অষ্টাদশ শিক্ষক নিবন্ধনের পঞ্চম ধাপের ভাইভা চলছে। দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে আসা এমপিও শিক্ষক পদে চাকরিপ্রত্যাশীরা প্রতিদিনই মুখোমুখি হচ্ছেন ভাইভা বোর্ডের। কী প্রশ্ন করা হচ্ছে তাদের, তারাই বা কী উত্তর দিচ্ছেন। তাদের অভিজ্ঞতা অবশ্যই সহায়ক হবে ভাইভা বোর্ডের মুখোমুখি হওয়ার অপেক্ষায় থাকা প্রার্থীদের। তাই দেশের শিক্ষাবিষয়ক একমাত্র প্রিন্ট জাতীয় পত্রিকা দৈনিক আমাদের বার্তার এই বিশেষ আয়োজন। ভাইভা বোর্ড থেকে বের হওয়া প্রার্থীদের সাক্ষাৎকার নিয়ে প্রতিবেদনটি তৈরি করেছেন সুতীর্থ বড়াল ও সাবিহা সুমি।
কিশোরগঞ্জের মো. আরাফাত বলেন, আজকে আমার চারু ও কারুকলার ভাইভা ছিলো, আমাকে জিজ্ঞেস করা হয়েছে আপনি কোথায় চারু ও কারুকলার বিষয় পড়াশোনা করছেন। চারু ও কারুকলার বিষয়ে ওপর কিছু প্রশ্ন করা হয়। আমার ভাইভার অভিজ্ঞতা খুবই ভালো ছিলো। স্যারেরা খুব ফ্রেন্ডলি ছিলেন। ধন্যবাদ দৈনিক শিক্ষাডটকমকে।
রাজবাড়ীর সুধা সরকার বলেন, আজকে আমার চারু ও কারুকলার ভাইভা ছিলো আমাকে বেশি কিছু জিজ্ঞেস করা হয়নি, একটি ফুলের ছবি আঁকতে দেয়া হয়। আমার ভাইভা বোর্ডের ২ থেকে ৩ মিনিট সময় ছিলো। ভাইভা বোর্ডের স্যারেরা খুব আন্তরিক ছিলেন। ধন্যবাদ দৈনিক শিক্ষাডটকমকে ।
সাতক্ষীরার সাগর কুমার বলেন, আমাকে বলতে বলা হয়, একটি সেকেন্ডারি রঙের একটি উদাহরণ দেন। আরো জিজ্ঞেস করা হয়েছে সংস্কৃতির কোন বিষয় আপনার ভালো লাগে? একজন ওয়েস্টার্ন শিল্পীর নাম বলেন। ওয়েস্টার্ন একজন শিল্পীর একটি ছবি আঁকেন। ধন্যবাদ দৈনিক শিক্ষাডটকমকে।
ময়মনসিংহের মো. বিল্লাল মিয়া বলেন, আমাকে প্রথম নাম জিজ্ঞেস করা হয় আমি কোথায় চারু ও কারুকলার বিষয় পড়াশোনা করেছি। চারু ও কারুকলার বিষয়ে ওপর কিছু প্রশ্ন করা হয়। ধন্যবাদ দৈনিক শিক্ষাডটকমকে।
বরিশালের সুমি মালী বলেন, আজকে আমার চারু ও কারুকলা বিষয়ে ভাইভা ছিলো, আমাকে বেশি কিছু জিজ্ঞেস করা হয়নি, আমাকে একটি ইলিশ মাছের ছবি আঁকতে দেয়া হয়। স্যারেরা খুব আন্তরিক ছিলেন। আমার ভাইভা ভালো হয়েছে। দৈনিক শিক্ষাডটকমের ভিডিয়ো দেখে আমি উপকৃত হয়েছি।
নীলফামারীর সুধাম রায় বলেন, ভাইভা বোর্ডের খুব আন্তরিকভাবে আমাকে প্রশ্ন করে। আমাকে চারু ও কারুকলা বিষয়ের ওপর প্রশ্ন করা হয়েছিলো। ইচ্ছামত একটি ছবি আঁকার করার জন্য বলা হয়েছিলো। আমার ভাইভা বোর্ডের সময় ছিলো ২ থেকে ৩ মিনিট। ধন্যবাদ দৈনিক শিক্ষাডটকমকে।
গোপালগঞ্জের প্রশান্ত রায় বলেন, আজ আমার চারু ও কারুকলা বিষয়ের ভাইভা ছিলো, আমাকে বেশি কিছু জিজ্ঞেস করা হয়নি, একটি ছবি আঁকতে দেয়া হয়। আমি চারু ও কারুকলায় কত খ্রিষ্টাব্দে ভর্তি হয়েছিলাম। ভাইভা বোর্ডের স্যারেরা ভালো ছিলো।
রাজশাহীর আফিয়া বলেন, আজকে চারু ও কারুকলা বিষয়ে ভাইভা ছিলো। স্যারেরা যে প্রশ্ন করেছিলো সবগুলো সব কমন ছিলো। একটি ড্রইং করতে বলা হয়েছিলো। আমার ভাইভার অভিজ্ঞতা খুবই ভালো ছিলো। স্যারেরা খুব ফ্রেন্ডলি ছিলো।
যশোরের মো. মেহেদি হাসান বলেন, আজ আমার চারু ও কারুকলা বিষয়ের ভাইভা ছিলো। প্রশ্ন তেমন কিছু করা হয়নি। ফিগার আঁকতে দেয়া হয় এবং ড্রইং করতে দেয়া হয়। স্যারেরা খুব আন্তরিক ছিলো। আমি দৈনিক শিক্ষার ভিডিয়ো দেখে উপকৃত হয়েছি।
বগুড়ার ফারজানা বলেন, আজ আমার চারু ও কারুকলা বিষয়ের ভাইভা ছিলো। ভাইভা ভালো হয়েছে। একটি ড্রইং করতে বলা হয়। এর পর কিছু প্রশ্ন ধরা হয়। ত্রিভূজ চর্তুভূজ দিয়ে যা খুশি তাই আঁকতে বলা হয়। ধন্যবাদ দৈনিক শিক্ষাডটকমকে।
মানিকগঞ্জের মো. জাসিম উদ্দিন বলেন, আমাকে জিজ্ঞেস করা হয়ছে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার ডিজাইনারের নাম কী? আমাকে একটি মুরগির ছবি আঁকতে বলা হয়। স্যারেদের ব্যবহার খুব আন্তরিক ছিলো। ধন্যবাদ দৈনিক শিক্ষাডটকমকে।
ভাইভার ৬৯তম দিনে মোট দশটি বোর্ডে দুই ব্যাচে অংশ নেন চাকরিপ্রার্থীরা। এদিন স্কুল পর্যায়ের শারীরিক শিক্ষা ও গণিত বিষয়ের পরীক্ষা ছিলো। প্রথম ব্যাচের পরীক্ষা সকাল সাড়ে ৯টায় ও দ্বিতীয় ব্যাচের পরীক্ষা বেলা সাড়ে ১১টায় শুরু হয়।
গত বৃহস্পতিবার ৩২১০৩৯০৭৪ থেকে ৩২৪০০৯১১৯ রোল নম্বরধারীদের মধ্যে লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণরা অংশ নেন। ৬৯তম দিনে মোট ৬০০ জন প্রার্থীর ভাইভা নেয়া হয়। গত ২৬ জানুয়ারি থেকে পঞ্চম ধাপের এই ভাইভা শুরু হয়েছে। এ ধাপের ভাইভা চলবে ১৩ ফ্রেরুয়ারি পর্যন্ত।
রোববার ৩২৪০০৯১২৫ থেকে ৩২৬০০৩৬১২ রোল নম্বরধারীদের মধ্যে ভাইভা অনুষ্ঠিত হবে। এর গত ৫ জানুয়ারি থেকে চতুর্থ ধাপের এই ভাইভা শুরু হয়ে শেষ হয়েছে ২৩ জানুয়ারি।
এর আগে তৃতীয় ধাপের ভাইভা পরীক্ষা ৫ ডিসেম্বর শুরু হয়ে ২ জানুয়ারি পর্যন্ত চলে। ১৪ নভেম্বর দ্বিতীয় ধাপের পরীক্ষা শুরু হয়, যা শেষ হয়েছে ৪ ডিসেম্বর।
এর আগে গত ২৭ অক্টোবর প্রথম ধাপের ভাইভা শুরু হয় এবং ১৩ নভেম্বর প্রথম ধাপের ভাইভা শেষ হয়। পর্যায়ক্রমে লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ মোট ৮৩ হাজার ৮৬৫ জন প্রার্থী ভাইভায় অংশ নেয়ার সুযোগ পাবেন। ভাইভায় অংশগ্রহণের জন্য লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ প্রার্থীকে অবশ্যই সব শিক্ষা সনদ ও ট্রান্সক্রিপ্ট, এনআইডি অথবা জন্ম নিবন্ধন সনদ ও লিখিত পরীক্ষার অ্যাডমিট কার্ড সঙ্গে আনতে হবে। যেহেতু এবার ভাইভার জন্য আলাদা প্রবেশপত্র দেয়া হয়নি, তাই লিখিত পরীক্ষার প্রবেশপত্রই মৌখিক পরীক্ষার প্রবেশপত্র হিসেবে গণ্য হবে।
এর আগে গত ২২ অক্টোবর বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষের (এনটিআরসিএ) এক বিজ্ঞপ্তিতে মৌখিক পরীক্ষা শুরুর তারিখ জানানো হয়। গত ১৪ অক্টোবর অষ্টাদশ শিক্ষক নিবন্ধনের লিখিত পরীক্ষার ফল প্রকাশ করে এনটিআরসিএ। গড় পাসের হার ছিলো ২৪ শতাংশ।
তার আগে গত ১৫ মে ১৮তম শিক্ষক নিবন্ধনের প্রিলিমিনারি পরীক্ষার ফল প্রকাশ করা হয়। তাতে গড় পাসের হার ছিলো ৩৫ দশমিক ৮০ শতাংশ। স্কুল ও কলেজ পর্যায় মিলিয়ে মোট পাস করেন চার লাখ ৭৯ হাজার ৯৮১ জন চাকরিপ্রার্থী। গত ১৫ মার্চ অনুষ্ঠিত প্রিলিমিনারিতে ১৮ লাখ ৬৫ হাজার ৭১৯ জন আবেদন করলেও পরীক্ষায় অংশ নেন ১৩ লাখ ৪০ হাজার ৮৩৩ জন।