চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত হচ্ছেন টাঙ্গাইলের জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা (ডিপিইও) সাহাব উদ্দিন। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ সংবিধান ও ভোটার তালিকা নিয়ে আইন পরিপন্থী বক্তব্য দিয়েছেন।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব আবু তাহের মো. মাসুদ রানা দৈনিক শিক্ষাডটকমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, চাকরিবিধি ও নির্বাচন আইন লঙ্ঘনের কারণে সাহাব উদ্দিনের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা করা হবে।
এর আগে, গত ২৯ জানুয়ারি শিক্ষা কর্মকর্তা সাহাব উদ্দিনের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিতে মন্ত্রণালয়ের সচিবকে নির্দেশনা দেন ইসি উপসচিব মাহবুব আলম শাহ।
জানা যায়, গত ২১ জানুয়ারি একটি স্কুল পরিদর্শনকালে টাঙ্গাইল জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা (ডিপিইও) সাহাব উদ্দিন বলেন, ‘কিছু শিক্ষক ভোটার তালিকা হালনাগাদের কাজে সম্ভবত চলে গেছেন, তো এই কাজটা শিক্ষকরা এইভাবে করতে পারে না। শিক্ষিত বেকার যুবকদের এ কাজটি করার কথা। এর পরও আমাদের অনেক শিক্ষক আছেন উৎসাহী হয়ে ইলেকশন অফিসে বা পরিসংখ্যান অফিসে গিয়ে যোগাযোগ করে নিজের নাম অন্তর্ভুক্ত করেন। ছুটি ছাড়া কেউ স্কুল ত্যাগ করতে পারেন না।’
তিনি আরো বলেছিলেন, ‘একজন লোক শিক্ষকের বেতন নেবেন, আবার ওই দিকে নির্বাচন কমিশন থেকে বেতন নেবেন, এক সঙ্গে একই সময়ে দুইটা সুবিধা পাওয়ার ট্রেজারি রুলের ভাষায় কোনো বিধিবিধান নেই এবং এটা সম্পূর্ণ বেআইনি কাজ।’
থানা শিক্ষা অফিসার (টিইও) ও সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসারদের (এইউইও) নির্দেশ দিয়ে ওই কর্মকর্তা বলেন, ‘টিইও এবং এইউইও সাহেবরা এটা কঠোরভাবে দেখুন। যদি কোনো স্কুলে এ রকম পাওয়া যায়, তাহলে ওই শিক্ষকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
ওই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়ে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিবকে লেখা ইসির চিঠিতে বলা হয়, ‘সংবিধানের ১২৬ নম্বর অনুচ্ছেদ বলা আছে, নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব পালনে সহায়তা করা সব নির্বাহী কর্তৃপক্ষের কর্তব্য হবে। ভোটার তালিকা আইন, ২০০৯-এর ১৯ ধারায় বলা আছে, যদি কোনো ব্যক্তি ভোটার তালিকা প্রণয়ন, পুনঃপরীক্ষণ, সংশোধন বা হালনাগাদকরণ কাজে কাউকে কোনো প্রকার প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি করেন, তাহলে তিনি অনধিক এক বছর কারাদণ্ড বা অনধিক ৫ হাজার টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন। এ অবস্থায় সংশ্লিষ্ট জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করে নির্বাচন কমিশনকে অবহিত করতে হবে।’
এ বিষয়ে ডিপিইও সাহাব উদ্দিনের বক্তব্য জানতে তাঁর মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।