ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) ছাত্রী হলে প্রবেশ করে এক ছাত্রীকে ধর্ষণের হুমকি দেওয়াসহ নানা অভিযোগে অভিযুক্ত নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের ইবি শাখার সাবেক সহ-সভাপতি ইমদাদুল হক সোহাগ গোপালগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (গোবিপ্রবি) পদোন্নতি পেয়ে প্রভাষক থেকে সহকারী অধ্যাপক হয়েছেন।
জানা যায়, গত ৩ জুলাই বিশ্ববিদ্যালয়ের এক অফিস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে সিলেকশন বোর্ডের সুপারিশে রিজেন্ট বোর্ডের ৪০তম সভায় শিক্ষকদের পদোন্নতি দেওয়া হয়। সেখানে সাবেক এই ছাত্রলীগ নেতাকে বায়োটেকনোলজি অ্যান্ড জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং (বিজিই) বিভাগের প্রভাষক থেকে সহকারী অধ্যাপকে পদোন্নতি দেওয়া হয়েছে।
এ শিক্ষকের বিরুদ্ধে শেখ রাসেল হলের প্রভোস্ট থাকা অবস্থায় দাড়ি রাখলে হল থেকে বের করে দেওয়া, হলে সিটের জন্য আবেদন করলে ভাইবার সময় শিবির করে কিনা তা জানতে মোবাইল চেক করা, বেছে বেছে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের সিট দেওয়া ও সাতক্ষীরা জামায়াতের এলাকা বলে এক শিক্ষার্থীকে নম্বর শূন্য দেওয়াসহ বিভিন্ন অভিযোগ পাওয়া গেছে। তাছাড়া, ধর্ম ছাড়া মানুষ বাঁচতে পারবে কিন্তু সংস্কৃতি ছাড়া মানুষ বাঁচতে পারবে না বলে ধর্ম অবমাননার মতো গুরুতর অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
এ ছাড়াও ২০১৫ খ্রিষ্টাব্দের ৩০ এপ্রিল ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের (বর্তমানে নিষিদ্ধ সংগঠন) সহ-সভাপতি থাকা অবস্থায় বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের ছাত্রীদের ধর্ষণের হুমকি দেওয়ায় সংবাদের শিরোনামও হতে হয়। এমনকি জুলাই গণহত্যা চলার সময় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের নাম, পরিচয়, ঠিকানা দিয়ে সহায়তার গুরুতর অভিযোগ উঠেছে।
অভিযুক্ত শিক্ষকের পদোন্নতির বিষয়ে জানতে চাইলে গোপালগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (গোবিপ্রবি) উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. সোহেল হাসান বলেন, আমার অজান্তেই এটা হয়েছে, কারণ হায়ার বোর্ডে আমাকে রাখা হয়নি যার ফলে ভাইভার সময় আমি ছিলাম না। আর দুই একজন চালাকি করে তাদের নাম ঢুকিয়ে দিয়েছে। এ বিষয়ে উপাচার্যের সাথে কথা হয়েছে। আমরা ব্যবস্থা নিব, তবে সোমবার পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।
এ বিষয়ে গোবিপ্রবির উপাচার্য অধ্যাপক ড. হোসেন উদ্দিন শেখর বলেন, বাংলা বিভাগের একজন শিক্ষিকাকেও নিয়ে অভিযোগ হচ্ছে। তাকে প্রমোশন দেওয়া হয়েছে আরও এক বছর আগে। যেহেতু গত এক বছর রিজেন্টবোর্ড হয়নি তাই বর্তমানের রিজেন্টবোর্ডে আগের রিকমেন্ডেশন কার্যকর করা হয়েছে। আর তার বিরুদ্ধে কোনো বডির মাধ্যমে আমরা লিখিত পাইনি যে, তার বিরুদ্ধে কোনো শাস্তিওমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক। এটা একটা চলমান প্রক্রিয়া। আর তারা এখানে প্রতিদিন আসে, ক্লাস নেয়, ক্যাম্পাসে ঘোরাফেরা করতেছে সেক্ষেত্রে তারা তো কোনো প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হচ্ছেন না। এক্ষেত্রে আমরা তো বাধা দিতে পারি না, তাহলে আমাদের নামে কেস হয়ে যাবে। এছাড়া শিক্ষার্থীরা ঢালাও যে লিখিত অভিযোগ দিছে তাতে তো প্রমাণ হয় না সে অপরাধী। প্রমাণিত যখন হবে তখন ব্যবস্থা নেওয়া হবে।