অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। ছবি : সংগৃহীত
নতুন অর্থবছরে মহার্ঘ ভাতা ঘোষণা হবে, তবে কিছুটা সময় লাগবে বলে জানিয়েছেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ।
মঙ্গলবার (২০ মে) সচিবালয়ে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ কথা জানান তিনি।
এ সময় অর্থ উপদেষ্টা বলেন, ‘২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেটে মহার্ঘ ভাতা অন্তর্ভুক্ত করা হবে। তবে এটি কার্যকর হতে কিছুটা সময় লাগবে।’
তিনি আরো জানান, কী পরিমাণ বা কত শতাংশ হারে এই ভাতা দেয়া হবে, তা এখনই নির্দিষ্ট করে বলা যাচ্ছে না। বিষয়টি এখনও আলোচনার পর্যায়ে আছে এবং পরে বিস্তারিত জানানো হবে।
দীর্ঘদিন ধরে বৈষম্যমুক্ত ৯ম পে-স্কেল ও অন্তবর্তীকালীন সময়ে ৫০ শতাংশ মহার্ঘ ভাতা বরাদ্দসহ সাত দাবিতে আন্দোলন করে আসছিলেন সরকারি কর্মচারীরা। তারই ধারাবাহিকতায় গত ১৬ মে শাহাবাগে অবস্থান কর্মসূচি পালন করে বাংলাদেশ সরকারি কর্মচারী দাবি আদায় ঐক্য পরিষদ।
আগামী জুনের বাজেট প্রস্তাবে এসব দাবি বাস্তবায়ন করা না হলে পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে বলেও জানান তারা।
কর্মসূচিতে সরকারি কর্মচারীরা বলেন, বৈষম্যবিরোধী বর্তমান সরকারের সময়ে কর্মচারীদের বেতন বৈষম্য মেনে নেয়া যায় না।
দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন ঊর্ধ্বগতির কারণে পরিবারের ভরণপোষণের ব্যয় বেড়েছে। প্রাপ্ত বেতনের টাকা দিয়ে মাসের ১৫ দিনও চলা সম্ভব হয় না।
৫ বছর পর পর পে-স্কেল দেয়ার প্রথা চালু থাকলেও ২০১৫ খ্রিষ্টাব্দের ৮ম পে-স্কেলে পর দীর্ঘ ১০ বছর অতিক্রান্ত হয়েছে।
তাই পে-কমিশন গঠন করে বেতন-ভাতার অসংগতি দূর করার জন্য কর্মচারিদের অভিভাবক হিসেবে প্রধান উপদেষ্টার আশু হস্তক্ষেপ কামনা করছি। অবিলম্বে এক ও অভিন্ন নিয়োগ বিধি প্রণয়নসহ ৭ দফা দাবি বাস্তবায়ন করা হোক।
সাত দফা দাবি হলো- বৈষম্যমুক্ত ৯ম পে স্কেল বাস্তবায়নের লক্ষে পে-কমিশন গঠন ও পে-স্কেল ব্যস্তবায়নের আগ পর্যন্ত অন্তর্বতীকালীন সময়ের জন্য ৫০ শতাংশ মহার্ঘ্য ভাতা (১১-২০ গ্রেডের কর্মচারিদের জন্য) ২০২৫ খ্রিষ্টাব্দে জানুয়ারি থেকে কার্যকর করতে হবে।
যে সকল কর্মচারী মূল বেতনের শেষ ধাপে উন্নীত হয়েছে তাদের বার্ষিক বেতন বৃদ্ধি নিয়মিত করতে হবে। বেতন স্কেলের বৈষম্য নিরসনের জন্য ১০ ধাপে বেতন স্কেলে নির্ধারণসহ পে-কমিশনে কর্মচারী প্রতিনিধি রাখতে হবে।
সচিবালয়ের মতো সকল সরকারি, আধাসরকারি দপ্তর, অধিদপ্তর, পরিদপ্তর ও স্বায়ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠানের সমপদগুলোর পদবী ও গ্রেড পরিবর্তন করতে হবে এবং এক ও অভিন্ন নিয়োগবিধি প্রণয়ন করে কর্মচারিদের মধ্যে সৃষ্ট বৈষম্য দূর করতে হবে।
২০১৫ খ্রিষ্টাব্দের পে-স্কেলের গেজেটে প্রত্যাহারকৃত ৩টি টাইম ফেল, সিলেকশন গ্রেড পূনর্বহাল ও সকল স্বায়ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠানে গ্রাচ্যুইটির পাশাপাশি পেনশন প্রবর্তনসহ বিদ্যমান গ্রাচুয়িটি ও আনুতোষিকের হার ৯০ শতাংশ এর স্থলে ১০০ শতাংশ নির্ধারণ এবং পেনশন গ্রাচুইটি ১ টাকার সমান ৫০০ টাকা নির্ধারণ করতে হবে।
বাজারমূল্যের লাগামহীন উর্দ্ধগতি ও জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধি এবং মুদ্রাস্ফীতি বৃদ্ধির বিষয় বিবেচনা করে প্রদেয় সকল ভাতাদি পুননির্ধারণ, ১১-২০ গ্রেডের রেশন ব্যবস্থার প্রর্বতন ও সরকার প্রদত্ত গৃহ ঋণ সুবিধা সহজিকরণ করতে হবে।
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের আপিল বিভাগের রায় বাস্তবায়নসহ সহকারী শিক্ষকদের বেতন নিয়োগ বিধি-২০১৯ এর ভিত্তিতে ১০ গ্রেডে উন্নীতকরণ ও আউটসোর্সিং পদ্ধতি বাতিল করে ওই পদ্ধতিতে নিয়োগকৃত এবং উন্নয়ন খাতের কর্মচারীদের রাজস্ব খাতে স্থানান্তর করতে হবে।
ব্লক পোস্টে কর্মরত কর্মচারীসহ সকল পদে কর্মরতদের পদোন্নতি বা ৫ বছর পর পর উচ্চতর গ্রেড দিতে হবে, এছাড়াও টেকনিক্যাল কাজে নিয়োজিত কর্মচারীদের টেকনিক্যাল পদমর্যাদা দিতে হবে।
উন্নয়ন প্রকল্প থেকে রাজস্বখাতে স্থানান্তরিত পদের পদধারীদের প্রকল্পের চাকুরিকাল গণনা করে টাইমস্কেল ও সিলেকশন গ্রেড দেয়ার অবকাশ নেই বলে অর্থ মন্ত্রণালয়ের জারি করা বৈষম্যমূলক আদেশ বাতিল করতে হবে।
শিক্ষাসহ সব খবর সবার আগে জানতে দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গেই থাকুন। ভিডিয়োগুলো মিস করতে না চাইলে এখনই দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন এবং বেল বাটন ক্লিক করুন। বেল বাটন ক্লিক করার ফলে আপনার স্মার্ট ফোন বা কম্পিউটারে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভিডিওগুলোর নোটিফিকেশন পৌঁছে যাবে।
দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেল SUBSCRIBE করতে ক্লিক করুন।