ছড়ার জনক সুকুমার বড়ুয়ার জন্মদিন আজ | জম্মদিন নিউজ

ছড়ার জনক সুকুমার বড়ুয়ার জন্মদিন আজ

প্রখ্যাত এই ছড়াকার জন্ম ১৯৩৮ খ্রিষ্টাব্দের এই দিনে চট্টগ্রাম জেলার রাউজান থানার মধ্যম বিনাজুরি গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবার নাম সর্বানন্দ বড়ুয়া এবং মা কিরণ বালা বড়ুয়া। ছোটবেলায় তার নাম ছিলো বিলাতী। তার জন্মস্থান মধ্যম বিনাজুরি গ্রামে তিনি এই নামেই পরিচিত ছিলেন।

ছড়াশিল্পী সুকুমার বড়ুয়া

‘এমন যদি হতো

ইচ্ছে হলে আমি হতাম

প্রজাপতির মতো।’

এমন সব মজার মজার ছড়ার জনক সুকুমার বড়ুয়া। তিনি বাংলাদেশের একজন নন্দিত ছড়াশিল্পী। তার ছন্দকুশলতা, ভাবনার স্বকীয়তা এবং বিষয়ের চমক পাঠকের মনে মুহূর্তেই আনন্দ সঞ্চার করে। তিনি লিখেছেন--

অসময়ে মেহমান

ঘরে ঢুকে বসে যান

বোঝালাম ঝামেলার

যতগুলো দিক আছে

তিনি হেসে বললেন,

ঠিক আছে ঠিক আছে।

প্রখ্যাত এই ছড়াকার জন্ম ১৯৩৮ খ্রিষ্টাব্দের এই দিনে চট্টগ্রাম জেলার রাউজান থানার মধ্যম বিনাজুরি গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবার নাম সর্বানন্দ বড়ুয়া এবং মা কিরণ বালা বড়ুয়া। ছোটবেলায় তার নাম ছিলো বিলাতী। তার জন্মস্থান মধ্যম বিনাজুরি গ্রামে তিনি এই নামেই পরিচিত ছিলেন।

মামাবাড়িতে আসার পর মামি তার নাম রাখেন সুকুমল। পরবর্তী সময়ে মামা নাম দেন সুকুমার। সেই থেকে তিনি সুকুমার বড়ুয়া নামে পরিচিতি লাভ করেন। ছয় বছর বয়সে সুকুমার তার বাবাকে হারান।

বর্ণজ্ঞান থেকে প্রথম শ্রেণি পর্যন্ত তিনি মামাবাড়ির স্কুলে পড়াশোনা করেছেন। এরপর বড় দিদির বাড়িতে এসে তিনি ডাবুয়া স্কুলে ভর্তি হন। কিন্তু সেই স্কুলে তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ার সময় অর্থ ও সুযোগের অভাবে তার পড়ালেখা বন্ধ হয়ে যায়।

অল্প বয়স থেকেই তিনি বিভিন্ন সময় মেসে কাজ করেছেন। জীবিকা নির্বাহের জন্য একটা সময় তিনি ফলমূল, আইসক্রিম, বুট, বাদাম ইত্যাদি ফেরি করেছেন।

১৯৬২ খ্রিষ্টাব্দের ৩ ফেব্রুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী হিসেবে ৬৪ টাকা বেতনের চাকরিতে যোগ দেন। ১৯৬৪ খ্রিষ্টাব্দের ২১ এপ্রিল তিনি চট্টগ্রামের গহিরা গ্রামের শিক্ষক প্রতাপ চন্দ্র বড়ুয়ার মেয়ে ননী বালার সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। তিনি তিন মেয়ে ও এক ছেলের জনক। ১৯৭৪ খ্রিষ্টাব্দে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারী হিসেবে নিযুক্ত হন। ১৯৯৯ খ্রিষ্টাব্দে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টোরকিপার হিসেবে অবসর গ্রহণ করেন।

সুকুমার বড়ুয়ার ছড়ায় আছে সরলতা। বিষয়-বৈচিত্র্য, সরস উপস্থাপনা, ছন্দ ও অন্ত্যমিলের অপূর্ব সমন্বয় তার ছড়াকে করেছে স্বতন্ত্র। প্রাঞ্জল ভাষায় আটপৌরে বিষয়কেও তিনি ছড়ায় ভিন্নমাত্রা দেন। তার ছড়া একাধারে বুদ্ধিদীপ্ত, তীক্ষ্ন, শাণিত, আবার কোমলও বটে। পাগলা ঘোড়া, ভিজে বিড়াল, ঠুসঠাস, ছড়া সমগ্র, লেজ আবিষ্কার, মজার পড়া ১০০ ছড়া ছাড়াও প্রায় ত্রিশটি ছড়াগ্রন্থের রচয়িতা সুকুমার বড়ুয়া বাংলা একাডেমি, শিশু একাডেমি, অগ্রণী শিশুসাহিত্য পুরস্কারসহ নানা সম্মাননায় ভূষিত হয়েছেন।