প্রেমে বাধা দেওয়ায় ঢাকার আশুলিয়ার হাজী ইউনুস আলী স্কুল ও কলেজে শিক্ষক উৎপল কুমার সরকারকে পিটিয়ে হত্যা করেছিলেন শিক্ষার্থী আশরাফুল আহসান। হত্যার দায় স্বীকার করে তিনি আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিও দেন। তবে আলোচিত এই ঘটনার তিন বছরেও মামলাটির বিচারকাজ শেষ হয়নি।
এমনকি অভিযোগপত্রের ৩৬ জন সাক্ষীর কারোর সাক্ষ্যগ্রহণ সম্পন্ন হয়নি।
এ বিষয়ে ঢাকার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর ইকবাল হোসেন বলেন, মামলাটি সাক্ষ্যগ্রহণ পর্যায়ে রয়েছে। সাক্ষীদের হাজির করে দ্রুত মামলার বিচারকাজ সম্পন্ন করা হবে। তবে মামলার বাদী অসীম কুমার সরকারের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তার কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।
আসামিপক্ষের আইনজীবী মো. জাকিরুল ইসলাম বলেন, জিতুর বিচার এই আদালতে হওয়ার সুযোগ নেই। শিশু আদালতে বিচার হবে। এ বিষয়ে জেলা জজ আদালতে রিভিশন করব। বিচারপ্রক্রিয়া শেষে কী হবে, এখন কিছুই বলা যাবে না।
বর্তমানে মামলাটি ঢাকার চতুর্থ অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতে বিচারাধীন। গত ১৫ জুন এ মামলার সাক্ষ্য গ্রহণের দিন ধার্য ছিল। তবে সাক্ষী আদালতে হাজির হননি। এ জন্য আদালত পরবর্তী সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য আগামী ১৭ আগস্ট দিন ধার্য করেন। তবে এ মামলায় জিতুর বাবা উজ্জ্বল হাইকোর্ট থেকে জামিনে থাকলেও জিতু কারাগারে আটক।
এর আগে তদন্ত শেষে ২০২৩ খ্রিষ্টাব্দের ৩১ মে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও আশুলিয়া থানার উপপরিদর্শক মো. এমদাদুল হক জিতু ও তার বাবা উজ্জ্বলকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। গত ২৬ জানুয়ারি আদালত অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে বিচার শুরুর আদেশ দেন। পরবর্তী সময়ে গত ২৪ এপ্রিল মামলার বাদী অসীম কুমারের আংশিক সাক্ষ্যগ্রহণ হয়েছে।
মামলার সূত্রে জানা গেছে, ঢাকার আশুলিয়ার হাজী ইউনুস আলী স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষক উৎপল কুমার সরকার। তিনি কলেজের শৃঙ্খলা কমিটির আহ্বায়ক ছিলেন। ওই স্কুলের দশম শ্রেণির ছাত্র ছিলেন আশরাফুল ইসলাম জিতু। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বিভিন্ন ধরনের অপকর্মসহ ছাত্রীদের ইভ টিজিং করত জিতু। এসবে বাধা দেওয়ায় শিক্ষক উৎপলের ওপর ক্ষিপ্ত হন আসামি জিতু। পরে ২০২২ খ্রিষ্টাব্দের ২৫ জুন দুপুরে কলেজে মেয়েদের ক্রিকেট খেলা চলাকালে আসামি জিতু উৎপল কুমারকে হত্যার উদ্দেশ্যে ক্রিকেট খেলার স্ট্যাম্প দিয়ে মাথায় ও কপালে আঘাত করে গুরুতর জখম করে। পরে উৎপলকে গণস্বাস্থ্য হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবস্থার অবনতি হলে তাকে সাভারের এনাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউতে রাখা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওই বছরের ২৭ জুন উৎপল মারা যান।এ ঘটনায় উৎপলের ভাই অসীম কুমার সরকার বাদী হয়ে আশুলিয়া থানায় মামলা করেন।