‘শিক্ষায় বরাদ্দ ফাঁকিবাজির গল্পটা এখনো আছে’ | বিবিধ নিউজ

‘শিক্ষায় বরাদ্দ ফাঁকিবাজির গল্পটা এখনো আছে’

নতুন অর্থ বছরের প্রস্তাবিত বাজেটে শিক্ষা খাতের বরাদ্দ নিয়ে হতাশ হয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক কামরুল হাসান মামুন।

#শিক্ষক #বাজেট #শিক্ষার্থী

নতুন অর্থ বছরের প্রস্তাবিত বাজেটে শিক্ষা খাতের বরাদ্দ নিয়ে হতাশ হয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক কামরুল হাসান মামুন।

মঙ্গলবার (৩ জুন) নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডিতে দেওয়া এক পোস্টে তিনি এ হতাশ প্রকাশ করে।

অধ্যাপক কামরুল হাসান মামুনের পোস্টটি নিচে হুবহু তুলে ধরা হলো—

আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরে শিক্ষায় মোট বাজেট বাড়ছে ৯৩৫ কোটি টাকা। এ বছর শিক্ষায় মোট বাজেট প্রস্তাব করা হয়েছে ৯৫ হাজার ৬৪৫ কোটি টাকা, যা আগে ছিলো ৯৪ হাজার ৭১০ কোটি টাকা।

এইভাবে বরাদ্দ বাড়ানোর গল্পের আগের আওয়ামী লীগ সরকারও করেছিল। অংকে কিছু টাকা বাড়া যে আসলে বাড়া না সেটা বোঝার মানুষ এই দেশে কম বলে সরকারেরা আমাদেরকে এই টুটকা আমাদেরকে খাওয়াতে পারেন।

২০১৮ খ্রিষ্টাব্দ থেকে ক্রমান্বয়ে শিক্ষায় বরাদ্দ অংকে বেড়েছে কিন্তু জিডিপির শতাংশে ২.২৮% থেকে কমতে কমতে গত বাজেটে ১.৬৯%-এ ঠেকেছিল। কিন্তু টাকার অংকে বেড়েছিল। টাকার অংকে যেটুকু বাড়ে তার প্রায় সবটাই ইনফ্লেশন ও অন্যান্য অবকাঠামোগত উন্নয়ন খেয়ে ফেলে।

তাই টাকার অংকে বরাদ্দ বেড়েছে এইটা চরম ফাঁকিবাজি কথা। বলতে হবে জিডিপির স্কেলে শিক্ষায় বরাদ্দ কতটা বেড়েছে। ইউনেস্কো বলে একটি দেশ শিক্ষায় ন্যূনতম তার জিডিপির ৫.৫% বরাদ্দ দেওয়া উচিত। কেন বলে? যাতে শিক্ষকতা পেশাকে আকর্ষণীয় করা যায়, যাতে করে শিক্ষার্থীরা শিক্ষার জন্য পর্যাপ্ত সুযোগ সুবিধা ও স্কলারশিপ পায়, যাতে করে গবেষণার জন্য পর্যাপ্ত অর্থ বরাদ্দ দেওয়া যায়।

ভিয়েতনামতো আজ থেকে ১২ বছর আগে সম্পদে আমাদের চেয়ে পিছিয়ে ছিল। তথাপি গত ১০-১২ ধরে তারা তাদের জিডিপির ৪% এবং মাঝে মাঝে এর বেশি বরাদ্দ দিয়ে আসছে। তারা পেরেছিল বলেই আজ তারা আমাদের চেয়ে অনেক এগিয়ে।

১২ বছর আগে ভিয়েতনামের কোন বিশ্ববিদ্যালয় ওয়ার্ল্ড র‌্যাঙ্কিং-এ ১০০০ এর মধ্যে ছিল না। এখন ৬০০ এর মধ্যেই একাধিক বিশ্ববিদ্যালয় চলে এসেছে। এসেছে বলেই সেখানে অ্যাপেল, ইন্টেল ইত্যাদির মত বড় বড় জায়ান্ট কোম্পানি এখন ভিয়েতনামে নোঙ্গর করেছে। বুঝতে পারছেন? ওখানে যেহেতু মানুষ মানসম্পন্ন শিক্ষা পাচ্ছে সেহেতু তাদের ওখানে বিনিয়োগের পরিবেশও উন্নত হচ্ছে।

বাংলাদেশে বিনিয়োগ করতে কে আসবে? তারা যখন একবার আমাদের এয়ারপোর্ট এবং চিটাগাং পোর্ট দেখবে কিংবা আমাদের আমলাতন্ত্র দেখবে অথবা রাস্তাঘাটে ট্রাফিক জ্যাম দেখবে তারাতো সব পালাবে। এই এআইয়ের যুগে আমরা এখনো স্বয়ংক্রিয় ট্রাফিক সিগন্যাল ব্যবস্থা চালু করতে পারি নাই। কিভাবে দেশ আগাবে বলুন?

#শিক্ষক #বাজেট #শিক্ষার্থী