বিশ্ববিদ্যালয় হোক গবেষণাবান্ধব | বিশ্ববিদ্যালয় নিউজ

বিশ্ববিদ্যালয় হোক গবেষণাবান্ধব

‘বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনকে (ইউজিসি) ভবিষ্যতে উচ্চশিক্ষা কমিশন করতে কিছু সংস্কার করতে চাই। আমাদের গবেষণা উপকরণের অপ্রতুলতা আছে। কোনো প্রতিষ্ঠানে যে সুবিধা আছে, অন্য প্রতিষ্ঠানে আবার তা নেই। ইউজিসির মাধ্যমে যদি এটার একটা নেটওয়ার্ক গড়ে তোলা যায়, তাহলে আমাদের যতটুকুই গবেষণাগার আছে, আমরা এর পূর্ণ ব্যবহার করতে পারবো।’

#ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় #গবেষক

দেশে গবেষণাবান্ধব বিশ্ববিদ্যালয় নেই। কিন্তু আন্তর্জাতিক মানের শিক্ষা ও গবেষণাগার নিশ্চিত করা এখন সময়ের দাবি। এজন্য ইউজিসিকে ভবিষ্যতে উচ্চশিক্ষা কমিশন হিসেবে গড়ে তোলার পরিকল্পনা চলছে।

নিজেদের উপযোগী গবেষণাগারে, নিজস্ব গবেষণার মাধ্যমে নিজেরা পেটেন্ট নিতে পারলে, আমরাও ইউরোপ-আমেরিকানদের মতো মাল্টিন্যাশনাল হতে পারবো এবং এটি করা ছাড়া উন্নতির কোনো উপায় নেই।

শুক্রবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে আয়োজিত ‘ডিইউ রিসার্চ এক্সিলেন্স রিকগনিশন ২০২৫’ অনুষ্ঠানে এমন অভিমতই তুলে ধরেন আলোচকরা।

প্রধান অতিথি পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনকে (ইউজিসি) ভবিষ্যতে উচ্চশিক্ষা কমিশন করতে কিছু সংস্কার করতে চাই।

আমাদের গবেষণা উপকরণের অপ্রতুলতা আছে। কোনো প্রতিষ্ঠানে যে সুবিধা আছে, অন্য প্রতিষ্ঠানে আবার তা নেই।

ইউজিসির মাধ্যমে যদি এটার একটা নেটওয়ার্ক গড়ে তোলা যায়, তাহলে আমাদের যতটুকুই গবেষণাগার আছে, আমরা এর পূর্ণ ব্যবহার করতে পারবো।’

উপদেষ্টা বলেছেন, ‘আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে আসলে স্নাতক পর্যায়ের শিক্ষা দান করা হয়। আমাদের গবেষণাবান্ধব বিশ্ববিদ্যালয় নেই, যেখানে পোস্ট-ডকসহ সব সুবিধা থাকবে। কিন্তু এখন আমাদের সেদিকে এগোতে হবে।’

বিশ্ববিদ্যালয় হোক গবেষণাবান্ধব

তিনি আরো বলেন, ‘এসডিসি থেকে উত্তরণের পর আমাদের ওপর পেটেন্ট রাইট আরোপ হবে, বিশেষ করে ওষুধ শিল্পে। বহুজাতিক কোম্পানিদের পেটেন্টনির্ভর মুনাফা, এটাই এখন বিশ্বজুড়ে আধিপত্য বিস্তার করছে।

তাই আমাদের মতো করে, আমাদের দেশের উপযোগী করে, নিজস্ব অর্থায়নে গবেষণা পরিচালিত করলে, নিজেরা পেটেন্ট করতে পারবো। তাহলে আমরাও পেটেন্ট রপ্তানি করতে পারবো। আমরাও তখন মাল্টিন্যাশনাল হবো।’

বিশেষ বক্তব্যে ইমেরিটাস অধ্যাপক ড. এ এফ সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ‘ফ্রান্সিস বেকন ইংল্যান্ডের সর্বোচ্চ আদালতের সর্বোচ্চ বিচারক ছিলেন। কিন্তু বিজ্ঞানের জন্য গবেষণা করতে গিয়ে তিনি প্রাণ দিয়েছেন। পৃথিবীকে বোঝার জন্য এবং পৃথিবীকে বদলানোর জন্য গবেষণা প্রয়োজন।’

তিনি আরো বলেছেন, ‘যে উন্নতি আমরা দেখছি, সেই উন্নতি হলো অবনতি। ব্যক্তি মালিকানা সামাজিক মালিকানাকে বিপর্যস্ত করেছে। মানুষের ভোগবাদ চরম পর্যায়ে গিয়ে পৌঁছেছে। এসব বিষয় নিয়ে আমাদের ভাবতে হবে। এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের জন্য গবেষণা খুবই দরকার।’

সভাপতির বক্তব্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খান বলেন, ‘গবেষণার মানোন্নয়নে এবং আন্তর্জাতিক মানের গবেষণা ও গবেষক তৈরির পরিবেশ তৈরির জন্য বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে সমঝোতা বাড়ানোর চেষ্টা করছি।

আমরা তাদের সাহায্য নেবো। আমাদের আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় টিমওয়ার্ক বাড়ানো এখন খুবই দরকার। সোশ্যাল সায়েন্স অ্যান্ড পিওর সায়েন্সের মধ্যের সংযোগ স্থাপন করা দরকার।’

শিক্ষকদের উদ্দেশ্যে তিনি আরো বলেন, ‘আমাদের অনেক শিক্ষকের অনেক গবেষণা আছে। কিন্তু অনেকেই আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে তাদের প্রোফাইল আপডেট করছেন না। সবাইকে নিজ নিজ প্রোফাইল আপডেট করতে হবে। শিক্ষকরা সিরিয়াস হলে আমরা আমাদের শিক্ষা ও গবেষণার মান বদলে দিতে পারবো।’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা ও উদ্ভাবন কার্যক্রমকে উৎসাহ প্রদান, গবেষণায় উৎকর্ষ সাধন, গবেষকদের অনুপ্রাণিত করা, নীতি নির্ধারকদের সঙ্গে গবেষকদের সংযোগ স্থাপন এবং জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা কার্যক্রম তুলে ধরার লক্ষ্যে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।

অনুষ্ঠানের প্রথম অধিবেশনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. মামুন আহমেদের সভাপতিত্বে ‘উচ্চশিক্ষায় বিনিয়োগের গুরুত্ব’ শীর্ষক মূলপ্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. সায়মা হক বিদিশা।

এসময় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলা একাডেমির সভাপতি অধ্যাপক আবুল কাসেম ফজলুল হক।

দ্বিতীয় অধিবেশনে গবেষণা ও বুদ্ধিবৃত্তিক অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগ ও ইনস্টিটিউটের প্রায় তিনশ জন খ্যাতিমান শিক্ষক ও গবেষককে সম্মাননা প্রদান করা হয়।

জানা যায়, ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের যেসব গবেষকের গবেষণা প্রবন্ধ ‘হাই-ইম্প্যাক্ট জর্নালে’ প্রকাশিত হয়েছে, তাদেরকেই এই সম্মাননা দেয়া হয়েছে।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে আরো ছিলেন নিউ এজ পত্রিকার সম্পাদক নূরুল কবীর প্রমুখ।

শিক্ষাসহ সব খবর সবার আগে জানতে দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গেই থাকুন। ভিডিওগুলো মিস করতে না চাইলে এখনই দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন এবং বেল বাটন ক্লিক করুন। বেল বাটন ক্লিক করার ফলে আপনার স্মার্ট ফোন বা কম্পিউটারে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভিডিওগুলোর নোটিফিকেশন পৌঁছে যাবে।

দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেল   SUBSCRIBE  করতে ক্লিক করুন।

#ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় #গবেষক