সহকারী অধ্যাপক নাদিরা ইয়াসমিন। ছবি : সংগৃহীত
নরসিংদী সরকারি কলেজের সহকারী অধ্যাপক ও নারী অধিকারকর্মী নাদিরা ইয়াসমিনকে সাতক্ষীরা সরকারি কলেজে বদলির পর শিক্ষার্থীদের মধ্যে উত্তেজনা তৈরি হয়েছে। তারা বলছেন, নাদিরার বিরুদ্ধে ধর্ম অবমাননার অভিযোগে তদন্ত করে আইনি ব্যবস্থা নিতে হবে। একইসঙ্গে ভবিষ্যতে ইসলাম বিদ্বেষী কাউকে সাতক্ষীরার কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বদলি বা নিয়োগ করা যাবে না।
অপরদিকে ‘প্রেরণা’ নামের একটি বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার নির্বাহী প্রধান শম্পা গোস্বামী সাতক্ষীরায় নাদিরাকে স্বাগত জানিয়েছেন।
মঙ্গলবার নাদিরার ব্যাপারে কয়েকটি দাবি সম্বলিত স্মারকলিপি সাতক্ষীরা সরকারি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মোহাম্মদ আল মুস্তানছির বিল্লাহর হাতে দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। এ ঘটনায় কলেজ প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো আনুষ্ঠানিক বক্তব্য পাওয়া যায়নি, তবে স্থানীয় প্রশাসন ও শিক্ষা কর্তৃপক্ষ বিষয়টি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে বলে জানা গেছে।
সম্প্রতি ‘হিস্যা’ ম্যাগাজিনে একটি লেখাকে কেন্দ্র করে হেফাজতে ইসলাম নাদিরা ইয়াসমিনের বিরুদ্ধে ‘ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত’ হানার অভিযোগ তোলে এবং ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তাকে অপসারণের আলটিমেটাম দেয়। এই চাপের পরিপ্রেক্ষিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ গত সোমবার এক প্রজ্ঞাপনে তাকে সাতক্ষীরা সরকারি কলেজে ওএসডি করে বদলির আদেশ দেয়।
সাতক্ষীরার শিক্ষার্থীরা মনে করছেন, এই বদলির সিদ্ধান্ত ‘জনমতের প্রতিফলন নয়, বরং চাপের কাছে নতি স্বীকার’। ফেসবুকে কেউ কেউ নাদিরা ইয়াসমিনকে ‘নাস্তিক’ আখ্যা দিয়ে তার সাতক্ষীরায় যোগদান রুখে দেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
এক শিক্ষার্থী লিখেছেন, এই নাস্তিককে আমি সাতক্ষীরা সরকারি কলেজে আমার বাংলা ডিপার্টমেন্টে দেখতে চাই না। সাতক্ষীরা সরকারি কলেজে বিক্ষোভ মিছিল করার জন্য সবাইকে একত্রিত হওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।
এদিকে শিক্ষার্থীদের দেয়া স্মারকলিপির দাবিগুলো হলো—নাদিরা ইয়াসমিনকে সাতক্ষীরা সরকারি কলেজে যোগদান করতে না দেয়া, তার বিরুদ্ধে ধর্ম অবমাননার অভিযোগে তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ এবং ভবিষ্যতে ইসলাম বিদ্বেষী কাউকে সাতক্ষীরার কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বদলি বা নিয়োগ না করা।
প্রতিবাদ কর্মসূচিতে নেতৃত্ব দেন গণিত বিভাগের বখতিয়ার হোসেন ও রবিউল ইসলাম, প্রাণীবিদ্যার ফাহমিদ আলম ও আব্দুল্লাহ আল মামুন, অর্থনীতির ঝুমা মারিয়াম, উদ্ভিদবিদ্যার ইমরান নাজির শুভ এবং বাংলা বিভাগের শাওন হোসেন প্রমুখ।
সাতক্ষীরা সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ আবুল হাশেম হজব্রত পালনের জন্য বর্তমানে সৌদি আরবে অবস্থান করায় ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মোহাম্মদ আল মুস্তানছির বিল্লাহ এ ব্যাপারে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। তবে তিনি বলেছেন শিক্ষার্থীদের স্মারকলিপি যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠাবেন।
জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) বিষ্ণুপদ পাল শিক্ষার্থীদের জানান, যেহেতু বদলির সিদ্ধান্ত শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে এসেছে, তাই স্মারকলিপিটি সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে এবং পরবর্তী সিদ্ধান্তও সেখান থেকেই জানানো হবে।
শিক্ষাসহ সব খবর সবার আগে জানতে দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গেই থাকুন। ভিডিয়োগুলো মিস করতে না চাইলে এখনই দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন এবং বেল বাটন ক্লিক করুন। বেল বাটন ক্লিক করার ফলে আপনার স্মার্ট ফোন বা কম্পিউটারে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভিডিওগুলোর নোটিফিকেশন পৌঁছে যাবে।
দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেল SUBSCRIBE করতে ক্লিক করুন।