বৃষ্টিতে ফুটবল খেলতে গিয়ে ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস অ্যাগ্রিকালচার অ্যান্ড টেকনোলজির (আইইউবিএটি) এক শিক্ষার্থীর মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১ মে) দুপুরে উত্তরার তুরাগ নদীর আশপাশে এই হৃদয়বিদারক ঘটনাটি ঘটে। বজ্রপাতে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে প্রাণ হারানো ওই শিক্ষার্থীর নাম রাফি হাসান।
তিনি আইইউবিএটির সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ২২১তম ব্যাচের ছাত্র ছিলেন। এই ঘটনায় আরও একজন শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন বলে বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে।
আইইউবিএটির জনসংযোগ বিভাগের ডেপুটি ডিরেক্টর আল আমিন সিকদার শিহাব এই ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন ছাত্র তুরাগ নদীর পাশে একটি মাঠে ফুটবল খেলতে গিয়েছিল। খেলার সময় হঠাৎ বৃষ্টি শুরু হলে তারা একটি নৌকায় করে নদী পার হওয়ার চেষ্টা করছিল।
দুর্ভাগ্যবশত, সেই সময়ই আকস্মিক বজ্রপাত হয় এবং রাফি হাসান বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হন। ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়।
আল আমিন সিকদার শিহাব আরও জানান, এই ঘটনায় আরও একজন শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। তবে তার আঘাত কতটা গুরুতর, সে বিষয়ে তাৎক্ষণিকভাবে বিস্তারিত কিছু জানাতে পারেননি তিনি।
আহত শিক্ষার্থীকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে বলে জানা গেছে। তবে নৌকায় থাকা বাকি শিক্ষার্থীরা সবাই সুস্থ আছেন।
রাফি হাসানের অকালমৃত্যুতে আইইউবিএটি ক্যাম্পাসে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা গভীর শোক ও সমবেদনা জানিয়েছেন।
রাফির সহপাঠী ও বন্ধুদের মধ্যে নেমে এসেছে এক গভীর বিষাদের ছায়া। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও তার মৃত্যুতে অনেকেই শোক প্রকাশ করছেন।
বজ্রপাতের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগ কতটা ভয়াবহ হতে পারে, এই মর্মান্তিক ঘটনাটি তারই এক জলন্ত উদাহরণ। মে মাসের শুরুতেই এমন একটি অপ্রত্যাশিত দুর্ঘটনায় একটি তরতাজা প্রাণ ঝরে যাওয়ায় এলাকায় শোকের আবহ তৈরি হয়েছে।
উল্লেখ্য, বর্ষাকালে বাংলাদেশে বজ্রপাত একটি সাধারণ ঘটনা। প্রতি বছর বজ্রপাতে বহু মানুষের প্রাণহানি ঘটে।
সাধারণত খোলা মাঠ, জলাশয় বা নদীর কাছাকাছি থাকা অবস্থায় বজ্রপাতের ঝুঁকি বেশি থাকে। বিশেষজ্ঞরা এই সময়কালে সকলকে সতর্কতা অবলম্বন করার পরামর্শ দিয়ে থাকেন।
বৃষ্টি শুরু হলে দ্রুত নিরাপদ আশ্রয়ে যাওয়ার এবং খোলা স্থানে না থাকার কথা বলা হয়।
আইইউবিএটির জনসংযোগ বিভাগ জানিয়েছে, তারা রাফি হাসানের পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাচ্ছেন এবং এই কঠিন সময়ে তাদের পাশে আছেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে সব ধরনের সহযোগিতা প্রদান করা হবে বলেও জানানো হয়েছে।
এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনাটি আবারও প্রমাণ করলো যে, প্রাকৃতিক দুর্যোগ কখন কার জীবনে আঘাত হানবে তা বলা যায় না। তাই সকলেরই উচিত আবহাওয়া সম্পর্কে সচেতন থাকা এবং দুর্যোগকালীন সময়ে প্রয়োজনীয় সতর্কতা অবলম্বন করা।
বিশেষ করে যখন বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা থাকে, তখন খোলা মাঠ বা জলাশয়ের কাছাকাছি থাকা একেবারেই উচিত নয়।
রাফি হাসানের আত্মার মাগফেরাত কামনা করছে আইইউবিএ পরিবার এবং আহত শিক্ষার্থীর দ্রুত সুস্থতা কামনা করছে।