোর্ড।

ফলে এর অনেক জটিলতা কারিগরি শিক্ষা নিয়ে। সংশ্লিষ্টদের হয়রানিও কম নয়। তবে কারিগরি শিক্ষার শিক্ষার্থী-শিক্ষকসহ সংশ্লিষ্টদের ভোগান্তি কমাতে আটটি বিভাগীয় বা অঞ্চলিক অফিসে বোর্ডের কিছু সেবা চালু হচ্ছে শিগগিরই।

তবে নতুন করে দেশে করিগরি বোর্ড করা না হলেও ঢাকা থেকে কারিগরি বোর্ড ও বোর্ডের কিছু কার্যক্রম বিকেন্দ্রিকরণের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।

কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মো: রুহুল আমিন দৈনিক শিক্ষাকে বলেন, ‘কিছু কার্যক্রম  আমরা ডিসেন্ট্রালাইজ করব। আমাদের আঞ্চলিক  আটটা অফিস আছে। স্কিল ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্টে এডিবি ফান্ডে আঞ্চলিক অফিসের ভবনগুলা করা হয়।

সেখানে ফার্নিচারসহ সবকিছু দেয়া হয়েছে। এখন থেকে ওই অফিসগুলোতে বোর্ডের একটা  উইং  থাকবে। সেটি আমরা বাস্তবায়ন করতে যাচ্ছি খুব শীঘ্রই। আশা করছি এবছরের মধ্যেই ফাংশনাল করবো। কারণ কিছু কিছু কাজ আছে যেটি সারাদেশের একটা বোর্ড হওয়ার কারণে ভোগান্তি হয়।

কারিগরি শিক্ষাকে সময় উপযোগী করার লক্ষ্যে নিয়মিত  সিলেবাস আপডেট করা হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন,  ‘আমাদের  যা কিছু দায়িত্ব আছে সেগুলো যথাযথভাবে  নিয়ম নীতি মেনে করার চেষ্টা করছি।

বোর্ডের কম্পিউটার, যেটি আসলে বোর্ডের একটা হার্ট। সে শাখাটাই কিছু প্রবলেম ছিল। ইতিমধ্যে আমরা ম্যানপাওয়ার চেঞ্জ করেছি। সেটিকে  শক্তিশালী করার জন্য আমরা নতুন নতুন যে সমস্ত ডাটাবেজ সেইফ সিকিউর এবং ব্যাকআপ  দরকার তার সব উদ্যোগ   গ্রহণ করেছি।

আমরা আশা করছি এক বছরের মধ্যেই ইকুইপমেন্টাল যে বিষয়গুলো সেগুলো আমরা সমাধান করতে পারবো।’

প্রকৌশলী মো: রুহুল আমিন বলেন কারিগরি শিক্ষা সাধারণ শিক্ষার মত নয়, এটি কর্মমুখী শিক্ষা। একজন শিক্ষার্থী সঠিক ভাবে শিক্ষা নিতে পারলে, ক্লাসে মনোযোগী থাকার পাশাপাশি ব্যবহারিক ক্লাসগুলো সঠিক ভাবে মনযোগের সাথে শেষ করলে তার জন্য সারাবিশ্বই কর্মক্ষেত্র।

তিনি বলেন, ‘আমার একটাই পরামর্শ। শিক্ষার্থীরা ক্লাসমুখী হোক। নিয়মিত ক্লাস করুক। কারিগরি বৃত্তিমূলক শিক্ষা এবং প্রশিক্ষণে যদি তারা সত্যিকার অর্থে যোগ্যতা সম্পন্ন, দক্ষতা সম্পন্ন  নাগরিক তৈরি হয় তাহলে তারা দেশের জন্য সম্পদ।

একজন মানুষ যদি তার দুটো হাতকে কর্মীর হাতে পরিণত করতে চায়, তাহলে ক্লাসে আসা দরকার। প্র্যাকটিক্যাল ক্লাসে অংশগ্রহণ করাটা আরো খুবই জরুরী। করোনাকালীন কালচারের কারণে যেখানে পিছিয়ে গেছি এখনো সেই জায়গাতে আমরা ফেরত যেতে পারিনি।’

তরুণ তরুণীলা শ্রেনীকক্ষে মনযোগী হলে শুধু কারিগরি না সব শিক্ষার উন্নয়ন হবে। আসলে শিক্ষা কোথায় গেছে? আপনি বলেছেন তলানিতে! আমিও এটা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি। আসলে শিক্ষার অবস্থা খুবই খারাপ। এখান থেকে উত্তোলনের জন্য আমরা নিয়মিতভাবে মনিটরিংয়ের  কাজ করছি।  

জনবল সংকটে সব সময় সরেজমিনে পরিদর্শন সম্ভব না হলেও অনলাইন মনিটরিংয়ের জন্য ইতিমধ্যে সফটওয়্যার ডেভেলপ করা হচ্ছে। প্রতিনিয়ত অধ্যক্ষ স্যারদের সাথে, শিক্ষকদের সাথে মতবিনিময় অব্যাহত আছে।  নিয়মিতভাবে কারিকুলাম আপডেট করা,  শিক্ষকদেরকে মোটিভেট করার জন্য বিভিন্ন ওয়ার্কশপ, সেমিনার ইত্যাদি আয়োজন করে যাচ্ছে বোর্ড।

বোর্ড চেয়ারম্যান আরো বলেন, শিক্ষার্থীদের দক্ষ নাগরিক করে চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের আসন্ন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি দাঁড়ানোর উপযোগী করে তৈরি করতে  হবে। এক কথায় বললে, দেশের জনসংখ্যাকে জনশক্তি ও জনসম্পদে তৈরি করার ক্ষেত্র কারিগরি শিক্ষা।

জাপান দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ধ্বংসস্তুপ থেকে ফিনিক্স পাখির মত জেগে ওঠেছিল। কারণ তাদের ১২ কোটি মানুষের ২৪ কোটি কর্মঠ হাত বিশ্ব সভ্যতায় টেকসই আধুনিক প্রযুক্তির গর্বিত অংশিদার করেছে জাপানকে। আমরাও যদি আমাদের ১৮ কোটি মানুষের ৩৬ কোটি হাতকে ‘কর্মঠ’ হাত করতে পারি তবে ছোট্ট দেশের বিশাল জনগোষ্টি সমস্যা না হয়ে আর্শীবাদ হবে আমাদের জন্য।