জাতীয়করণের দাবিতে হাজার হাজার শিক্ষক প্রেসক্লাবের সামনে | এমপিও নিউজ

জাতীয়করণের দাবিতে হাজার হাজার শিক্ষক প্রেসক্লাবের সামনে

শিক্ষাক্ষেত্রে বিরাজমান সরকারি-বেসরকারি বৈষম্য দূর করার জন্য মাধ্যমিক শিক্ষা জাতীয়করণসহ ঈদুল ফিতরের আগেই শতভাগ উৎসব ভাতা, পূর্ণাঙ্গ বাড়ি ভাড়া ও চিকিৎসা ভাতা দিতে হবে।

#এমপিও #স্কুল #শিক্ষক #শিক্ষার্থী

জাতীয়করণের দাবিতে মহাসমাবেশে যোগ দিতে হাজার হাজার শিক্ষক জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে জড়ো হয়েছেন।

বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির (বিটিএ) ব্যানারে শনিবার (১০ মে) সকাল ১০টায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এ মহাসমাবেশ শুরু হবে। এতে বিটিএসহ আরও কয়েকটি শিক্ষক-কর্মচারী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা যোগ দেবেন।জাতীয়করণের দাবিতে হাজার হাজার শিক্ষক প্রেসক্লাবের সামনে

এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সংগঠনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, শিক্ষক সংগঠন বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতিসহ (বিটিএ) বেশ কিছু শিক্ষক-কর্মচারী সংগঠনের উদ্যোগে শিক্ষাক্ষেত্রে বিরাজমান সরকারি-বেসরকারি বৈষম্য দূরীকরণের লক্ষে শিক্ষাব্যবস্থা জাতীয়করণের দাবিতে বেসরকারি এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারী মহাসমাবেশের আয়োজন করা হয়েছে।

দীর্ঘদিন থেকেই এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীরা শতভাগ উৎসব ভাতা, জাতীয়করণসহ ১০ দাবি জানিয়ে আসছিলেন। এরই অংশ হিসেবে গত ১২ মার্চ প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় অভিমুখে শিক্ষকদের পদযাত্রায় বাধা দেয় পুলিশ।জাতীয়করণের দাবিতে হাজার হাজার শিক্ষক প্রেসক্লাবের সামনে

তাদের দাবি, শিক্ষাক্ষেত্রে বিরাজমান সরকারি-বেসরকারি বৈষম্য দূর করার জন্য মাধ্যমিক শিক্ষা জাতীয়করণসহ ঈদুল ফিতরের আগেই শতভাগ উৎসব ভাতা, পূর্ণাঙ্গ বাড়ি ভাড়া ও চিকিৎসা ভাতা দিতে হবে। এছাড়াও আরো ১০ দাবি জানান তারা।

সে সময় শিক্ষক নেতারা বলেন, দেশের সিংহভাগ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পরিচালিত হচ্ছে এমপিওভুক্ত বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারী দ্বারা। পরিতাপের বিষয় এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীগণ মাত্র ১ হাজার টাকা বাড়ি ভাড়া, ২৫ শতাংশ উৎসব ভাতা এবং ৫০০ টাকা চিকিৎসা ভাতা পান। অথচ একই কারিকুলামের অধীন একই সিলেবাস, একই একাডেমিক সময়সূচি, একইভাবে প্রশ্নপত্র প্রণয়ন ও উত্তরপত্র মূল্যায়নের কাজে নিয়োজিত থেকেও আর্থিক সুবিধার ক্ষেত্রে সরকারি ও বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীদের মধ্যে রয়েছে পাহাড়সম বৈষম্য।

এনটিআরসিএর মাধ্যমে নিয়োগ প্রাপ্ত উচ্চতর ডিগ্রি অর্জন করা এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীরা মাত্র ১২ হাজার ৫০০ টাকা প্রারম্ভিক বেতনে শত-শত মাইল দূরে শিক্ষকতা পেশায় নিয়োজিত রয়েছেন। তাদের কোনো বদলির ব্যবস্থা না থাকা এবং এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের দীর্ঘ দিনের দাবির প্রেক্ষিতে ইএফটির মাধ্যমে সয়ংক্রিয়ভাবে বেতন দেয়া হলেও সরকারের দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের গাফলতির কারণে অনেক এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারী ৩ থেকে ৪ মাস যাবৎ বেতন ভাতা না পেয়ে অত্যন্ত মানবেতর জীবনযাপন করছেন।

তারা বলেন, বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীদের অবসরে যাবার পর অবসর সুবিধা ও কল্যাণ ট্রাস্টের টাকা পেতে বছরের পর বছর অপেক্ষা করতে হয়। ফলে অনেক শিক্ষক-কর্মচারী টাকা পাওয়ার আগেই অর্থাভাবে বিনা চিকৎসায় মৃত্যুবরণ করছেন। তাছাড়া বিগত সরকার কোনো প্রকার সুবিধা না দিয়েই সম্পূণ অবৈধভাবে অবসর সুবিধা ও কল্যাণ ট্রাস্ট খাতে শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন থেকে প্রতি মাসে অতিরিক্ত ৪ শতাংশ কর্তন করছে যা অত্যন্ত অমানবিক। তাই অতিরিক্ত ৪ শতাংশ কর্তনের প্রতিবাদে এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারী বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির (বিটিএ) নেতৃত্বে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিলসহ অবসর সুবিধা বোর্ড ও কল্যাণ ট্রাস্ট অফিস ঘেরাও করেছিলেন। পরিতাপের বিষয় আজও কোন প্রতিকার পায়নি। সদ্য বিদায়ী শিক্ষা উপদেষ্টা জানিয়েছেন শিক্ষক-কর্মচারীদের অবসর ও কল্যাণ ট্রাস্টের ৭ থেকে ৮ হাজার কোটি টাকা লোপাট হয়েছে। যার ফলে শিক্ষক-কমচারীদের মাঝে হতাশা বিরাজ করছে। বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি (বিটিএ)'র পক্ষ থেকে এর সুষ্ঠু তদন্ত করে দোষী ব্যক্তিদের বিচারের আওতায় আনার জোর দাবি জানান।

১০ দফা দাবি হলো— মেধাবীদের শিক্ষকতা পেশায় আকৃষ্টকরাসহ শিক্ষাক্ষেত্রে সরকারি ও বেসরকারি বৈষম্য দূর করার লক্ষ্যে মাধ্যমিক শিক্ষা জাতীয়করণ করা। আসন্ন ঈদুল ফিতরের আগেই সরকারি শিক্ষক-কর্মচারীদের ন্যায় পূর্ণাঙ্গ উৎসব ভাতা, বাড়ি ভাড়া ও চিকিসাভাতা প্রদান করা। ইএফটি সমস্যার দ্রুত সমাধান করা। সরকারি স্কুলের ন্যায় বেসরকারি স্কুলের 'প্রধান শিক্ষক'-এর বেতন স্কেল ৬ষ্ঠ গ্রেডে এবং সহকারী প্রধান শিক্ষকদের ৭ম গ্রেডসহ টাইম স্কেল প্রদান করা। এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের সার্বজনীন বদলি প্রথা চালু করা। সরকারি শিক্ষক-কর্মচারীদের ন্যায় পেনশন প্রথা চালু করা এবং চালু না হওয়া পর্যন্ত অবসর নেয়ার ৬ মাসের মধ্যে অবসর সুবিধা ও কল্যাণ ট্রাস্টের পাওনা প্রদানসহ শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন থেকে অতিরিক্ত ৪ শতাংশ কর্তন বন্ধ করা। শিক্ষক-কর্মচারীদের চাকরির বয়স বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মচারীদের ন্যায় ৬৫ বছরে উন্নীতকরা। পাবলিক সার্ভিস কমিশনের ন্যায় শিক্ষক নিয়োগ কমিশন গঠন এবং শিক্ষা প্রশাসনের বিভিন্ন জ্বরে আনুপাতিক হারে এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের পদায়ন করা। ম্যানেজিং কমিটি-গভর্নিং বডি প্রথা বিলুপ্ত করে সরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ন্যায় পরিচালনা করা। স্বীকৃতিপ্রাপ্ত সব বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করা।

#এমপিও #স্কুল #শিক্ষক #শিক্ষার্থী