বাংলাদেশের জুলাই-আগস্ট অভ্যুত্থানের সময় হত্যাকাণ্ড নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে জাতিসংঘের মানবাধিকার লঙ্ঘনের তদন্ত দল। সেখানে শহীদ আবু সাইদ পুলিশের ইচ্ছাকৃত হত্যাকাণ্ডের শিকার বলে জানানো।
ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আবু সাঈদ, পুলিশের ইচ্ছাকৃত বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন বলে বিশ্বাস করার যুক্তিসঙ্গত কারণ রয়েছে।
বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে বাংলাদেশে সংঘটিত মানবাধিকার লঙ্ঘনের তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে জাতিসংঘ। প্রতিবেদনে আবু সাঈদের বিশেষ ঘটনাটি বিশদভাবে বিশ্লেষণ করা হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভের সময় পুলিশকে উদ্দেশ করে দুই বাহু ছড়িয়ে 'আমাকে গুলি করুন' বলে চিৎকার করার সময়ের দৃশ্য ধারণ করা হয়। ভিডিও ফুটেজ, স্থিরচিত্র এবং ভূঅবস্থান প্রযুক্তি ব্যবহার করে তদন্তকারীরা তার হত্যাকাণ্ডের ঘটনাটি কীভাবে ঘটেছিল, তা সাক্ষ্য প্রমাণের জন্য ঘটনার পুনর্নিমাণ করেন। একটি ফরেনসিক বিশ্লেষণ এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছে যে, আবু সাঈদের আঘাতগুলো প্রায় ১৪ মিটার দূরত্ব থেকে ধাতব গুলিবোঝাই শটগান দিয়ে কমপক্ষে দুবার গুলিবিদ্ধ হওয়ার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ১ জুলাই থেকে ১৫ আগস্টের মধ্যে একহাজার চারশ' জনেরও বেশি মানুষকে হত্যা করা হয়ে থাকতে পারে। এ সময় আহত হয়েছেন, হাজার হাজার মানুষ। আহতরা বাংলাদেশের নিরাপত্তাবাহিনীর ছোড়া গুলিতে গুলিবিদ্ধ হয়েছেন।
বিভিন্ন নির্ভরযোগ্য সূত্র থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে মৃত্যুর সংখ্যা জানিয়েছে, জাতিসংঘ। প্রতিবেদনে বলা হয়, নিহতদের মধ্যে ১২-১৩ শতাংশ ছিল শিশু।
বাংলাদেশ পুলিশ জানিয়েছে, তাদের ৪৪ জন কর্মকর্তাও এই অভ্যূত্থানের সময় নিহত হয়েছেন।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, বাংলাদেশের সাবেক সরকার এবং নিরাপত্তা ও গোয়েন্দা সংস্থা, আওয়ামী লীগের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সহিংস উপাদানগুলোর পাশাপাশি, গত বছরের ছাত্রনেতৃত্বাধীন বিক্ষোভের সময় পদ্ধতিগতভাবে গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনাগুলোও জড়িত ছিল।