পায়রায় ৩ নম্বর সতর্ক সংকেত, উত্তাল বঙ্গোপসাগর | বিবিধ নিউজ

পায়রায় ৩ নম্বর সতর্ক সংকেত, উত্তাল বঙ্গোপসাগর

আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে, মৌসুমী বায়ুর প্রভাবে বঙ্গোপসাগর উত্তাল রয়েছে। এ জন্য পায়রা সমুদ্র বন্দরকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।

#বৃষ্টি #ঝড় #সতর্ক সংকেত

বঙ্গোপসাগরে মৌসুমী বায়ুর প্রভাবে সৃষ্ট অস্বাভাবিক জোয়ারের ফলে কুয়াকাটা সংলগ্ন উপকূলীয় এলাকায় সমুদ্র বেশ উত্তাল হয়ে উঠেছে।

গত সোমবার সন্ধ্যায় প্রচণ্ড ঢেউয়ের তোড়ে একটি মাছ ধরার ট্রলার ডুবে যায়। তবে ট্রলারে থাকা চার জেলেকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে। এই ঘটনার পর উপকূলজুড়ে আতঙ্ক বিরাজ করছে।

উপকূলীয় জেলা পটুয়াখালীসহ আশপাশের এলাকায় গতকাল রাত থেকে থেমে থেমে হালকা ও মাঝারি বৃষ্টি হচ্ছে। এতে করে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন নিম্ন আয়ের মানুষ, বিশেষ করে খোলা আকাশের নিচে কাজ করা দিনমজুররা পড়ছেন ভোগান্তিতে। বৃষ্টিতে বিভিন্নস্থানে নীচু এলাকায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। দুর্ভোগে পড়েছেন স্থানীয়রা।

আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে, মৌসুমী বায়ুর প্রভাবে বঙ্গোপসাগর উত্তাল রয়েছে। এ জন্য পায়রা সমুদ্র বন্দরকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। এ সময়ে সকল মাছধরা ট্রলারকে নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।

তবে গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যা থেকে শুরু হয়েছে মুষলধারে বৃষ্টি। গতকাল সকাল ৯টা থেকে আজ সকাল ৯টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় কলাপাড়ায় চলতি বছরের সর্বোচ্চ ১২১ দশমিক ২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করেছে আবহাওয়া অফিস। আগামী ২৫ জুন পর্যন্ত বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকবে এবং আগামী পাঁচ দিন ভারী বর্ষণের আশঙ্কা রয়েছে।

মৎস্য বিভাগ ও স্থানীয় প্রশাসন জানিয়েছে, সমুদ্র উত্তাল থাকায় মৎস্যজীবীদের গভীর সমুদ্রে যেতে নিষেধ করা হয়েছে। এরই মধ্যে অধিকাংশ মাছ ধরার ট্রলার কুয়াকাটা উপকূলে নিরাপদে ফিরে এসেছে।

আলিপুর মৎস্য আড়তদার মালিক সমিতির সভাপতি জলিল ঘরামী বলেন, ‘সমুদ্র বেশ উত্তাল থাকায় অনেক ট্রলার ঘাটে আসতে শুরু করেছে। তবে কিছু ট্রলার সমুদ্রে রয়েছে। তারাও তীরে ফিরতে শুরু করেছে। ফেরত ট্রলারগুলোর অনেকেই খালি হাতে ফিরছেন।’

এদিকে দিনমজুর আব্দুর জব্বার বলেন, ‘আমরা দিনমজুর কাজ করে খাই। টানা বৃষ্টির ফলে আমাদের কাম-কাজ নাই বললেই চলে। পরিবার-পরিজন নিয়ে খেয়ে না খেয়ে কোনো রকম বেঁচে আছে। এভাবে চলতে থাকলে আমাদের মরণ ছাড়া কোনো উপায় থাকবে না।’

কলাপাড়া মহিলা ডিগ্রি কলেজের প্রভাষক নিখিল চৌধুরী বলেন, ‘গত কয়েক দিন ধরে ভারী বৃষ্টিপাতের ফলে আমাদের বাসা-বাড়ি পানিতে তলিয়ে গেছে। ছেলে মেয়েদের স্কুলে পাঠাব, তাও পাঠাতে পারছি না। অনেক ভোগান্তিতে আছি।’

ট্যূরিস্ট পুলিশ কুয়াকাটা জোনের সহকারী পুলিশ সুপার হাবিবুর রহমান বলেন, ‘সমুদ্র কিছুটা উত্তাল রয়েছে, আগত পর্যটকদের গভীর সমুদ্রে না যাওয়ার জন্য বারবার মাইকিং করা হচ্ছে।’

কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রবিউল ইসলাম বলেন, ‘বঙ্গোপসাগরে কোনো দুর্ঘটনা এড়াতে মৎস্যজীবীদের সর্বোচ্চ সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। উদ্ধার হওয়া জেলেদের প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদান করা হচ্ছে।’

জুন মাসে বর্ষা মৌসুমে এমন বৃষ্টিপাত স্বাভাবিক হলেও, সাগরের এ ধরনের অস্বাভাবিক উত্তাল অবস্থা মৎস্যজীবীসহ উপকূলবাসীর জন্য নতুন করে উদ্বেগ তৈরি করেছে। প্রশাসনের পাশাপাশি আবহাওয়া অধিদপ্তর সবাইকে সতর্ক ও সচেতন থাকার আহ্বান জানিয়েছে।

#বৃষ্টি #ঝড় #সতর্ক সংকেত