সীমাহীন অবহেলা, হেনস্থা ও বৈষম্যের অভিযোগ এনে ১৫ দাবি জানিয়েছেন কারিগরি শিক্ষকরা। এই দাবিতে তারা অধিদপ্তর ঘেরাও কর্মসূচি করতে গেলে মহাপরিচালক শোয়াইব আহমাদ খান তাদের মৌখিক আশ্বাস দিয়েছেন।
এই আশ্বাস বাস্তবায়ন না হলে সারা দেশের ভোকেশনাল, কৃষি ডিপ্লোমা ও বিএম শিক্ষকরা আমরণ অনশন কর্মসূচির হুঁশিয়ারি দেন।
রোববার দুপুরে কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরে সভা শেষে শিক্ষকরা এ তথ্য জানিয়েছেন।
শিক্ষকরা বলেন, মহাপরিচালক শোয়াইব আহমাদ খানের আলোচনার আশ্বাসে করিগরি শিক্ষা অধিদপ্তর ঘেরাও কর্মসূচি স্থগিত করা হয়েছে।
মহাপরিচালক দাবির বিষয়গুলো আলোচনা করবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন। তবে এ দাবি মানা না হলে সারা দেশের শিক্ষকরা ঢাকায় এসে আমরণ অনশন করবে।
শিক্ষকরা বলেন, কারিগরি শিক্ষার সাধারণ শিক্ষা ধারার থেকে পাঁচগুণ বেশি নবায়ন ফি, কারিগরি শিক্ষা বোর্ড জরিমানার নামে গলাকাটা ফি আদায় করে।
শিক্ষকরা আরো বলেন, গত ২০১৯ ও ২০২২ খ্রিষ্টাব্দে এমপিওভুক্ত কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসগুলোর জমা দেয়া আবেদনকারী সব শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন আগামী ৮ মে বৃহস্পতিবারের মধ্যেই এমপিওভুক্ত করতে হবে।
কারিগরি প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত হলে সকল ট্রেড এমপিও ভুক্তির আওতায় নিতে হবে। ট্রেড নয় প্রতিষ্ঠান এমপিও চালু করতে হবে। ৫আগষ্টের পূর্বের সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অধিদপ্তর থেকে বদলি করতে হবে। কৃষি ডিপ্লোমার অধ্যক্ষ সহ গুরুত্বপূর্ণ পদের সুরাহা বা মিমাংসা করতে হবে। কোন জনবল কাঠামো কার্যকর করতে হলে শিক্ষা মন্ত্রণায়লয়-অর্থমন্ত্রণালয়-পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন লাগে।
কিন্তু কারিগরির ক্ষেত্রে শুধু কারিগরি শিক্ষা বোর্ড অথবা শিক্ষা মন্ত্রণালয় নিজেরাই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকেন। কারিগরি সচিবের নিকটজন বলে ৩য় গ্রেডের পরিচালক (ভোকেশনাল) পদে একজন পলিটেকনিক শিক্ষককে ৫ম গ্রেডের শিক্ষককে বসানো হয়েছে। অথচ ৫ম গ্রেডের ডি.ডি-এমপিও পদে টি.এস.সি অধ্যক্ষ আইয়ুব সাহেব কে মন্ত্রণালয়ের আদেশ হওয়া সত্ত্বেও যোগদান করতে দেওয়া হয়নি।
আগে মনে হতো দিল্লি হতে শিশির বাবু, বিমল বাবু কারিগরি অধিদপ্তর চালাতেন এখন তাদের দোসররা চালাচ্ছে। গত ৫০ বছরে কোন বেসরকারি কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সরকারি বা জাতীয়করণ করা হয়নি অথচ সব সরকারের নিকট ইহা সর্বচ্চ গুরুত্বপূর্ণ সেক্টর যা হস্যকর। এমপিও সমস্যার সমাধান না করতে পারলে মাউশি-কে এই দায়িত্ব দেওয়া হোক। জেনারেল স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসা ভবন তৈরির বিশেষ প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। কিন্তু কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহের এমন কোন বরাদ্দ নেই।
মাউশি ও মাদ্রাসার শিক্ষকদের প্রশিক্ষনের অনেক ব্যবস্থা আছে কিন্তু কারিগরি শিক্ষকদের এমন কোন ব্যবস্থা নেই। অধিকাংশ কারিগরি শিক্ষা কারিকুলামের মূল বই নেই। তাই যথাযথ পাঠদান সম্ভব হয় না। মাউশি ও মাদ্রাসা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নবায়ন ফির চেয়ে ৫ গুন বেশি কারিগরি শিক্ষা বোর্ড আদায় করে থাকে। কারিগরি শিক্ষা বোর্ড জরিমানার নামে ছাত্র ও প্রতিষ্ঠানের প্রতি গলাকাটা ফি আদায় করে থাকে।
কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তর ও কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের কর্মকর্তা-কর্মচারীগন শিক্ষকদের সাথে চরম দুর্ব্যবহার করে থাকে, যেমনকি মনিব ভূতের মতো। কারিগরি শিক্ষার সকল সমস্যার সমাধান অবিলম্বে করতে হবে, অন্যথায় আমরন আন্দোলন চলবে। সকল ভূক্তভোগী শিক্ষক-কর্মচারীকে আন্দোলনে শরিক হওয়ার জন্য অনুরোধ করা হলো।