ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ফজলুল হক মুসলিম হলে চোর সন্দেহে গণপিটুনিতে তোফাজ্জল নামে মানসিক ভারসাম্যহীন এক যুবককে হত্যা মামলায় পুলিশের দেওয়া অভিযোগপত্রে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে নারাজি দাখিল করা হয়েছে।
রোববার (২ ফেব্রুয়ারি) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. সাইফুজ্জামানের আদালতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষে অ্যাডভোকেট সেলিম জাবেদ এ নারাজি দাখিল দাখিল করেন।
মামলার তদন্ত সুষ্ঠু হয়নি মর্মে তিনি এ নারাজি দাখিল করেন। দুপুরে এ বিষয়ে শুনানি হওয়ার কথা রয়েছে।
তোফাজ্জলের ফুফাতো বোন আসমা আক্তার আদালতে আজ হাজির হয়েছেন। তাদের আইনজীবী ব্যারিস্টার জিয়াউর রহমান বলেন, বিচার প্রক্রিয়াকে বিলম্বিত করতে তারা এ নারাজি দাখিল করেছেন। আমরা চাচ্ছি, চার্জশিটটি (অভিযোগপত্র) যেন আদালত গ্রহণ করে বিচার প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করেন।
জানা যায়, গত বছরের ১৮ সেপ্টেম্বর রাত পৌনে ৮টার সময় একজন যুবক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক মুসলিম হলের গেটে সন্দেহজনকভাবে ঘোরাফেরা করছিলেন। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু ছাত্র তাকে আটক করে প্রথমে ফজলুল হক মুসলিম হলের মূল ভবনের গেস্ট রুমে নিয়ে যান। পরে মোবাইল চুরির অভিযোগ করে তারা ওই যুবককে এলোপাতাড়ি চড়-থাপ্পড় ও কিল-ঘুষি মারেন। জিজ্ঞাসাবাদে ওই যুবক তার নাম তোফাজ্জল বলে জানান। পরে তাকে মানসিক রোগী বুঝতে পেরে তাকে হলের ক্যান্টিনে নিয়ে খাবার খাওয়ানো হয়। এরপর তাকে হলের দক্ষিণ ভবনের গেস্ট রুমে নিয়ে জানালার সঙ্গে হাত বেঁধে স্ট্যাম্প, হকিস্টিক ও লাঠি দিয়ে উচ্ছৃঙ্খল কিছু ছাত্র বেধড়ক মারধর করলে তিনি অচেতন হয়ে পড়েন। পরে গুরুতর আহত অবস্থায় রাত ১টার দিকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নেয়া হলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। পরদিন দুপুরে শাহবাগ থানায় মামলা করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের এস্টেট অফিসের সুপারভাইজার মোহাম্মদ আমানুল্লাহ। মামলাটি তদন্ত করে গত ৩০ ডিসেম্বর আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা শাহবাগ থানার ইন্সপেক্টর মো. আসাদুজ্জামান। অভিযোগপত্রে প্রতিষ্ঠানের ২১ শিক্ষার্থীকে অভিযুক্ত করা হয়েছে।