মাক্সিম গোর্কির মৃত্যুবার্ষিকী আজ | বিবিধ নিউজ

মাক্সিম গোর্কির মৃত্যুবার্ষিকী আজ

মাক্সিম গোর্কি নিঞ্জি নভগরদ এলাকায় জন্মগ্রহণ করেন। গোর্কির বাবার নাম ছিলো মাক্সিম পেশকভ ও মায়ের নাম ভারিয়া।

বিখ্যাত রুশ লেখক, সমাজতান্ত্রিক বাস্তববাদী সাহিত্যের প্রতিষ্ঠাতা মাক্সিম গোর্কির মৃত্যুবার্ষিকী আজ। তিনি নিজেই তার সাহিত্যিক ছদ্মনাম হিসেবে ‘গোর্কি’ অর্থাৎ ‘তেতো’ নামকে বেছে নেন। তার অনেক বিখ্যাত রচনার মধ্যে ‘মা’ একটি কালজয়ী উপন্যাস। তিনি সাহিত্যে নোবেল পুরস্কারের জন্য পাঁচবারের মনোনীত হয়েছিলেন।

একজন লেখক হিসেবে সফল হওয়ার প্রায় ১৫ বছর আগে থেকে তিনি প্রায়শই চাকরি পরিবর্তন করেছিলেন এবং রাশিয়ার বিভিন্ন প্রদেশ ঘুরে বেড়াতেন; এই অভিজ্ঞতাগুলি পরে তার লেখার ওপর প্রভাব ফেলেছে। গোর্কি উদীয়মান মার্কসবাদী সামাজিক-গণতান্ত্রিক আন্দোলনে সক্রিয় ছিলেন।

তিনি বলশেভিক পার্টির সঙ্গে কিছুদিন যুক্ত থেকে কাজ করেছিলেন। তার জীবনের একটি উল্লেখযোগ্য অংশের জন্য তিনি সোভিয়েত ইউনিয়ন থেকে নির্বাসিত হয়েছিলেন।

মাক্সিম গোর্কি নিঞ্জি নভগরদ এলাকায় জন্মগ্রহণ করেন। গোর্কির বাবার নাম ছিলো মাক্সিম পেশকভ ও মায়ের নাম ভারিয়া। তাদের প্রথম সন্তান আলেক্সেই পেশকভের জন্ম হয় ১৮৬৮ খ্রিষ্টাব্দের ২৮ মার্চ। পিতৃদত্ত নাম মুছে গোর্কি নামেই উত্তরকালে জগৎবিখ্যাত হন।

তিনি ৯ বছর বয়সে পিতৃমাতৃহীন হন। বাবা মারা যাবার পর মায়ের সঙ্গে এসে আশ্রয় নিলেন মামার বাড়ি নিজনি নভগরোদ শহরে। তারপরে স্থানীয় স্কুলে ভর্তি হলেন। ইতোমধ্যে মা আরেকজনকে বিয়ে করেছেন। হঠাৎ করে একদিন মা মারা যান।

১৮৯৫ খ্রিষ্টাব্দে একাতেরিনা নামের এক নারীর প্রেমে পড়েন তিনি। বেশ কিছুদিন প্রেমের পর ১৮৯৬ খ্রিষ্টাব্দে তারা বিয়ে করেন। ১৯০৪ খ্রিষ্টাব্দে গোর্কি-একাতেরিনার মাত্র আট বছরের দাম্পত্য জীবন ভেঙে যায়। আইনত বিবাহ বিচ্ছেদ না হলেও তারা আর একত্রে জীবনযাপন করেননি।

এরই মাঝে নতুন করে প্রেমে পড়েন বহুভাষাবিদ ও মস্কো আর্ট থিয়েটারের অভিনেত্রী, একই সাথে বলশেভিক পার্টির সদস্য মারিয়া ফিওদরনা আন্দ্রেইয়েভার সঙ্গে। পরবর্তীতে অবশ্য তার সঙ্গেও বিচ্ছেদ হয়ে যায়। কিন্তু বিচ্ছেদ হলেও স্ত্রী একাতেরিনা ও প্রেমিকা মারিয়া উভয়েই গোর্কির খোঁজখবর রেখেছেন।

১৮৮৭ খ্রিষ্টাব্দে তিনি আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। পরবর্তীতে তিনি বাড়ি থেকে বের হয়ে যান এবং দীর্ঘ ৫ বছর ধরে পায়ে হেঁটে সমগ্র রাশিয়া ভ্রমণ করেন। ১৮৮২ খ্রিষ্টাব্দে সাহিত্য রচনা শুরু করেন। তিনি জেহুদিয়েল কামিদা ছদ্মনামে লিখেছিলেন।

প্রথাগত রচনার বাইরে গোর্কি তার লেখায় প্রাধান্য দেন সমাজের নিচুশ্রেণীর খেঁটে খাওয়া শ্রমজীবী মানুষের জীবনের গল্পকে।

১৮৯৮ খ্রিষ্টাব্দে তার লেখা প্রবন্ধ ও গল্প নিয়ে একটি সংকলন রেখাচিত্র ও কাহিনী প্রকাশিত হয়। ১৯০০ খ্রিষ্টাব্দে প্রকাশিত হয় তার সার্থক উপন্যাস ফোমা গর্দিয়েভ। ১৯০০ থেকে ১৯০৫ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত গোর্কির লেখা আরো আশাবাদী হয়ে ওঠে। ১৯০৭ খ্রিষ্টাব্দে তিনি রচনা করেন তার বিশ্ববিখ্যাত উপন্যাস ‘মা’।

১৯৩৪ খ্রিষ্টাব্দের ডিসেম্বরে মস্কোর কাছে গোর্কিকে তার বাসায় অঘোষিতভাবে গৃহবন্দি করা হয়েছিলো। ম্যাক্সিম গোর্কি ১৯৩৬ খ্রিষ্টাব্দের এই দিনে নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে মারা যান।