তারেক রহমান। ছবি : সংগৃহীত
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন আগামী বছরের ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে অনুষ্ঠিত হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল আসনভিত্তিক সম্ভাব্য প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেছেন। তবে দেশের মানুষের আগ্রহের বিষয় বড় রাজনৈতিক দলগুলোর প্রধানরা কোন আসনে নির্বাচন করবেন এবং কয়টি আসনে প্রার্থী হবেন।
বিএনপি সূত্রে জানা গেছে, দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান অন্তত তিনটি আসনে নির্বাচনে প্রতিয়ন্দ্বিতা করবেন। পাশাপাশি বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াও অন্তত একটি আসনে লড়তে পারেন। অন্যদিকে তার পুত্রবধূ জোবাইদা রহমান সিলেট-১ আসনে নির্বাচন করছেন, এটি মোটামুটি নিশ্চিত বলে জানা গেছে।
সূত্রগুলো বলছে, সিলেট-১ আসনের স্থানীয় নেতা-কর্মীরা ইতোমধ্যে এলাকায় এ সংক্রান্ত পোস্টার সাঁটিয়েছেন। দেশে ফিরে গত ২৩ জুন ভোটার রয়েছেন জোবাইদা । ভোটার তালিকায় নাম অন্তর্ভুক্তির জন্য তার তথ্য সংগ্রহ করেছে নির্বাচন কমিশন।
২০০৮ খ্রিষ্টাব্দের ১১ সেপ্টেম্বর থেকে প্রায় ১৭ বছর দেশের বাইরে ছিলেন তিনি। সম্প্রতি দেশে ফিরে ভোটার হালনাগাদ করতে হয়েছে তাকে। একই সময় থেকে তারেক রহমানও লন্ডনে বসবাস করছেন। তবে শেখ হাসিনার পতন-পরবর্তী পরিস্থিতিতে তার দেশে ফিরে আসার সুযোগ রয়েছে। ইতোমধ্যে সব মামলায় খালাস পেয়ে দেশে ফেরার প্রস্তুতি নিচ্ছেন তারেক রহমান, যদিও তার ফেরার দিনক্ষণের বিষয়ে বিএনপির পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু বলা হয়নি।
তবে সূত্র বলছে, নিরাপত্তাসহ তার ফেরার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয়ে সরকারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে যোগাযোগ রক্ষা করে চলেছে বিএনপি।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান কবে দেশে ফিরবেন সেই সিদ্ধান্ত তিনিই নেবেন। এটা আগাম বন্য কঠিন। তবে দেশে প্রত্যাবর্তনের আগে বড় সারপ্রাইজ থাকবে। দেখা মারে হঠাৎ একদিন ঘোষনা আসবে, আগামীকাল দেশে ফিরবেন তারেক রহমান। তার দেশে ফেরার দিনে কাউকে ঘোষণা দিয়ে ঢাকায় আসতে বলার প্রয়োজন পড়বে না। সেদিন ঢাকার এয়ারপোর্ট থেকে বাসা পর্যন্ত এমন জনস্রোত নামবে, যা বাংলাদেশের ইতিহাসে আগে কেউ দেখেনি।
২০১৬ খ্রিষ্টাব্দের ৬ ফেব্রুয়ারি থেকে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসেবে দল পরিচালনা করছেন তারেক রহমান। বিগত সরকারের অনেক অত্যাচার-নির্ঘাতন সত্ত্বেও তার বলিষ্ঠ নেতৃত্বে বিএনপি ঐক্যবদ্ধ আছে। নির্বাচনে জয়লাভ করে বিএনপি সরকার গঠন করলে তিনিই মূল কান্ডারি হবেন বলে দলটির নেতা-কর্মীরা মনে করেন। প্রধান কান্ডারি হিসেবে খালেদা জিয়া আগে বেশির ভাগ সময় ৫টি আসনে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন। তবে নির্বাচন কমিশনের আইনি বাধ্যবাধকতার কারণে ২০০৮ খ্রিষ্টাব্দে তিনি ৩টি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে জয়ী হন। তারেক রহমানও সর্বোচ্চ ৩টি আসনে নির্বাচন করবেন বলে সিদ্ধান্ত হয়ে আছে। তবে কোন তিনটি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন, তা এখনো ঠিক হয়নি। শরিকদের সঙ্গে আসন বণ্টন, প্রার্থীর জনপ্রিয়তা, সর্বোপরি নির্বাচন পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। তবে তার ঘনিষ্ঠজনতা মনে করেন, বগুড়ার একটি আসনে তিনি নির্বাচন করবেন এটি মোটামুটি নিশ্চিত।
ইউনূস এবং তারেক রহমানের বৈঠকের সূত্র ধরে আগামী বছরের ফেব্রুয়ারির মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলে বিএনপি মনে করছে। সে অনুযায়ী দলটি প্রস্তুতিও নিতে শুরু করেছে।বিএনপির স্থায়ী কমিটির অন্যতম সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, দেশের সব মানুষ তারেক রহমানের জন্য উন্মুখ হয়ে অপেক্ষা করছে। খুব শিগগিরই তিনি দেশে ফিরবেন। আর তার দেশে ফেরা নিয়ে প্রস্তুতিও চলছে।