গুঁড়িয়ে দেওয়া হলো টিএমএসএসের অবৈধ কারখানা | বিবিধ নিউজ

গুঁড়িয়ে দেওয়া হলো টিএমএসএসের অবৈধ কারখানা

করতোয়া নদীর তীরে জমি দখল করে অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ করেছিল বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা টিএমএসএস।

#আদালত #অন্তর্বর্তীকালীন সরকার

করতোয়া নদীর তীরে জমি দখল করে অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ করেছিল বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা টিএমএসএস। বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের মদদপুষ্ট সংস্থাটির মালিক হোসনে আরা বেগমের দাপটে কোনো প্রশাসন তার এই অবৈধ স্থাপনায় হাত দিতে পারেনি। অবশেষে বগুড়া জেলা প্রশাসক হোসনা আফরোজ এনজিওটির একটি গ্লাস কারখানা গুঁড়িয়ে দিতে সক্ষম হয়েছেন।

বুধবার সকাল থেকে বগুড়া সদরের বাঘোপাড়া এলাকায় ঠেঙ্গামারা মহিলা সবুজ সংঘ (টিএমএসএস) কর্তৃক অবৈধভাবে গড়ে তোলা প্রাইভেট ইকোনমিক জোনের স্থাপনাগুলো উচ্ছেদে অভিযান শুরু করে জেলা প্রশাসনের নেতৃত্বাধীন যৌথবাহিনী।

অভিযোগ ছিল, টিএমএসএস বহুদিন ধরেই সামাজিক উন্নয়নের আড়ালে করতোয়ার বুক চিরে একের পর এক বাণিজ্যিক স্থাপনা নির্মাণ করে আসছে। নদীর স্বাভাবিক প্রবাহে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করে এমন স্থাপনা নির্মাণের অভিযোগে ২০২৩ খ্রিষ্টাব্দেই প্রতিষ্ঠানটিকে ১০ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। কিন্তু তারপরেও থেমে থাকেনি দখল কার্যক্রম। বরং বাঘোপাড়ায় নদীর প্রায় আধা কিলোমিটার এলাকা ভরাট করে ‘পুণ্ড্র ইকোনমিক জোন’ নামে বেসরকারি অর্থনৈতিক অঞ্চল নির্মাণের কাজ চলছিল পুরোদমে। অবশেষে নদী রক্ষা আন্দোলন, স্থানীয়দের দাবি এবং পরিবেশ রক্ষায় প্রশাসনের সক্রিয় ভূমিকায় বুধবার সকাল থেকে শুরু হয় বড় পরিসরের উচ্ছেদ অভিযান। জেলা প্রশাসক হোসনা আফরোজার নেতৃত্বে, পুলিশ সুপার মুসা আল জেদান পিপিএম, জেলা সরকারি কৌঁসুলি, পানি উন্নয়ন বোর্ড ও সংশ্লিষ্ট দফতরের প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে গঠিত একটি কমিটি অভিযানটির তদারকি করছেন।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী, টিএমএসএস বাঘোপাড়া এলাকায় নদীর প্রায় ৩৫৫ মিটার জায়গা অবৈধভাবে দখল করে স্থাপনা গড়ে তুলেছে। ভূমির হিসাবে যা প্রায় ৫৬ একর জায়গার সম পরিমাণ। সরকারি খাস জমিতে অনুমতি ছাড়াই এসব স্থাপনা নির্মিত হয়। এর মধ্যে একটি গ্লাস ফ্যাক্টরিও রয়েছে। যা করতোয়া নদীর কোলঘেঁষে স্থাপন করা হয়। অভিযানে যৌথবাহিনী সেটিসহ একাধিক স্থাপনা উচ্ছেদ করে।

অভিযানের সময় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সাংবাদিকদের জানান, নদী ও জনস্বার্থ রক্ষায় এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে।

তিনি বলেন, সরকারি জমিতে যেকোনো ধরনের দখলদারিত্ব বরদাশত করা হবে না। নদীর স্বাভাবিক গতিপথ পুনরুদ্ধার করতে প্রশাসন সর্বোচ্চ কঠোর অবস্থান নেবে।

জেলা প্রশাসক হোসনা আফরোজ বলেন, টিএমএসএস সবচেয়ে বেশি নদী দখল করেছে। আমরা যেকোনো মূল্যে করতোয়া দখলমুক্ত করব। তিনি আরও জানান, বাকি অবৈধ স্থাপনাগুলোকেও পর্যায়ক্রমে উচ্ছেদ করা হবে, এবং নদীর স্বাভাবিক প্রবাহ নিশ্চিত করতে পুরো এলাকায় পুনঃখনন ও মাপজোখ কার্যক্রমও চলমান থাকবে।

অভিযানে অংশ নেওয়া একাধিক কর্মকর্তা জানান, নদীর জমি কখনোই ব্যক্তিমালিকানায় লিজ দেওয়া সম্ভব নয়। টিএমএসএসের পক্ষ থেকে আদালতের রায় ও জমি লিজের কাগজপত্র দেখানো হলেও, প্রশাসনের মতে তাতে নদী দখলের বৈধতা পাওয়া যায় না। তবে প্রশাসক আরও জানায়, ভবিষ্যতে নদী বা সরকারি জমিতে যেকোনো ধরনের অবৈধ দখল ঠেকাতে নিয়মিত নজরদারি ও কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা অব্যাহত থাকবে।

#আদালত #অন্তর্বর্তীকালীন সরকার