দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) অভিযানের একটি সংবাদ ফেসবুকে শেয়ার করায় মাদারীপুরের রাজৈরে লক্ষ্মী বিশ্বাস নামের এক সহকারী শিক্ষিকাকে একসঙ্গে দুই কর্মকর্তা শোকজের চিঠি দিয়েছেন। এক কর্মদিবসের মধ্যে ওই শিক্ষিকাকে ব্যাখ্যাও দিতে বলা হয়েছে শোকজ চিঠিতে। সেই সঙ্গে তাকে বিভাগীয় মামলার হুমকিও দেয়া হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় জেলা জুড়ে সমালোচনার ঝড় বইছে।
শোকজ চিঠিতে স্বাক্ষর করেছেন রাজৈর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা গুলসান আরা এবং সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুস সালাম মিয়া। চিঠিতে বলা হয়, বেসরকারি টিভি চ্যানেলে প্রচারিত দুদকের অভিযান সংক্রান্ত একটি সংবাদ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করে সরকারি কর্মচারী আচরণ বিধি ভঙ্গ করেছেন ওই শিক্ষিকা। যদিও চিঠিতে স্বাক্ষর করা দুই শিক্ষা কর্মকর্তার দাবি, উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশেই শোকজের চিঠিতে স্বাক্ষর করেছেন তারা।
লক্ষ্মী বিশ্বাস জানান, এক কর্মকর্তা ইনবক্সে ওই সংবাদ পাঠাতে বলেন। পাঠানোর সময় অসাবধানতাবশত সেটি ফেসবুকে শেয়ার হয়ে যায়। পরে বিষয়টি বুঝতে পেরে তাৎক্ষণিকভাবে লিংকটি মুছে ফেলি। কিন্তু বিষয়টি যে এতোটা দূর গড়াবে, তা বুঝিনি।
প্রসঙ্গত, সম্প্রতি মাদারীপুর জেলায় সহকারী শিক্ষক নিয়োগ ও পদায়নে ঘুষ লেনদেনের অভিযোগ ওঠে জেলা সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা মনজুর রহমানের বিরুদ্ধে। এছাড়াও ঝরে পড়া শিক্ষার্থীদের জন্য বরাদ্দ বেতন ও শিক্ষা সামগ্রীর অর্থ আত্মসাতের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে দুদকের একটি তদন্ত দল অভিযান চালায়।
এদিকে দুদকের মাদারীপুর জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. আক্তারুজ্জামান এ ঘটনাকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে আখ্যা দিয়ে বলেন, একজন সরকারি কর্মকর্তা কর্তৃক এমন একটি অভিযানের সংবাদ শেয়ার করায় শোকজ করা দুঃখজনক। একই ফরমেটে দুই কর্মকর্তা যে চিঠিতে স্বাক্ষর করেছেন, তাও উদ্দেশ্যমূলক।
রাজৈর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা গুলসান আরা বলেন, শিক্ষিকা লক্ষ্মী বিশ্বাস ফেসবুকে শেয়ার করে সরকারি আচরণবিধি লঙ্ঘন করেছেন। জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার নির্দেশেই কারণ দর্শানোর চিঠি পাঠানো হয়েছে।
অন্যদিকে মাদারীপুর জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের নজরে আসলে লক্ষ্মী বিশ্বাসকে কারণ দর্শানোর নোটিস পাঠানো হয়। ওই শিক্ষিকার সঙ্গে অন্যায় কোন কাজ করা হবে না।