ঈদের দিন যমুনায় তলিয়ে গেলো স্কুল | স্কুল নিউজ

ঈদের দিন যমুনায় তলিয়ে গেলো স্কুল

গত এক সপ্তাহে ভাঙনের কবলে পড়ে কয়েক শত ঘরবাড়ি, বসতভিটা ও ফসলি জমিও নদীগর্ভে তলিয়ে গেছে। স্কুল ভবন বিলীন হয়ে যাওয়ায় ওই বিদ্যালয়ের কোমলমতি শিক্ষার্থীদের শিক্ষা কার্যক্রম নিয়ে তৈরি হয়েছে অনিশ্চয়তা।

#ঈদ #যমুনা #স্কুল

কয়েক দিনের প্রবল বৃষ্টি ও যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধির সাথে সাথে পাল্লা দিয়ে মানিকগঞ্জের দৌলতপুর উপজেলার বাচামারা,বাঘুটিয়া,চরকাটারী ইউনিয়নে ব্যাপক ভাঙ্গন শুরু হয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় ঈদের দিন গতকাল শনিবার দুপুরে যমুনার গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে বাচামারা ইউনিয়নের কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত তিনতলা নিজ ভারাঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভবন।

গত এক সপ্তাহে ভাঙনের কবলে পড়ে কয়েক শত ঘরবাড়ি, বসতভিটা ও ফসলি জমিও নদীগর্ভে তলিয়ে গেছে। স্কুল ভবন বিলীন হয়ে যাওয়ায় ওই বিদ্যালয়ের কোমলমতি শিক্ষার্থীদের শিক্ষা কার্যক্রম নিয়ে তৈরি হয়েছে অনিশ্চয়তা।

বর্ষা শুরু হলেই নদীপাড়ের মানুষকে আতঙ্কে দিন কাটাতে হয়। প্রতি বছর ভাঙনে নিঃস্ব হয়ে পড়ে হাজারো পরিবার। পানি উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছে, ভাঙন রোধে তারা জরুরি ভিত্তিতে ১৪ হাজার জিও ব্যাগ ফেলবে।

পানি উন্নয়ন অফিসের তথ্যমতে, মানিকগঞ্জ জেলার বুক চিরে বয়ে চলেছে পদ্মা, যমুনা, কালীগঙ্গা, ধলেশ্বরী, ইছামতী ও গাজীখালিসহ ১৪টি নদী। এইসব নদীপাড়ের মানুষের কাছে ভাঙন যেন নিত্যদিনের সঙ্গী। প্রতি বর্ষায় হাজারো মানুষ তাদের জমি, ঘরবাড়ি হারিয়ে পথে বসে।

দৌলতপুর উপজেলার চর কালিয়াপুর, বাঘুটিয়া, ভারাঙ্গা, রংদারপাড়া, বিষ্ণুপুর, রামচন্দ্রপুর, আবুডাঙ্গা পূর্বপাড়া, চরকাটারি বোর্ডঘর বাজার, চরকাটারি সবুজসেনা হাইস্কুল, চরভারাঙ্গা সরকারপাড়া, মজম শেকেরপাড়া, বাচামারা পশ্চিমপাড়া, উত্তরখন্ড, সুবুদ্ধি, পাচুরিয়া, বাঘুটিয়া বাজার, পারুরিয়া বাজার, রাহাতপুর, বৈন্যাঘাট, লাউতাড়া, লাউতাড়া আশ্রয়ন কেন্দ্র, চকবাড়াদিয়া, চকমিরপুর, ভাঙা রামচন্দ্রপুর, রামচন্দ্রপুর নতুনপাড়া, হাতকোড়া, চরমাস্তল, বিষ্ণুপুর খাঁপাড়া ও পারমাস্তলসহ অন্তত ২৮টি এলাকা বর্তমানে ভাঙনের চরম ঝুঁকিতে রয়েছে।

বাঘুটিয়া ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মো. গোলাম ইয়াসিন অভিযোগ করে বলেন, “প্রতি বছর বাঘুটিয়া এলাকায় বালুমহল ইজারা নিয়ে যমুনা থেকে বালু উত্তোলন করা হয়। এর ফলেই নদীর গতিপথ পরিবর্তন হয়ে ভাঙন তীব্র হয়। আমাদের গ্রামের শত শত পরিবার প্রতিবছর ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। যদি বালু তোলা বন্ধ করা যেত, তাহলে ভাঙন অনেকটাই কমত।”

বাচামারা ইউনিয়নের ইউপি সদস্য মো. ওয়াজেদ আলী সরকার বলেন, “গত ২–৩ দিনে নদীতে প্রবল স্রোতের কারণে ব্যাপক ভাঙন দেখা দিয়েছে। কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত নিজ ভারাঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভবন চোখের সামনেই নদীগর্ভে তলিয়ে গেল। আমরা সরকারের কাছে ভাঙন রোধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।”

এ বিষয়ে মানিকগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মুহাম্মদ আক্তারুজ্জামান বলেন, “দৌলতপুরসহ নদীপাড়ের ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাগুলোর ভাঙন ঠেকাতে আমরা জরুরি ভিত্তিতে ১৪ হাজার জিও ব্যাগ ফেলতে যাচ্ছি। পাশাপাশি নদীভাঙন রোধে একটি স্থায়ী প্রকল্প হাতে নেওয়ার লক্ষ্যে সম্ভাব্যতা যাচাই (ফিজিবিলিটি স্টাডি) চলছে। এর জন্য একটি কারিগরি কমিটিও গঠন করা হয়েছে।”

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নাহিয়ান নুরেন বলেন, “শুক্রবার বিদ্যালয় ভবনের ভাঙনের খবর পেয়ে তাৎক্ষণিকভাবে উপজেলা প্রকৌশলীকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল ভবনটি নিলামে দেওয়া সম্ভব কি না তা যাচাই করতে। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ভবনটি ভাঙনের ফলে এতটাই ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে যে কোনো উদ্যোগ নেওয়া সম্ভব হয়নি। পরে ঈদের দিন আমরা নিশ্চিত হই ভবনটি নদীগর্ভে সম্পূর্ণ বিলীন হয়ে গেছে।”

শিক্ষাসহ সব খবর সবার আগে জানতে দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গেই থাকুন। ভিডিয়োগুলো মিস করতে না চাইলে এখনই দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন এবং বেল বাটন ক্লিক করুন। বেল বাটন ক্লিক করার ফলে আপনার স্মার্ট ফোন বা কম্পিউটারে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভিডিওগুলোর নোটিফিকেশন পৌঁছে যাবে।

দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেল SUBSCRIBE করতে ক্লিক করুন।

#ঈদ #যমুনা #স্কুল