পদত্যাগ করলেন সম্প্রতি ক্লাসে ছাত্রকে বিয়ে করে সমালোচনার জন্ম দেয়া বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষিকা প্রফেসর পায়েল বন্দোপাধ্যায়। ওই ঘটনার ভিডিয়ো ভাইরাল হওয়ায় তার সম্মানহানি হচ্ছে এবং এর পর থেকে তিনি মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছেন বলেও পদত্যাগপত্রে উল্লেখ করেন।
শনিবার তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার পার্থপ্রতিম লাহিড়ির কাছে পদত্যাগপত্র পাঠিয়ে কলেজ ছাড়ার কথা জানিয়েছেন।
যদিও ওই শিক্ষিকা আগেই বলেছিলেন, “একাডেমিক অনুশীলনের অংশ হিসেবে শিক্ষার্থীদের বিয়ের বিষয়ে ধারণা দেওয়ার জন্য এই কাজ করেছেন তিনি। এটি প্রকৃত কোনও বিয়ে নয়।”
পশ্চিমবঙ্গের রাজধানী কলকাতা থেকে প্রায় ১৫০ কিলোমিটার দূরে নদীয়ার হরিণঘাটা প্রযুক্তি কলেজের মনোবিজ্ঞান বিভাগে ছাত্রের সঙ্গে শিক্ষিকার এই বিয়ের ঘটনা ঘটে বলে সেখানকার একজন কর্মকর্তা জানিয়েছিলেন। কলেজটি মাওলানা আবুল কালাম আজাদ প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (এমএকেএইউটি) অধিভূক্ত।
প্রফেসর পায়েল বন্দোপাধ্যায়কে বিয়ের সাজে দেখা যায় ভিডিয়োতে। এ সময় তার গলায় মালা পরিয়ে দেন এক শিক্ষার্থী। পরে তিনিও ওই শিক্ষার্থীর গলায় মালাবদল করেন। তবে এটি প্রকৃত বিয়ের ঘটনা নয় বলে জানিয়েছেন পায়েল বন্দোপাধ্যায়। তিনি বলেছেন, একাডেমিক অনুশীলনের অংশ হিসেবে বিয়ের রীতি পালন করে শিক্ষার্থীদের দেখানো হয়েছে।
কলকাতার সংবাদমাধ্যম আনন্দবাজার বলছে, গত শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) ম্যাকাউটের রেজিস্ট্রার পার্থপ্রতিম লাহিড়ির কাছে পদত্যাগপত্র পাঠিয়েছেন মনস্তত্ত্ববিদ্যার সেই শিক্ষিকা। তিনি জানান, মানসিকভাবে তিনি বিপর্যস্ত। যেভাবে ওই সিঁদুরকাণ্ডের ভিডিয়ো ছড়ানো হচ্ছে, তাতে আর কাজ করা সম্ভব নয়!
এদিকে ওই শিক্ষিকার পাঠানো পদত্যাগপত্র পেয়েছেন বলে জানিয়েছেন ম্যাকাউটের রেজিস্ট্রার। তার কথায়, “নিয়ম মেনে ওই ইস্তফাপত্র উপাচার্যের কাছে পাঠানো হবে। এ ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়ার এখতিয়ার একমাত্র উপাচার্যেরই আছে।”
এর আগে গত ২৮ জানুয়ারি থেকে সোশ্যাল মিডিয়ায় ওই শিক্ষিকা এবং এক ছাত্রের একটি ভিডিয়ো ছড়িয়ে পড়ে। ভিডিওটিতে দেখা যায়, ওই শিক্ষিকার পরনে লাল বেনারসি। গলায় গোলাপ এবং রজনীগন্ধার মালা। তার সিঁথিতে সিঁদুর রাঙিয়ে দিতে দেখা যায় এক কলেজ ছাত্রকে।
ভিডিয়োটি প্রকাশ্যে আসতেই বিতর্ক শুরু হয়। ক্লাসরুমে কী ভাবে এই আচরণ করলেন শিক্ষিকা, তা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। বিতর্ক মাথাচাড়া দিতেই ম্যাকাউটের হরিণঘাটা ক্যাম্পাসের ‘অ্যাপ্লায়েড সাইকোলজি’ (ফলিত মনস্তত্ত্ববিদ্যা) বিভাগের প্রধান ওই শিক্ষিকাকে ছুটিতে পাঠিয়ে দেন কলেজ কর্তৃপক্ষ।
অবশ্য ভিডিয়োতে যে বিয়ের দৃশ্য দেখা গেছে, সেটি একটি “মনোবিজ্ঞান বিষয়ক নাটকের” অংশ ছিল বলে দাবি করেছেন ওই শিক্ষিকা। যা শ্রেণিকক্ষে শিক্ষার্থীদের বিয়ের বিষয়ে ধারণা দেয়ার জন্য তিনি হাতে-কলমে দেখিয়েছেন বলে মন্তব্য করেছেন
তার মানহানি করার জন্য ভিডিয়ো ফাঁস করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছিলেন প্রফেসর পায়েল বন্দোপাধ্যায়।